নিউজ ডেস্ক :- প্রকাশ্য এসে NDA ছাড়ার সিদ্ধান্ত এবং মোদী অমিত শাহ কে প্রকাশ্য মিথ্যা বাদী বলতেই ছাড়লেন না ।একদা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মোর্চার হয়ে কার্যত বিদ্রোহের সুর চড়ানো নেতা ফের ঘরে ফিরতে চাইছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হতে চান বিমল গুরুং । বুধবার নাটকীয়ভাবে প্রকাশ্যে এসে একেবারে কলকাতায় পা রেখে সাংবাদিক সম্মেলনে একথাই বললেন তিনি। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অনড় থেকেও বিজেপির প্রতি চরম অসন্তোষ প্রকাশ করে জোট ছাড়ার কথাও বললেন। এও অভিযোগ তুললেন, বিজেপি প্রতিশ্রুতি রাখেনি। একুশের নির্বাচনে মমতার পাশে থেকে লড়াই করে তার জবাব দেবেন বিজেপিকে।
অজ্ঞাতবাস ছেড়ে আচমকা উদয় হয়েছেন মোর্চার বহিষ্কৃত নেতা বিমল গুরুং। বুধবার বিকেলে সল্টলেকের গোর্খাভবনে আসেন তিনি। আধঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও গোর্খাভবনের দরজা খোলা হয়নি, বাধা পেয়ে ফিরে যান। এরপর কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করেন গুরুং। পাশে ছিলেন মোর্চার প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরিও।
প্রথমে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অনড় মনোভাব প্রকাশ করেও বিজেপির তুমুল সমালোচনা করেন তিনি। স্পষ্টই জানান যে NDA’কে বাইরে থেকে তাঁরা সমর্থন করছিলেন, কিন্তু বিজেপি প্রতিশ্রুতিভঙ্গ করেছে। তাই সমর্থনের আর প্রশ্ন নেই। এরপরই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অকুণ্ঠ প্রশংসা করে বারবার বলেন যে নেত্রী প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। এখন পাহাড়ে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান চাই। তাও নেত্রী করে দেবেন বলে তিনি আশাপ্রকাশ করছেন। এরপর গুরুং রীতিমত সুর চড়িয়ে বলেন, ”একুশের নির্বাচনে মমতার হয়ে লড়াই করেই বিজেপিকে উপযুক্ত জবাব দেব।” গুরুংয়ের মুখে বারবার একথাও শোনা যায় যে তিনি ‘অপরাধী’ নন, তিনি একজন রাজনৈতিক নেতা।
পাল্টা বিমল গুরুংয়ের এনডিএ ছাড়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল তৃণমূল। বুধবার রাতেই টুইট করে তৃণমূলের তরফে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে সকলে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবেন বলেও জানিয়ে দেয় নেতৃত্ব।
এদিনই কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আস্থা রাখার কথা জানান গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বহিষ্কৃত নেতা বিমল গুরুং। একইসঙ্গে এনডিএর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে জোট ছাড়ার কথাও ঘোষণা করেন তিনি। তারপরই তাঁর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করল তৃণমূলও। জানাল, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের উপর ভরসা রেখে শান্তি প্রক্রিয়াকে সমর্থন ও এনডিএ জোট ছাড়ার বিমল গুরুংয়ের সিদ্ধান্তকে আমরা সমর্থন করছি।” বিজেপিকে একহাত নিয়ে তৃণমূলের দাবি, বিজেপি গোর্খাল্যান্ড ইস্যুকে রাজনীতির জনব্য ব্যবহার করেছিল। তাঁদের সেই ছক এবার সকলের সামনে চলে এল। টুইটারে তৃণমূলের তরফে আরও জানানো হয়েছে, মাতৃভূমির শান্তিরক্ষা ও উন্নয়ন করতে পাহাড়ের সকলপক্ষ এক সঙ্গে লড়াই করবে।
এদিন আচমকাই সল্টলেকে গোর্খাভবনের বাইরে দেখা যায় বিমল গুরংকে। তারপরই সাংবাদিক বৈঠক করে ‘ঘর ওয়াপসি’র কথা ঘোষণা করেন তিনি। কিন্তু তাঁর এই হঠাৎ প্রত্যাবর্তন ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। মোর্চার এই নেতার বিরুদ্ধে পুলিশ কর্মী অমিতাভ ঘোষকে খুনের অভিযোগ রয়েছে। UAPA ধারায়া মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এতদিন গ্রেপ্তারির ভয়ে কার্যত পালিয়ে বেরিয়েছেন গুরুং। আচমকাই খাস কলকাতা তাঁর ফিরে আসা ও মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে নির্বাচনে লড়াইয়ের পিছনে গভীর রাজনীতি দেখতে পাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল। উল্লেখ্য, তৃণমূলের দাবি বিমল গুরুং গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে সরে এসেছেন। কিন্তু সাংবাদিক বৈঠক সেই দাবিতে অনড় থাকার কথাই জানিয়েছিলেন বিমল।
সৌজন্য :- সংবাদ প্রতিদিন