প্রয়াত চিত্র সাংবাদিক বিজয় শেঠের স্মরণে শোকসভা, কৃষ্ণপদ মেমোরিয়াল প্রেক্ষাগৃহে
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : মাত্র দু’দিনের অসুস্থতায় প্রয়াত হলেন বিশিষ্ঠ চিত্র সাংবাদিক বিজয় শেঠ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তিনি রেখে গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী ডলিকে। তাঁর স্মরণে মির্জাপুর কৃষ্ণপদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ভবনের প্রেক্ষাগৃেহে মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) একটি শোকসভা আয়োজিত হয়। “ইন্ডিয়ান ফটো এ্যান্ড কালচারাল লাভার্স ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন” ও “বাংলা শিল্পী-সাহিত্যিক সমাজ-কর্মী সাংবাদিক সমন্বয় সমিতি” এবং “বিজয় শেঠ মেমোরিয়াল এডুকেশন, সোশ্যাল কালচারাল লাভার্স ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন”এর যৌথ উদ্যোগে এই সভাটি আয়োজিত হয়।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, তাঁর স্ত্রী ডলি দেবী এবং তাঁর আত্মীয় পরিজন সহ সাংবাদিক কৃষ্ণবন্ধু ধর, পরিমল কর্মকার, প্রদীপ বড়াল, সঞ্জীব চক্রবর্ত্তী, তাপসী মৈত্র, সঞ্জয় সরকার, ডালিয়া দে, বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়, সুধেন্দু প্রামানিক, হামিদ আহমেদ, স্বপন নস্কর, অভিনেতা তথা চিত্র-পরিচালক ধীরু ব্যানার্জী ও বহু বিশিষ্ঠ মানুষ। উপস্থিত বক্তারা বিজয় বাবুর সহজ-সরল ও অমায়িক ব্যবহার ও তাঁর কর্মকাণ্ডের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, বিজয় শেঠের মতো একজন দক্ষ ফটোগ্রাফার এইভাবে অকালে চলে যাওয়ায় সংবাদ জগতে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি হলো। সভাটি সঞ্চালনা করেন পারমিতা বসু।
জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে চিত্র সাংবাদিকতা করে আসছিলেন তিনি। কলকাতা প্রেস ক্লাবে তাঁর নিয়মিত যাতায়াত ছিল। সাংবাদিকতা করার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি শর্ট-ফিল্মও পরিচালনা করেছেন তিনি। তাঁর পারিবারিক সূত্রের খবর, গত ১১ নভেম্বর (বৃহস্পতি বার) তিনি হাজরায় তাঁর বাস ভবনে একটি নতুন ফিল্মের শুটিং করছিলেন। শুটিংয়ের পর তিনি কিছুটা অসুস্থতা বোধ করেন। তবে সেটা তেমন কিছু গুরুতর ছিলনা বলেই জানা যায়। তবে ১৩ নভেম্বর (শনিবার) তিনি তাঁর বাড়িতেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর বমিতে রক্ত দেখতে পায় তাঁর স্ত্রী ডলি।
তখন প্রথমে তাঁকে তাঁর বাড়ির কাছাকাছি রামকৃষ্ণ সেবা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে এস.এস.কে.এম হসপিটালে রেফার করেন। তারপর এস.এস.কে.এম হসপিটাল থেকে তাঁকে ইনজেকশন ও কিছু ওষুধপত্র দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে তাঁর পারিবারিক সূত্রের খবর। কিন্তু মাঝের একটা দিন পরই ফের ১৫ নভেম্বর তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু ঘটে বলে জানা যায়। মাত্র দু’দিনের কিছুটা অসুস্থতা, তারপরেই হঠাৎ করে ছটফটে এই মানুষটার চলে যাওয়া — কেউই যেন মেনে নিতে পারছেন না — এদিন উপস্থিত সকলের কথাবার্তা, আলাপ, আলোচনা ও বক্তব্যে সেটাই যেন প্রকাশ পেল।
ফটো : স্বপন নস্কর।