“স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে বড় জরুরি অবস্থা”, করোনা পরিস্থিতি বিষয়ে প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর রঘুরাম রাজন
ওয়েব ডেস্ক:- Coronavirus Pandemic: নিজের ব্লগে রঘুরাম রাজন লিখেছেন, সরকারের রাজস্বে টান পড়লেও এই মুহূর্তে দেশের দরিদ্র শ্রেণির জন্যে ব্যয় করাই হল “সঠিক কাজ”
করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত দেশের দরিদ্র মানুষদের পাশে আগে দাঁড়ানো, আর অকারণ খরচ কমানোর চেষ্টায় অগ্রাধিকার দেওয়া, এমনটাই বললেন রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার (RBI) প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। করোনা ভাইরাস (COVID- 19) মহামারীর ফলে তৈরি হওয়া বর্তমান পরিস্থিতিকে “স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে বড় জরুরি অবস্থা” হিসাবে বর্ণনা করেছেন তিনি (Raghuram Rajan)। একটি ব্লগে ভারতে যেভাবে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে এবং তার ফলে যে পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে দেশকে তা নিয়েই আলোচনা করেন তিনি। সরকার যদি শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সমস্ত কিছু পরিচালনা করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কথা ভাবে তাহলে ভুল ভাবা হবে। তিনি বলেন এটা হলে, “খুব অল্প হলেও, অনেক দেরী হয়ে যাবে”।
নিজের ব্লগে রঘুরাম রাজন লিখেছেন, সরকারের রাজস্বে টান পড়লেও এই মুহূর্তে দেশের দরিদ্র শ্রেণির জন্যে ব্যয় করাই হল “সঠিক কাজ”। “আমাদের সীমিত আর্থিক সংস্থান অবশ্যই একটি উদ্বেগের বিষয়। তবে, এই মুহুর্তে দরিদ্রদের জন্যে ব্যয় করার বিষয়টিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার, একটি মানবিক জাতি হিসাবে এটাই সঠিক কাজ। পাশাপাশি এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিপুল অর্থ বরাদ্দের অর্থ এটা নয় যে আমরা আমাদের বাজেটের সীমাবদ্ধতাকে উপেক্ষা করতে পারি, বিশেষত এই বছর কিন্তু আমাদের রাজস্বও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের তুলনায়, যারা রেটিং ডাউনগ্রেডের ভয় ছাড়াই জিডিপির ১০% বেশি ব্যয় করতে পারে, আমরা ইতিমধ্যে এমন অবস্থায় প্রবেশ করেছি যেখানে একটি বিশাল আর্থিক ঘাটতি দেখা দেবে এবং এ নিয়ে সঙ্কটও তৈরি হবে, অথচ এর থেকে বের হতে আরও বেশি ব্যয় করতে হবে”, লেখেন তিনি।
“বলা হয় যে ভারত কেবল সংকটের সময়েই আর্থিক সংস্কারে মন দেয়। আশা করি, এই সময় রুখে দাঁড়ানো হবে। না হলে এই ট্রাজেডির সামনে দাঁড়াতে হবে আমাদের যেখানে দেখতে পাবো যে আমরা একটি সমাজ হিসাবে কতটা দুর্বল হয়ে পড়েছি। এই মুহূর্তে আমাদের রাজনীতি করার থেকেও যেটা বেশি দরকার তা হল, অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যসেবা সংস্কারের দিকে মনোনিবেশ করা।”
লকডাউনের ফলে ও গোটা দেশে করোনা মহামারীর প্রভাবে আর্থিক দুরবস্থাকে স্বীকার করে নিয়েই রঘুরাম রাজন বলেন, যাই-ই হোক না কেন, দেশের নিম্ন মধ্য়বিত্তরা যাতে বেঁচে থাকতে পারে তা দেখার দায়িত্ব সরকারেরই।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে ৪,০০০-এর থেকেও বেশি মানুষ আক্রান্ত করোনা ভাইরাসে, মোট সংখ্যা ৪,০৬৭ জন। ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বাধিক ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে ওই রোগে, সব মিলিয়ে মোট ১০৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন।