*চাল* , *ডাল* *সাহায্য* *করার* *ক্ষেত্রে* *কি* *সাংবাদিকদের* *দুর্দশা* *ও* *দারিদ্রতার* *সীমা* *মাপা* *হলো* , *উঠছে* *প্রশ্ন*
পরিমল কর্মকার : দীর্ঘদিন ধরে লকডাউনের টানা বন্ধে অধিকাংশ মানুষের জীবন জীবিকা এখন বিপন্ন। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি চাল, ডাল, আলু ইত্যাদি খাদ্য সামগ্রী দিয়ে দুঃস্থ সাংবাদিকদের সাহায্য করল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। তবে এই সাহায্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বন্টন ব্যবস্থায় গলদ ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, কোনও সাংবাদিককে বেশি চাল, ডাল আবার কোনও সাংবাদিককে কম চাল, ডাল দিয়ে কি তাদের দুর্দশা ও দারিদ্রতার সীমা মাপা হলো ?
উল্লেখ্য,, এই বন্দীদশায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার দুঃস্থ সাংবাদিকরা খুবই দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন জানার পর সম্প্রতি জেলা প্রশাসন তাদের চাল, ডাল, আলু ইত্যাদি খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করেছে। কিন্তু জেলারই কিছু সাংবাদিকের অভিযোগ, এই বন্টন ব্যবস্থায় কোনও সাংবাদিককে ২৫ কেজি চাল, আবার কোনও সাংবাদিককে ৫ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। সাহায্যের মাপকাঠিতে এই বিস্তর ফারাক (পার্থক্য) থাকায় সাংবাদিকদের অনেকেই ক্ষুব্ধ। অনেকেই বলছেন, চাল, ডালের মাপকাঠিতে পার্থক্য ঘটিয়ে কি সাংবাদিকদের দুর্দশা ও দারিদ্রতার সীমা মাপা হল ?
জেলার এক সাংবাদিক উপহাসের সুরে বললেন, যারা খুবই দুর্দশা ও দারিদ্রতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, তাদের হয়তো ২৫ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে, আর যারা এই লকডাউনে কিছুটা সমস্যায় রয়েছেন তাদের বোধহয় ৫ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। তবে এই ৫ কেজি চাল দেওয়ার বিষয়েও তিনি বলেন, “একজন সাংবাদিককে ৫ কেজি চাল দেওয়া মানে, ভিক্ষার সামিল নয় কি ? কারন এই কিঞ্চিৎ অন্নে ক’দিন চলবে?” এটা সাংবাদিককুলের অপমান বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অভিযোগ উঠেছে, জেলা প্রশাসননের ধামা ধরা কিছু সাংবাদিক জেলা প্রশাসনকে নামের তালিকা দেওয়ার সময় বহু সাংবাদিকেরই নাম বাদ দিয়েছিলেন। প্রথম পর্যায়ের তালিকায় উল্লেখিত মাত্র ১২ জন সাংবাদিককে ২৫ কেজি চাল দেওয়া হয়। বিষয়টি জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন জেলা সাংবাদিকেরা। তারপর আবার যে তালিকা পাঠানো হয়, সেই তালিকায় থাকা সাংবাদিকেরা পান ৫ কেজি করে চাল, ডাল, আলু ইত্যাদি।
জেলা প্রশাসনের এই খাদ্য সামগ্রী বন্টন ব্যবস্থায় চূড়ান্ত গাফিলতি ও স্বজনপোষনের জন্য দায়ী করা হয়েছে নামের তালিকা পাঠানো কয়েকজন সাংবাদিককে। কারন ইতিমধ্যেই তারা পরস্পরকে দোষারোপ করে চলেছেন। কেউ বলছেন, ” আমাকে ওমুক দা যে নামগুলোর লিস্ট করতে বলেছিল, আমি সেই নামেরই লিস্ট করেছি।”
স্বভাবত:ই প্রশ্ন ওঠে, এই ওমুক দা’টি কে ? তাহলে কি তারই আঙ্গুলি হেলনে প্রশাসনের কাছ থেকে জেলার সাংবাদিকদের কিছু পাওয়া না পাওয়ার ভাগ্য নির্ধারিত হয় !
যদি এটাই হয় তবে প্রশাসনের চিন্তা ভাবনার সময় এসেছে। কারন কোনও সাংবাদিককে মধ্যমণি করে পরবর্তী পর্যায়ে কাজ করা কতটা সমীচিন হবে !