দীর্ঘ ন’বছর পরে প্রেসিডেন্সি ফের এসএফআইয়ের
ওয়েব ডেস্ক:- দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় এবং হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ও লাল পতাকা আর লাল আবিরের দখলে। ন’বছর পরে প্রেসিডেন্সিতে ছাত্র সংসদ দখল করল এসএফআই। সব কার্যনির্বাহী পদেই জিতেছে তারা। আর ১১৬টি শ্রেণি-প্রতিনিধি পদের মধ্যে তারা জিতেছে ৫৮টিতে।
প্রেসিডেন্সিতে ছাত্রভোট হল আড়াই বছর পরে। বৃহস্পতিবার ভোট হয়, সন্ধ্যায় গণনাও শেষ। সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ-সাধারণ সম্পাদক ও গার্লস কমন রুমের প্রতিনিধি-পদে জয়ী এসএফআই। সভাপতি পদে ১০৮৫, সহ-সভাপতি পদে ৯৯৯, সাধারণ সম্পাদক পদে ৮৪০। সহ-সম্পাদক পদে ৯১৯ এবং গার্লস কমন রুমের প্রতিনিধি পদে ৪১১টি ভোট পেয়েছে তারা। সমর্থকেরা জানান, প্রেসিডেন্সির ইতিহাসে এই প্রথম কোনও এসএফআই প্রার্থী গার্লস কমন রুম প্রতিনিধি-পদে জিতলেন।
শ্রেণি-প্রতিনিধি নির্বাচনে সর্বাধিক আসন পেয়েছে এসএফআই। তারা জিতেছে ৫৮টি আসনে। তার পরেই রয়েছে ইনডিপেন্ডেন্ট কনসোলিডেশন (আইসি)। ৪৭টি আসন পেয়েছে তারা। শ্রেণি-প্রতিনিধি নির্বাচনে প্রেসিডেন্সিতে এই প্রথম তাদের সমর্থনে দু’জন নির্দল প্রার্থী জিতেছেন বলে এবিভিপি-র দাবি। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সপ্তর্ষি সরকার বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্সিতে আমাদের সংগঠনই করতে দেওয়া হয় না। তবু আমরা খাতা খুলেছি। এ বার লক্ষ্য যাদবপুর।’’ টিএমসিপি-র দাবি, তাদের সমর্থনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিতেছেন পাঁচ জন নির্দল প্রার্থী। ‘‘প্রেসিডেন্সিতে আমরা পা রাখলাম। এ বার এগোব যাদবপুরের দিকে। যাদবপুরের ফল আরও ভাল হবে,’’ বলেন টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। শ্রেণি-প্রতিনিধি নির্বাচনে অন্য সংগঠনগুলি অর্থাৎ এআইএসএফ, এআইএসএ, ডিএসও, এসজিএস— সকলেই একটি, দু’টি কিংবা তিনটি আসন পেয়েছে।
এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য জানান, তাঁরা বামপন্থী আইসা ও এআইএসএফ-কেও তাঁদের সঙ্গে আসতে বলছেন। সৃজন বলেন, ‘‘আমরা বাম ঐক্যের পক্ষে। এই জয় প্রমাণ করল, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ছাত্রভোট হলে প্রথম পছন্দ এসএফআই। তবে আমরা শুধু এসএফআইয়ের জয় দেখতে চাইছি না। দেখতে চাইছি, তৃণমূল এবং এবিভিপি-কে প্রত্যাখ্যান করছেন বাংলার ছাত্রছাত্রীরা। আগামী দিনেও রাজ্য জুড়ে গণতান্ত্রিক ভাবে ছাত্রভোট হলে পড়ুয়ারা তৃণমূল ও বিজেপি-কে প্রত্যাখ্যান করবেন।’’ জেএনইউ এবং হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু দিন আগেই জোট করে ছাত্র সংসদ গড়েছে এসএফআই।
এ দিন বেলা ১১টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। গণনা চলে ২টো থেকে। প্রেসিডেন্সির গেটের বাইরে সব দলের সমর্থকেরা ভিড় করতে থাকেন। এসএফআই যে জিতছে, সেটা স্পষ্ট হতে থাকে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকেই। ৭টার পরে জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় শুরু হয় তাদের স্লোগান, লাল আবিরের মাতন। রাত সাড়ে ৯টার পরে সম্পূর্ণ ফল বেরোয়। এসএফআইয়ের জয়ে অভিনন্দন জানিয়ে বামফ্রন্ট নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘আশা রাখি, বামপন্থী ছাত্র সংগঠন আরও মজবুত হবে।’’
আনন্দবাজার পত্রিকা