মৃত্যু করোনা’য় নয় তবুও টানাপোড়েন, দাহ করতে অস্বীকার শ্মশান কর্মীদের, শ্মশানে ৫ ঘন্টা বিলম্বের পর নিজেদের উদ্যোগেই সৎকার
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : বেশ কিছুদিন ধরেই জ্বর-সর্দি-কাশি ও পেটের ব্যাথায় ভুগছিলেন জয়নগর থানা এলাকার চালতাবেরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের হোগলডহরি গ্রামের বাসিন্দা উত্তম নস্কর (৩৭)। গত শনিবার তাকে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার করোনা পরীক্ষা করা হয়, কিন্তু করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগেই মঙ্গলবার গভীর রাতে মৃত্যু হয় উত্তমের। বুধবার তার মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত কর্মীরা দাহ করতে অস্বীকার করে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, শেষপর্যন্ত নিজেদের উদ্যোগেই কোনও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ছাড়াই মৃতদেহ সৎকার করতে বাধ্য হন পরিবারের সদস্যরা।
মৃত্যুর কারণ হিসেবে তার ডেথ সার্টিফিকেটে “নিমুনিয়া”য় মৃত্যু বলেই উল্লেখ ছিল। অভিযোগ, ডেথ সার্টফিকেট দেখেও করোনা সন্দেহে দাহ করতে অস্বীকার করে বারুইপুর কীর্তনখোলা শ্মশানের কর্মীরা। নানা টানাপোড়েনের পর শেষপর্যন্ত ৫ ঘণ্টা মৃতদেহ শশ্মানে পরে থাকার পর সৎকার করা হলেও শ্মশান কর্মীরা তাতে হাত লাগান নি বলে অভিযোগ।
মৃতের ভাই অশোক নস্কর বলেন, “হাসপাতালের সার্টিফিকেটে নিমুনিয়া’য় মৃত্যু বলে উল্লেখ থাকলেও শ্মশান কর্মীরা করোনা’য় মৃত্যুর অজুহাতে দাহ করতে বেঁকে বসেন। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা টালবাহানার পর তারা জানায়, মৃতদেহ দাহ করতে তারা হাত লাগাবেন না। বাড়ির লোকদেরই সব করতে হবে। তখন বাধ্য হয়ে ধর্মীয় সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান ছাড়াই আমরা দাদার মৃতদেহ বৈদ্যুতিক চুল্লিতে চাপিয়ে দাহ করি।”
এ ব্যাপারে বারুইপুর পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধান তথা বর্তমান পুর প্রশাসক শক্তি রায়চৌধুরী জানান, যেহেতু করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও আসেনি। তাই শ্মশানের কর্মীরা দাহ করার ঝুঁকি নিতে চায়নি। অন্যদিকে, এলাকার বাসিন্দারা শ্মশান কর্মীদের এই অমানবিক ব্যবহারে ক্ষুব্ধ বলে সূত্রের খবর।