বেহালা-ঠাকুরপুকুর ও জোকায় পুরভোটে প্রচারে পিছিয়ে বিরোধীরা, জয়ের লক্ষ্যে তৃনমূল, ইঙ্গিত এবিএন নিউজের সমীক্ষায়
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : আজ (১৯ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে চলেছে পুরভোট। বেহালা, ঠাকুরপুকুর ও জোকা এই তিনটি অঞ্চল রাজনৈতিক মহলে অন্যতম আকর্ষণ। কারণ প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ছিলেন বেহালার বাসিন্দা তথা ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃনমূল প্রার্থী। দিন বদলেছে, তবে বদলায় নি এলাকার মানচিত্র। কলকাতা পুরসভার অধীনস্থ ১৬ টি বরো কমিটির মধ্যে বেহালা, ঠাকুরপুকুর এবং জোকা এলাকায় রয়েছে ১৩, ১৪ এবং ১৬ নম্বর এই তিনটি বরো কমিটি। প্রতিটি বরো কমিটিতে রয়েছে ৭ করে ওয়ার্ড। তবে এই ২১ টি ওয়ার্ডের মধ্যে প্রায় সবগুলিতেই ভোটের আগেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়েছেন তৃনমূল প্রার্থীরা… এমনই ইঙ্গিত পাওয়া গেল, এবিএন নিউজের ওয়ার্ড পরিক্রমার সমীক্ষায়।
উল্লেখ্য, ১৩ নম্বর বরো কমিটিতে রয়েছে ১১৫, ১১৬, ১১৭, ১১৮, ১১৯, ১২০ এবং ১২২ নম্বর ওয়ার্ড। ১৪ নম্বর বরো কমিটিতে রয়েছে ১২১, ১২৭, ১২৮, ১২৯, ১৩০, ১৩১, ১৩২ নম্বর ওয়ার্ড। ১৬ নম্বর বরো কমিটিতে রয়েছে ১২৩, ১২৪, ১২৫, ১২৬, ১৪২, ১৪৩ এবং ১৪৪ নম্বর ওয়ার্ড। গতবার (২০১৫) কলকাতা পুর নির্বাচনে এই ২১ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯ টি ওয়ার্ডেই জয়ী হয়েছিলেন তৃনমূল প্রার্থীরা। শুধুমাত্র ১২৭ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএমের নীহার ভক্ত এবং ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএমের রত্না রায় মজুমদার জয়ী হয়েছিলেন।
এবারেও এই দুটি ওয়ার্ডে মূলতঃ শক্ত লড়াই তৃণমুল বনাম সিপিএমের। তবে বাকি ১৯ টি ওয়ার্ডের মধ্যে বিজেপি বা সিপিএম কেউই খুব একটা সুবিধাজনক জায়গায় নেই। তবে ১২৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির জেলা সভাপতি শঙ্কর শিকদার প্রার্থী হওয়ায় ওখানে কিছুটা লড়াই দেবে বিজেপি। কারণ শঙ্কর শিকদারকে জেতানোর জন্য সর্ব শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতারা। তবে বিজেপি তাতেও তেমন কোনো ফায়দা তুলতে পারবে বলে মনে হচ্ছেনা, এখনও পর্যন্ত এমনটাই জানা যাচ্ছে এই সমীক্ষায়।
কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এখন আর রাজনৈতিক অঙ্গনে নেই। তাই তার ফেলে যাওয়া ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃনমূল প্রার্থী হয়েছেন শোভন জায়া রত্না। পাশাপাশি ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বরো কমিটির চেয়ারম্যান মানিক লাল চট্টোপাধ্যায় এবং ১৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা ১৬ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান ইন্দ্রজিৎ ভট্টাচার্য বছর খানেক আগে মারা গিয়েছেন। তাদের এই ওয়ার্ড দু’টিতে নতুন প্রার্থী দিয়েছে তৃনমূল। ১২১-এ প্রার্থী হয়েছেন রূপক গাঙ্গুলী আর ১৪৩-এ প্রার্থী হয়েছেন ক্রিস্টিনা বিশ্বাস। এই দুটি বরোতেই চেয়ারম্যানের পদ শূন্য। তাই কে কে হচ্ছেন চেয়ারম্যান ! ভোটের পর তারই একটা ইঙ্গিত মিলতে পারে এই সমীক্ষায়। শেষমেশ, ২১ টি ওয়ার্ডে পরিক্রমার পরিপ্রেক্ষিতে যেটা উঠে এলো তাতে ১২৪, ১২৭, ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডে লড়াইয়ের আঁচ থাকলেও অন্যান্য সব ক’টি ওয়ার্ডেই এগিয়ে রয়েছে তৃনমূল। সবচেয়ে বড় কথা, বিরোধীরা কেউ লড়াইয়ের ময়দানে আছে বলে মনেই হলোনা এই পরিক্রমায়।
প্রসঙ্গত: দেওয়াল লিখন থেকে শুরু করে ফ্লেক্স আর পতাকায় তৃনমূলের প্রচারে ছেয়ে গিয়েছে সর্বত্র। নির্বাচনী প্রচারে অনেক পিছনে পড়ে গিয়েছেন বিজেপি ও সিপিএমের প্রার্থীরা। আর কংগ্রেসের প্রচার তো চোখেই পড়ছে না। স্বাভাবিক ভাবেই বিরোধীরা নির্বাচনী লড়াইয়ের ময়দান থেকে যেন অনেকটাই ছিটকে গিয়েছেন। যেন ময়দানে নামার আগেই পরাজয়ের হাতছানি ! আজ (১৯ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে চলেছে পুরভোট। ভোটের আগেই যেন জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়েছেন তৃনমূল প্রার্থীরা। তাই ভোটের আগেই উৎসবের আমেজ তৃনমূল শিবিরে।
ছবি : স্বপন নস্কর।
চোখ রাখুন, পরবর্তী খবরে …..
—————————————-
কোন ওয়ার্ডে কোন দলের প্রার্থী জিততে চলেছেন, কে কে হচ্ছেন বরো চেয়্যারম্যান ? তাদের নাম পরবর্তী খবরে !