অয়ন বাংলা, ওয়েবডেস্ক: অসমে নাগরিকপঞ্জিতে ১২ লক্ষ হিন্দু ও ৬ লক্ষ মুসলিমবাঙালি বাদ পড়েছে৷ নাগরিক সংশোধনী বিল দিয়ে হিন্দুদের রক্ষা করতে ব্যস্ত বিজেপি সহ গেরুয়া শিবির৷ মুসলিমদের তাড়ানোর জন্য অসম সহ দেশজুড়ে রোজ গরম গরম ভাষণ দিচ্ছেন৷ এত উস্কানি স্পর্ষ করে না রহমান ও তাঁর পরিবারকে৷ তিনি জানান অসমের রংমহলে শিবমন্দির রক্ষনাবেক্ষণ করছেন বংশ পরম্পরায়৷ তাঁর কথায় ৫০০ বছর ধরে আমার পরিবার শিবমন্দির দেখভাল করে আসছেন৷এইভাবে ধর্মীয় সম্প্রীতির সেতু বন্ধনের কাজ করে যাচ্ছেন তিনি ও তাঁর পরিবার৷ একানে পুজো দিতে শুধু হিন্দু নয় মুসলিমরাও প্রতিদিন আসেন৷
গুয়াহাটির একটি গ্রামের নাম রংমহল। এই গ্রামে বসবাস মতিবর রহমানের। সেখানকার একটি শিবমন্দিরের দেখাশোনা করেন তিনি। তাঁর কথায়, ২০০৬ সালে তিনি হজ করেছেন। এই সময় তাঁর ছেলে এই মন্দির দেখভাল করেছেন। হজ থেকে ফিরে তিনি আবারও এই মন্দিরের দায়িত্ব নিয়েছেন। ৭৩ বছর বয়সী রহমানের বিশ্বাস , শিবের নির্দেশে বংশপরম্পরায় তাঁরা এই মন্দিরের দেখভাল করছেন। তিনি বলেন, ‘আমার আগে বাবা এই মন্দির দেখভাল করতেন। তার আগে দাদা এই কাজ করতেন।’
দেবতা শিবের এই নির্দেশ কীভাবে এসেছিল, তারও একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন মতিবর। তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিবারের প্রথম মানুষটির নাম বোরহানসা। শিব তাঁকে বলেছিলেন, ‘আমি এখানে থাকতে চাই। এখন থেকে তোমার পরিবারের দায়িত্ব এই জায়গা সংরক্ষণ করা। আমি তোমার পরিবারের কাছ থেকে সেবা গ্রহণ করব, অন্য কারও কাছ থেকে নয়।’ এরপর থেকেই তাঁর পরিবার মন্দির সংরক্ষণ করছে বলে জানান তিনি।মন্দিরটির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মতিবর প্রতিদিন নিয়ম করেবুরহা গোসাইর থান মন্দিরে দেবতা শিবের নামে মোমবাতি জ্বালেন। ভিডিওতে দেখা যায়, তাঁর নির্দেশে কয়েকজন মন্দিরের উঠান পরিষ্কার করছেন।
শিবভক্ত মতিবুর ও তাঁর পরিবারের নাম অবশ্য নাগরিকপঞ্জি তালিকায় আচে বলে জানান তিনি৷ জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) থেকে প্রায় ১৯ লাখ মানুষের নাম বাদ পড়েছে আসামে। ফলে একধরনের উত্তেজনা চলছে অসম জুড়ে। তবে এর মধ্যেও নিজের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন মতিবর। তিনি বলেন, এনআরসিতে তাঁর নাম আছে।আরেকটি অদ্ভুত তথ্য জানিয়েছেন মতিবর। তিনি বলেন, শুধু হিন্দুধর্মাবলম্বীরাই নন। অনেক মুসলমানও ওই মন্দিরে প্রার্থনা করতে আসেন।
সৌজন্য:- মহানগর ডেস্ক