ওয়েবডেস্কঃ- মা তুঝে সালাম এখন স্যোসাল মিডিয়ায় এটাই ভাই রাল শব্দ। প্রচন্ড শীতকে উপেক্ষা করে চলছে দিল্লীর শাহীণ বাগের অবস্থান বিক্ষোভ আন্দোলন । ডিসেম্বরে দিল্লির তীব্র শীতকে উপেক্ষা করেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শাহিনবাগে সামিল হয়েছিলেন শয়ে শয়ে মহিলা। কেউ বৃদ্ধা তো কেউ গৃহবধূ, রয়েছেন কমবয়সী মহিলারাও। কেউ আবার কোলের শিশুকে নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন প্রতিবাদের মঞ্চে।
চারমাসের মহম্মদ জাহানকে নিয়েও শাহিনবাদের প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন তার মা নাজিয়া। কিন্তু কে ভেবেছিল এই শাহিনবাগ থেকে আর ছেলেকে নিয়ে ফিরতে পারবেন না তিনি। গত সপ্তাহেই ঠান্ডা লেগে বুকে কফ জমে মৃত্যু হয় দুধের শিশু মহম্মদ জাহানের। চোখে জল নিয়ে ফের শাহিনবাগের প্রতিবাদ মঞ্চে ফিরলেন জাহানের মা।
জাহানের গালে তেরঙ্গে এঁকে দিয়েছিলেন শাহিনবাগের প্রতিবাদীরা। সকলেরই বড্ড আদরের ছিল ছোট্ট জাহান। কিন্তু দিল্লি হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় খোলা আকাশের নীচে চলা এই প্রতিবাদ সভায় হঠাত্ই অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। ঠান্ডায় বুকে কফ জমে গিয়েছিল জাহানের। ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় তার। শাহিবাগের পাশে বাটলা হাউজ চত্বরে প্লাস্টিক দিকে একটি তাঁবু তৈরি করেছিল জাহানের বাবা-মা। সারাদিন প্রতিবাদের পর রাতে ওই ছাউনিতেই এসে নিজের বাকী দুই সন্তান সহ জাহানকে নিয়ে এসে বিশ্রাম নিতেন মা নাজিয়া ও বাবা মহম্মদ আরিফ।
তারা জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বর ও সর্দিতে ভুগছিল আরিফ। গত ৩০ জানুয়ারি ঘুম থেকে কিছুতেই ওঠানো যাচ্ছিল না জাহানকে। তার দেহের কোনও নড়নচড়ন ছিল না। অবস্থা বেগতিক বুঝে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে জাহানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিত্সকেরা। যদিও হাসপাতালের তরফ থেকে জাহানের মৃত্যুর কোনও নির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়নি তার ডেথ সার্টিফিকেটে।
নিজের ছেলেকে হারানোর পর নাজিয়ার বক্তব্য, আমার নিজের সন্তান ও দেশের প্রত্যেকটা সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্যই পথে নেমে প্রতিবাদে সামিল হয়েছি আমরা। সিএএ আমাদের ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করছে , যেটা কাম্য নয়। আমি জানি না এর পিছনে কী রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে আমি শুধু এটা জানি, যা আমার সন্তানের ভবিষ্যতকে নষ্ট করবে তা নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলব। জাহানের বাবা জানিয়েছেন, যদি সরকার সিএএ- এনআরসি না আনত তাহলে আমদেরও প্রতিবাদে সামিল হতে হত না আর আমাদের জাহানকেও আমরা হারাতাম না।
সৌজন্য:-মহানগর