অয়ন বাংলা,ওয়েব ডেস্ক:-লালকৃষ্ণ আডবাণী অবশেষে মৌনতা ভাঙলেন টূইট করে,তিনি বললেন” কেউ রাজনৈতিক মতের বিরোধী হলেই তাঁকে ‘দেশদ্রোহী’ বলে দাগিয়ে দেওয়াটা বিজেপির জাতীয়তাবাদ নয় বলে মনে করিয়ে দিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী।”
পাঁচ বছর পরে নিজের ব্লগে কলম ধরে আডবাণীর এই মন্তব্যের লক্ষ্য নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ বলেই বিরোধী নেতারা এবং রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন। লোকসভা ভোটের প্রচারে মোদী রোজই টানছেন বালাকোটে বায়ুসেনার অভিযান-প্রসঙ্গ। সেই সূত্রে কংগ্রেস তথা বিরোধীদের নিশানা করে তাঁদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্নও তুলছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, কাজ দিয়ে নয়, উগ্র জাতীয়তাবাদের ঢেউ তুলে ভোটে জিততে চেয়ে সেনাকে হাতিয়ার করতে চাইছেন মোদী। আডবাণী আজ ঠিক এখানেই আঘাত করেছেন।
আডবাণীজি এই ব্লগের পরে মোদী টুইটারে সযত্নে দেশদ্রোহী নিয়ে দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতার বক্তব্যকে এড়িয়ে গিয়েছেন। বরং লিখেছেন, ‘‘আডবাণীজি বিজেপির সত্যিকারের চরিত্র তুলে ধরেছেন। বিশেষ করে বিজেপিকে পথ দেখানোর মন্ত্র। যা বলে, সবার আগে রাষ্ট্র, তার পরে দল, সবশেষে নিজে।’’
মোদী এড়িয়ে গেলেও ছাড়েননি বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, এত দিন বিরোধীরা যে-সব কথা মোদীকে বলছিলেন, আজ বিজেপির অন্দরমহল থেকেই তা উঠে এসেছে। আডবাণী আক্ষরিক অর্থেই মোদী-শাহকে ‘মার্গদর্শন’ করিয়েছেন। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে লিখেছেন, ‘‘প্রবীণতম রাজনীতিক, প্রাক্তন উপপ্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রাজনৈতিক শিষ্টাচার নিয়ে যা বলেছেন, তা উল্লেখযোগ্য। যাঁরা বিরোধী আওয়াজ তোলেন, অবশ্যই তাঁরা সকলে দেশদ্রোহী নন।’’
আডবাণীর ব্লগে স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে বিজেপি। দলের মুখপাত্রেরা বলার চেষ্টা করেছেন, আডবাণী যা বলেছেন, তা বিজেপিরই কথা। কিন্তু বাস্তব যে উল্টো, তা তাঁরাও বুঝতে পারছেন। কারণ ৯১ বছর বয়সি আডবাণী দলের মধ্যে ‘গণতন্ত্র’ নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। মোদী জমানায় একের পর এক গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের উপরে আঘাত আসছে, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। সেই প্রসঙ্গ তুলেই আডবাণীর যুক্তি, ‘‘বিজেপি বরাবরই সংবাদমাধ্যম-সহ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা রক্ষায় প্রথম সারিতে থেকেছে।’’স্বভাবতই আজ বিজেপি কে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে আডবাণী।