ওয়েবডেস্ক:- সুপ্রিম কোর্ট স্বস্থি দিল কেন্দ্রীয় সরকারকে। সিএএ-এর বিরোধিতা দেশজুড়ে, তাতে বেশ অশ্বস্তিতেই পড়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সেই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে এই আইনের বিরুদ্ধে জমা পড়ে ১৪৪টি মামলা। এইসব মামলার শুনানিতেই আজ বড়সড় স্বস্তি পেল বিজেপি। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিল, নাগরিকত্ব আইনে কোনও স্থগিতাদেশ জারি হচ্ছে না।
এদিন এই মামলাগুলির রায়ে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিকত্ব আইনে কোনওরকম স্থগিতাদেশ জারি করা হচ্ছে না। তবে কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পরবর্তী ৪ সপ্তাহের মধ্যে এইসব মামলার প্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া দিতে। পাশাপাশি, শীর্ষ আদালত আরও জানিয়েছে, পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এই নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে যা মামলা হয়েছে তার অন্তর্বর্তীকালীন রায় দেবে এবং কেন্দ্রের মত না জানা পর্যন্ত সিএএ-তে কোনও স্থগিতাদেশ জারি করা হবে না।
প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে এই মামলাগুলির শুনানি হয়। তিনি জানান, ‘এই ইস্যুটি কমপক্ষে সকলের মাথাতেই রয়েছে। তবে যেহেতু প্রচুর মামলা, তাই কিছু ছোট ছোট মামলা কিছু কিছু উকিলরা তাদের চেম্বারে শুনবে।’ প্রসঙ্গত, পিটিশনগুলির মাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, সিএএ বেআইনি এবং ভারতীয় সংবিধানের পরিপন্থী। পাশাপাশি ধর্মের আধারে নাগরিকত্ব বিলি করার এই আইন সাম্যের অধিকারকেও ক্ষুণ্ণ করছে বলে দাবি অভিযোগকারীদের একাংশের। আবেদনকারীদের মধ্যে বেশ কেরল রাজ্য সরকারের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলও শামিল রয়েছে। কংগ্রেস, সিপিআই, সিপিএম, ডিএমকে, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ ও এআইএমআইএম-এর মতো দলগুলি এই আইনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে। মামলাকারীদের দাবি, সংবিধান অনুযায়ী ভারত এটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। যে কোনও ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষের সঙ্গে সমান আচরণ করতে বাধ্য এ দেশের সরকার। নতুন আইন সেই সংবিধানকে আঘাত করছে।
প্রসঙ্গত, গত ৯ জানুয়ারি সিএএ সংক্রান্ত মামলার শুনানির সময়ে বেশ কিছু তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল। নাগরিকত্ব আইনকে ‘সাংবিধানিক’ ঘোষণার দাবিতে করা একটি পিটিশনের শুনানির সময়ে বিচারপতিরা বলেন, ‘আদালত এই আইনকে কখনও ‘সাংবিধানিক’ আখ্যা দিতে পারে না। কারণ এটা আদালতের কাজ নয়। আদালতের কাজ আইনের বৈধতা খতিয়ে দেখা। আইন সাংবিধানিক কিনা তা দেখা কাজ নয়।’ মনে করিয়ে দেওয়া যাক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে গতকালও বলতে শোনা গিয়েছে, যতই বিরোধিতা হোক সিএএ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও ভাবেই পিছু হটবে না। আর আজকেই এই রায়ে তাঁদের সরকারকেই যে স্বস্তি দিল তা বলাই বাহুল্য।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর উপর স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। তা নিয়ে গঠিত হবে সাংবিধানিক বেঞ্চ। সিএএ-র বিরুদ্ধে ১৪৪টি মামলা নিয়ে বুধবার শুনানি চলছে শীর্ষ আদালতে। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকেও নোটিস দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
দেশ জুড়ে আন্দোলন জারি রয়েছে। এর মধ্যেই এ দিন সিএএ-এর বিরুদ্ধে এক গুচ্ছ মামলার শুনানি শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে-র নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে চলছে ওই শুনানি। শীর্ষ আদালতে এই শুনানি কোন দিকে মোড় নেয় তাতে নজর রয়েছে গোটা দেশেরই।
সুপ্রিম কোর্টে সিএএ-শুনানি
• হাইকোর্টগুলিকে সিএএ সংক্রান্ত মামলা শোনা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ শীর্ষ আদালতের
• পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সিএএ সংক্রান্ত সমস্ত মামলা শুনবে
• আজ থেকে পাঁচ সপ্তাহ পর, তিন বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত হবে ওই সাংবিধানিক বেঞ্চ
• সিএএ-এর বিরুদ্ধে আবেদন নিয়ে সাংবিধানিক বেঞ্চ তৈরি করবে সুপ্রিম কোর্ট
• সিএএ ও এনপিআর-এর উপর কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি শীর্ষ আদালত
• ৪ সপ্তাহ সময় দেওয়া হল কেন্দ্রীয় সরকারকে
• সিএএ-এর বিরুদ্ধে ১৪০-এর বেশি আবেদন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কী উত্তর তা জানাতে নোটিস
— ANI (@ANI) January 22, 2020
• প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা সাময়িক ভাবে সরকারকে এটা করতে বলতে পারি।’