পাঠকের কলম :-; রাসবিহারী মোড়ে Z Theatre এর উঠোন থিয়েটারে,এক অসাধারণ নাটক দেখলাম :- আবির মনোজ, কোলকাতা
আজ সন্ধ্যাটা খুব সুন্দর কাটল। দলের বেশ কিছু সদস্য সদস্যাদের নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম রাসবিহারী মোড়ে Z Theatre এর উঠোন থিয়েটারে। অসামান্য সুন্দর দুটি নাটক দেখলাম। প্রথমটি ” বিসর্গ থিয়েটার ” এর ” বাঘ চাল ” , অন্যটি ” রঙ্গশীর্ষ ” এর ” অন্য শকুন্তলা “। যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তার সাথে নাটকগুলি লেখা হয়েছে এবং পরিচালিত হয়েছে যথাক্রমে দ্বৈপায়ন ও মনোজিৎ মিত্রের দ্বারা ।
যথেষ্ট চিন্তা ভাবনা করে , খুব বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে নাটক দুটি লেখা হয়েছে এবং পরিচালিত হয়েছে। অভাব মানুষকে সৃষ্টিশীল করে শুনেছিলাম। আজ তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ দেখলাম। না আলো না স্টেজ না আবহ , কোন কিছু ছাড়া, জনা বিশেক লোক গোল করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে মন্ত্রমুগ্ধের মতন বসে , আর মাঝখানে বয়ে চলেছে নাটক। অভিনেতার নিশ্বাসের উষ্ণতা , তার শরীরের গন্ধ ছুঁয়ে যাচ্ছে দর্শককে । অপর দিকে দর্শকের অনুভূতির প্রতিটি রেখা দেখতে পাচ্ছেন অভিনেতা। এত জ্যান্ত থিয়েটার আগে কখনও দেখিনি। যত বাধা আসুক , কোন পরিস্থিতিতে একদিনও নাটক ছাড়া বাঁচব না এই জেদ এই অঙ্গীকার এই দায়বদ্ধতা জন্ম দিয়েছে লড়াই- এর এই নতুন পন্থাকে।
দুটি নাটকেই অভিনেতা অভিনেত্রীরা (বাঘচালে দ্বৈপায়ন ও নিবেদিতা) এবং (অন্য শকুন্তলায় পৃথা, প্রীতি এবং সৌরভ) এত সাবলীল এত সৃষ্টিশীল যে নাটক শেষ হবার পর আফসোস হচ্ছিল মন বললো , যাঃ শেষ হয়ে গেল ! বিশ্বাস করুন ছেড়ে আসতে ইচ্ছে করছিল না। ওরা থিয়েটার ছাড়া আর কিছু করে না। থিয়েটারই ওদের রুজি রুটি। ওরা থিয়েটারকে হোম ডেলিভারি দেয়। শুনে মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল , পরক্ষণেই ওদের প্রতি শ্রদ্ধায়,ভালোবাসায় মন ভরে উঠলো। ওদের লড়াই ওদের যুদ্ধ ওদের সৃষ্টিশীলতা আমাকে অনুপ্রাণিত করল। ওদের জন্য গর্বে মন ভরে উঠলো। ওরা আমার সহযোদ্ধা , ওদের অমসৃণ চলার পথ মসৃণ হোক এই কামনা নিয়ে বাড়ি ফিরলাম। আগামী ২৫ শে ডিসেম্বর আবার বেশ কয়েকটি দল তাদের সৃষ্টিকে মেলে ধরবে ঐ উঠোনে। দল বেধে সবাই আসুন। উৎসাহ দিন ওদের। নাটক দেখে ডোনেশান দিন সাধ্যমতন দু-হাত ভরে। জয় হোক থিয়েটারের।