বেলজিয়ামে গবেষণার জন্য ডাক পাওয়া রাইসা আনসারি এখন রাস্তায় ফল বিক্রি করেন ইন্দোরে
প্রাক্তন পিএইডি গবেষক রাইসা আনসারি। বেলজিয়ামেও ডাক পেয়েছিলেন একটি বেষণায় যোগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু হায় বিধাতা! ইন্দোরের বাজারে এখন তাঁকে ফল বিক্রি করতে হয়। তাও ক্রেতার আকাল। বড়িতে ২৫ জন সদস্য। কাকে কীভাবে খাওয়াবেন তিনি। লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি ভিডিওয়ে তিনি সরকারের দিকে আঙুল তোলেন। তখনও কেউ চিনতেন না রাইসাকে।
একজন ফল বিক্রেতাকে ঝরঝরে ইংরেজিতে কথা বলতে দেখে গোটা দেশ অবাক। তার ইংরাজি শুনে সেখানে উপস্থিত সবাই তার শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা জিজ্ঞাসা করেন। উত্তরে সবজি বিক্রেতা জানান, তিনি ইনদোরের দেবী অহল্যা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেটেরিয়াল সায়েন্সে পিএইচডি করেছেন।
তারপরেই সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই ঘটনাটি ঘটে গত সপ্তাহে। সম্প্রতি তাঁর বিষয়ে আরও তথ্য সামনে আসায় চমকে গিয়েছে দেশ। বেলজিয়ামে গবেষণায় ডাক পেয়েছিলেন তিনি! যেতে পারেননি কারণ তাঁর পিএইচডি গাইড তাঁর সেসব কাগজপত্রে সই করতে রাজি হননি।
গাইডের অনুমতি ছাড়া এই পদক্ষেপ নেওয়ার উপায় ছিল না তাঁর। তিনি ইন্দোরের দেবী অহিল্যা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা নিয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায় পাশ করেছিলেন এবং সেখানেই মেটিরিয়াল সায়েন্স নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। কিন্তু যখন তিনি এই সুযোগটি পেয়েছিলেন তখন কলকাতার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইএসইআর)–এ কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের ওপর গবেষণা করছিলেন। তঁর এক সিনিয়র বেলজিয়ামে গবেষণা করছিলেন। তার রিসার্চ হেড রাইসাকে তাঁদের গবেষণায় যোগদান করার সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু কলকাতায় তাঁর রিসার্চ গাইড যখন অনুমতি দিলেন না, তিনি হতাশ হয়ে কলকাতা থেকে ফের ইন্দোরে চলে আসেন। এদিকে তাঁর ভাইয়ের স্ত্রীয়েরা ছোট ছোট বাচ্চাদের রেখে পালিয়ে গেলে তাঁর কাছে দেখভালের ভার পড়ে। তখনই তাঁকে তাঁর স্বপ্ন ভুলে কজে নেমে পড়তে হয়। কিন্তু কারা তাঁকে চাকরি দেবে? রাইসার মতে, গোটা দেশ যখন ভাবে যে মুসলিমদের থেকেই করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে, তখন তাঁর নাম শুনে তাঁকে কে চাকরি দেবে? তাই তাঁকে নিজের বাবার পেশাতেই চলে আসতে হয়। ফল বিক্রি করা। তাঁর কাচে বেসরকারি কোনও সংস্থায় কাজ খোঁজার চেয়ে ফল বিক্রি করাই ভাল। কিন্তু তাতেও যদি বাধা পড়ে লকডাউনের জন্য। তবে পরিবারকে দু’বেলা কী খাওয়াবেন