না ফেরার দেশে চলে গেলেন রতন টাটা ,টাটা সম্পর্কে এই ১০ তথ্য জানতেন?

Spread the love

সদ্য প্রয়াত রতন টাটা সম্পর্কে এই ১০ তথ্য জানতেন?
————————
ওয়েব ডেস্ক :-   না ফেরার দেশে চলে গেছেন ভারতের শিল্পজগতের ‘নক্ষত্র’ খ্যাত টাটা গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান রতন টাটা। বুধবার দিনগত রাতে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এশিয়ার খ্যাতিমান এই ব্যবসায়ীর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

সদ্য প্রয়াত রতন টাটা সম্পর্কে সাধারণ মানুষ কতটুকুই বা জানেন! মানুষের জীবন হচ্ছে বইয়ের মতো। যত পড়বেন তত জানবেন। তাই রতন টাটা সম্পর্কে জানাতে এই প্রতিবেদনে রইল তার জীবন সম্পর্কে ১০টি তথ্য, যা হয়তো অনেকেরই অজানা ছিল। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক।

এক. টাটা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা জামশেদজি টাটা হলেন রতন টাটার দাদা। ১৯৪৮ সালে মাত্র দশ বছর বয়সে তার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায় এবং তাই তিনি তার দাদি নওয়াজবাই টাটার কাছে বেড়ে ওঠেন।

দুই. রতন টাটা কখনো বিয়ে করেননি। মজার ব্যাপার হলো, চারবার এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তার প্রায় বিয়ে হয়েই যাচ্ছিল। কিন্তু নানা কারণে বিয়ে করতে পারেননি। তিনি একবার বলেছিলেন- আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসে কাজ করার সময়ে তিনি প্রেমে পড়েছিলেন। কিন্তু ১৯৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধের কারণে মেয়েটির বাবা-মা তাকে ভারতে পাঠানোর বিরোধিতা করেন। এরপর আর বিয়ে করেননি তিনি।

তিন. রতন টাটা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মুম্বাইয়ের ক্যাম্পিয়ন স্কুলে পড়াশোনা করেন। তারপর ক্যাথেড্রাল এবং জন কনন স্কুল এবং সিমলার বিশপ কটন স্কুল সিমলায় পড়াশোনা করেন। তিনি ১৯৫৫ সালে নিউইয়র্ক সিটির রিভারডেল কান্ট্রি স্কুল থেকে ডিপ্লোমা লাভ করেন।

চার. রতন টাটা ১৯৬১ সালে টাটা গ্রুপে তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং তার প্রথম কাজ ছিল টাটা স্টিলের শপ ফ্লোর পরিচালনা করা। পরে তিনি পড়াশোনা শেষ করতে আমেরিকার হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে যান। রতন টাটা কর্নেল ইউনিভার্সিটি কলেজ অব আর্কিটেকচারেরও সাবেক ছাত্র।

পাঁচ. ২০০৪ সালে টিসিএস প্রতিষ্ঠা করেন রতন টাটা। তার নেতৃত্বে, টাটা গ্রুপ ইস্পাত প্রস্তুতকারক কোরাস, ব্রিটিশ মোটরগাড়ি সংস্থা জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার এবং ব্রিটিশ চা সংস্থা টেটলির সঙ্গে ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করে, যা টাটা কোম্পানিকে সারা বিশ্বের নজরে নিয়ে আসে।

ছয়. ২০০৯ সালে রতন টাটা ভারতের মধ্যবিত্ত শ্রেণির সাধ্যের মধ্যে সবচেয়ে সস্তা গাড়ি তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন এবং এক লাখ রুপি দামের টাটা ন্যানো বাজারে নিয়ে এসেছিলেন।

সাত. রতন টাটা তার সেবামূলক কাজের জন্যও পরিচিত। তার নেতৃত্বে টাটা গ্রুপ ভারতের স্নাতক শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮ মিলিয়ন ডলারের টাটা স্কলারশিপ ফান্ডের ব্যবস্থা করে।

আট. ২০১০ সালে টাটা গ্রুপ হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল (এইচবিএস)-এ একটি এক্সিকিউটিভ সেন্টার নির্মাণের জন্য ৫০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়, যেখানে রতন টাটা তার স্নাতক প্রশিক্ষণ লাভ করেন।

নয়. ২০১৪ সালে টাটা গ্রুপ আইআইটি-বোম্বেকে ৯৫ কোটি রুপি অনুদান দেয় এবং গরিব মানুষ এবং সম্প্রদায়ের প্রয়োজনের জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তির বিকাশের উদ্যোগ নেয়। সেই উদ্দেশ্যে টাটা সেন্টার ফর টেকনোলজি অ্যান্ড ডিজাইন (টিসিটিডি) গঠন করেন রতন টাটা।

১০. জামশেদজি টাটার সময় থেকেই বোম্বে হাউসে বর্ষাকালে রাস্তার কুকুরদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়ার ইতিহাস রয়েছে। সেই ঐতিহ্য অব্যাহত রেখেছেন রতন টাটা। তার বোম্বে হাউসের সদর দপ্তরে সাম্প্রতিক সংস্কারের পরে রাস্তার কুকুরদের জন্য একটি নিরাপদ স্থান তৈরি করা হয়। সেখানে রাস্তার কুকুরদের জন্য খাবার, পানি, খেলনা দেওয়া হয়। সেখানে একটি খেলার জায়গাও রয়েছে তাদের জন্য।

প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর মধ্যরাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন রতন টাটা। দ্রুত তাকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার পর অনেকটা সুস্থও হন। তবে বুধবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। একপর্যায়ে রাতে ভারতীয় এই বিজনেস আইকনের মৃত্যুর খবর আসে।

রতন টাটার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ শিল্পপতিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.