অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার আঞ্চলিক কমিটি ঘোষণা করা হলো এবং অন্যায় ভাবে NRC প্রয়োগের বিরুদ্ধে মহাভারতের ধর্মযুদ্ধ ঘোষণা –

Spread the love

ঠাকুরনগরে মতুয়া সম্প্রদায়ের সহযোদ্ধাদের নিয়ে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার আঞ্চলিক কমিটি ঘোষণা করা হলো এবং অন্যায় ভাবে NRC প্রয়োগের বিরুদ্ধে মহাভারতের ধর্মযুদ্ধ ঘোষণা-

নিজস্ব সংবাদদাতা:-  অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস উপলক্ষে 29th August,2023 নবান্ন সভাঘরের মিটিংয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে “পশ্চিমবঙ্গকে ও বাঙ্গালীদের কোনো মূল্যেই আর ভাগ হতে দেবনা” এবং “মতুয়া সহ সমস্ত সনাতনী মানুষদের জন্য চাই নিঃশর্ত নাগরিকত্ব” মূলত এই দুটি দাবি আমরা করেছি । আবার 29th November,2023 ভারতের গৃহমন্ত্রী অমিত শাহের বিজেপির সভাতেও আমরা আমাদের বেশ কিছু দাবি জানাতে চেয়ে ছিলাম । কিন্তু আমাকে এক মুহূর্তের জন্য ওনার সাথে দেখা না করতে দিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে অন্যায়ভাবে সরিয়ে দেওয়া হল । ফলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের মহাভারত বা ধর্মযুদ্ধ শুরু করতে আমরা বাধ্য হলাম। আমাদের রুবি হাসপাতাল মোড়ের বিখ্যাত দুর্গা পূজার এই বছরের থিমও ছিল “মতুয়া সহ সমস্ত সনাতনী মানুষদের জন্য চাই নিঃশর্ত নাগরিকত্ব” । আমরা কোন মূল্যেই মতুয়াদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার ভয় দেখিয়ে কোন রাজনৈতিক দলকে ভোটের নোংরা রাজনীতি করতে দেবনা । আজ 03.12.2023 তারিখ হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের আশীর্বাদধন্য পবিত্র ঠাকুর নগরে হিন্দু মহাসভার মতুয়া কর্মী সমর্থকদের নিয়ে পূজা দিয়ে আমাদের আগামী 2024 লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত কেন্দ্রে লড়াই করা এবং মতুয়া সহ সমস্ত সনাতনী মানুষদের নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে জনআন্দোলনের কথা ঘোষণা করা হলো । মূলত কোন দাবি বা বিষয় গুলোর উপর ভিত্তি করে আমাদের এই জন আন্দোলন শুরু হচ্ছে সেটা নিচে উল্লেখ করা হলো ।

 

*১. মতুয়া সহ সমস্ত হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ এবং জৈন অর্থাৎ সমস্ত সনাতনী মানুষ যারা জন্মসূত্রে ভারতীয় তারা শুধু বাংলাদেশ কেন পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তেই থাকুন না কেন, তারা যদি ভারতের নাগরিকত্ব নিতে চান তাহলে রাষ্ট্রকে তাদের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দিতে হবে। কোনো দিন, ক্ষন, তারিখ বা নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া যাবেনা । যারা দেশ ভাগের বলী হয়েছেন তাদের যদি NRC এর লাইনে দাড় করানোর মত অন্যায় করা হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং গৃহমন্ত্রী অমিত শাহকেও NRC এর লাইনে দাড়িয়ে নিজেদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে। মতুয়া সহ কোন সনাতনী মানুষদের ওপর বিন্দুমাত্র অন্যায় হলে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার সহযোদ্ধারা দেশে বিক্ষোভের আগুন জ্বালিয়ে দেবে।*

*২. যে সমস্ত সনাতনী খ্রিস্টান এবং সনাতনী মুসলমান বংশ পরম্পরায় এই ভারতবর্ষকে তাদের নিজের মায়ের মত শ্রদ্ধা করেছেন এবং যারা মনে প্রাণে “বসুধৈব কুটম্বকম” অর্থাৎ “World Is A Family” বা “ঠাকুরের যত মত, তত পথ” বিশ্বাস করেন, দেশ ভাগের পরেও যাদের শিকড়ের সংযোগ এই ভারত বর্ষের সঙ্গে তাদের সাথে আমাদের কোনো সংঘাত নেই । তাদের আমরা বুকে করে আগলে রাখবো । কিন্তু যারা অবৈধভাবে ভারতে এসে ভারতের ডেমোগ্রাফি পরিবর্তন করতে চাইছে বা আরব এবং ইউরোপের টাকা ব্যবহার করে লোভ বা ভয় দেখিয়ে সনাতনীদের ধর্মান্তরন ঘটানোর চেষ্টা করে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইবে, এই ভারতের মাটিতে তাদের কোন স্থান নেই । তাদের NRC এর লাইনে দাড়াতেই হবে । শুধু তাই নয় তাদের অবৈধ ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড ইত্যাদি কোন কোন কেন্দ্রীয় কর্মচারী, আধিকারিক বা চক্র বানিয়ে দিয়েছে তাদের রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে ।*

*৩. বাংলার সাংসদ শান্তনু ঠাকুর এবং এই রকম আরো অনেক এমপি, এমএলএ বা জনপ্রতিনিধি রয়েছেন যারা মতুয়া অধ্যুষিত এলাকা থেকে নির্বাচিত । মতুয়াদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড থাকা সত্বেও যদি তাদের নাগরিকত্ব না থাকে তাহলে আমাদের প্রশ্ন শান্তনু ঠাকুর মহাশয় বা অন্য জন প্রতিনিধিদের সাংসদ পদটি বা বিধায়ক পদ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে । কারণ কেন্দ্র সরকারের যুক্তিতে, ওনারা অবশ্যই অধিকাংশ সেই সমস্ত ভোটারদের ভোটে জিতেছেন যারা ভারতের নাগরিকই নয় । তাহলে আগামী 2024 লোকসভা নির্বাচন ততদিন পর্যন্ত স্থগিত করে রাখা উচিৎ যতক্ষণ না কেন্দ্র সরকারের স্পষ্ট NRC সংক্রান্ত রুলবুক আসছে এবং কারা নাগরিক আর কারা নয় সেটা নির্ধারিত হচ্ছে । আরো একটা বিস্ময়ের ব্যাপার বিজেপি সরকার এই রকম একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে বিগত নয় বছর কাজ করার সময় পেলেন না, Eleventh Hours এ এখন মরার কালে হরির নামের মত বিষয়টি উত্থাপন করা কেন? শুধু মতুয়াদের ভয় দেখিয়ে ভোট ব্যাংকের স্বার্থে রাজনীতি করা ?*

*আমাদের স্থির বিশ্বাস আমরা যতটা স্পষ্ট করে NRC এর বিষয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করলাম, আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি এই মুহূর্তে ভারতের অন্য কোনো রাজনৈতিক দল ভোট ব্যাংকের স্বার্থে নিজেদের অবস্থান ততটা স্পষ্ট করে বলতে পারবে না। আবারো বলছি বুকের শেষ রক্তবিন্দু থাকতে আমরা অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা মতুয়া সহ সনাতনীদের সাথে এই দ্বিচারিতা কোন মূল্যেই করতে দেবনা । অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা আগামী লোকসভা নির্বাচনে বাংলার 42টি কেন্দ্রেই অংশগ্রহণ করে এবং জনআন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে এই অন্যায়ের চিরতরে প্রতিকার করবে ।*

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.