লকডাউনে ভারতে কর্মহীন ২৩.৪ শতাংশ মানুষ, লাফিয়ে বাড়ছে বেকারত্ব

Spread the love

ওয়েবডেস্ক:- আজ মহাবিপদের সামনে দাড়িয়ে গোটা বিশ্ব। করোনা প্রাণে মারছে যত, ভাতে মারছে অনেক বেশি। মারণ ভাইরাস সামাল দিতে কার্যত ঘরবন্দি গোটা পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত হচ্ছে অর্থনীতি। বাদ নেই ভারতও। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মতো দেশজুড়ে চলছে ২১ দিনের লকডাউন। যার ফলে দেশের অর্থনীতিতে নেমেছে ধস। হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে বেকারত্বের সংখ্যা। তথ্য বলছে দেশের বড় শহরগুলিতে বেকারত্বের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০.9 শতাংশ, যার ফলে ভারতজুড়ে বেকারত্বের হার ছুঁয়ে ফেলল ২৪.৪ শতাংশ। পরিস্থিতি যে ক্রমশ ভয়াবহ ভয়াবহ হয়ে উঠছে তা অস্বীকার করছেন না অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সি এম আই ই) যে সমীক্ষা চালিয়েছে তাতে ৫ এপ্রিলের পর নতুন সপ্তাহ শুরু হতেই প্রকাশ্যে আনা হয়েছে এক নয়া তথ্য। যা রীতিমতো ভয়ের আভাস দিচ্ছে গোটা দেশকে। সি এম আই ই-র দাবি অনুযায়ী মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে বেকারত্বের হারটা যেখানে ৮.৪ শতাংশ ছিল, এপ্রিলের শুরুতেই সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩.৪ শতাংশ। তথ্য বলছে লকডাউনের প্রথম দুই সপ্তাহেই ভারত জুড়ে প্রায় ৫ কোটি লোক কর্মহীন হয়েছেন। বহু মানুষকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে চলেছে। সেটা কয়েক দিনের মধ্যেই প্রকাশ্যে চলে আসবে।

এ প্রসঙ্গে জহরলাল নেহেরু ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির প্রফেসর হিমাংশুর দাবি, বেকারত্বের এই পরিসংখ্যান অনেক ক্ষেত্রেই অনুমানের উপর ভিত্তি করে গঠন করা হয়। তবে সে অনুমানটা বেশিরভাগটাই সঠিক। লকডাউন উঠে গেলেও বেকারত্বের হার জারি থাকবে দেশজুড়ে। কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ভারতবর্ষের এক তৃতীয়াংশ মানুষ দিন আনা দিন খাওয়া শ্রমজীবী। তাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেলে সেটা মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলবে অর্থ ব্যবস্থার ওপর। ফলে লকডাউন উঠে গেলে সরকারের উচিত অবিলম্বে এই শ্রেণীর মানুষগুলিকে সহায়তা করা। তবে শুধু ভারত নয়, সম্প্রতি এমনই এক তথ্য প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকা থেকেও। দাবি করা হয়েছে শুধুমাত্র লকডাউনের জেরে ট্রাম্পের দেশে বেকার হয়েছেন প্রায় এক কোটি মানুষ।

গত ২৮ মার্চ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নোবেলজয়ী অভিজিৎ ও তাঁর নোবেলজয়ী স্ত্রী এস্থার ডুফলো সচেতনতার বার্তা প্রচার করবেন বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েওছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, করোনা রুখতে সবথেকে জরুরি অনুশাসন ও সচেতনতা। সেই কথাই প্রচার করবেন নোবেলজয়ী বাঙালি অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী। এবার রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি কীভাব সামলে ওঠা সম্ভব, তা নিয়েও পরামর্শ দেবেন তাঁরা। যদিও সেই কমিটিতে আরও অনেকেই যুক্ত হবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
করোনাভাইরাস মহামারির জেরে ভারতীয় অর্থনীতিতে ধস নামার ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তারই রেশ ধরে ২০২১ আর্থিক বছরে GDP বৃদ্ধির পূর্বাভাসে বড় কাটছাঁট করল রেটিং সংস্থা ইন্ডিয়া রেটিং অ্যান্ড রিসার্চ (Ind-Ra)। এর আগে তারা ভারতের ক্ষেত্রে ৫.৫ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। কিন্তু গত সোমবার প্রকাশিত সাম্প্রতিকতম রিপোর্টে তা আরও কমে মাত্র ৩.৬ শতাংশে এসে ঠেকতে পারে বলে জানিয়েছে তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.