ওয়েব ডেস্ক :- যেন T20-র সুপার ওভার চলছে। সকাল ছিল বিরোধীদের, দুপুর থেকে সন্ধ্যা শাসকের, আবার সন্ধ্যা থেকেই ঘুরতে শুরু করেছিল বিহারের ভোটচিত্র। কিন্তু রাতের দিকে আবার ব্যবধান বাড়াতে শুরু করল এনডিএ। এদিন সকাল থেকেই মহাজোটের এগিয়ে থাকা চিন্তায় ফেলেছিল বিজেপি, নীতীশ কুমারকে। কিন্তু বেলা গড়াতেই তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যায় NDA। একটা সময় ১৩৪ আসনে এগিয়ে যায় বিজেপি। মহাজোটের এগিয়ে থাকা আসনের সংখ্যা নেমে যায় ৯৮তে। ভোটের ফলের ট্রেন্ড দেখে অনেকেই বলতে শুরু করেন, মহাজোট লড়াই দিলেও বিহারের ক্ষমতায় থাকছে সেই এনডিএ’ই। তবে, সন্ধ্যার পরই আবার কামব্যাক করতে থাকেন তেজস্বীরা। বিজেপি-জেডি(ইউ) জোট এগিয়ে থাকে ১১৯ আসনে, কংগ্রেস-বাম আর তেজস্বীর নেতৃত্বাধীন আরজেডি জোট এগিয়ে ১১৬ আসনে আর অন্যান্যরা এগিয়ে ৮ আসনে। খেলা ঘুরে যেতে পারত যে কোনও সময়। কিন্তু রাতের দিকে আবার কিছুটা ব্যবধান বাড়িয়ে এনডিএ ১২৩ আসনে এগিয়ে, মহাজোট এগিয়ে ১১৩ আসনে আর অন্যান্যরা ৭ আসনে। যদিও হাওয়া বুঝেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে ফোন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়েছে দু’জনের। বিহারে এবার এনডিএ জোটে বড় দাদা বিজেপি। অনেক পিছিয়ে জেডিইউ।
এখনও পর্যন্ত বিহারে প্রকাশিত ফলাফল এবং গণনার গতিপ্রকৃতি অনুসারে সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিকে এগিয়ে আছে এনডিএ। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে ১২২ আসনে এগিয়ে অথবা জয়ী হয়েছে এনডিএ। অন্যদিকে ১১৪ আসনে এগিয়ে বা জয়ী হয়েছে মহাজোট। ৭ আসনে অন্যান্যরা জয়ী হয়েছে। যদিও এর মধ্যেই গণনা প্রক্রিয়া নিয়ে গুরুতর অভিযোগ তুললেন আরজেডি-র তেজস্বী যাদব।
এদিন রাতে এক ট্যুইট বার্তায় আরজেডির পক্ষ থেকে জানানো হয় কমপক্ষে ১০ আসনে গণনায় ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করা হচ্ছে। জিতে যাওয়া আসনে জয়ের সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছেনা। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে নীতিশ কুমার এবং সুশীল মোদী সমস্ত জেলাশাসক এবং রিটার্নিং অফিসারকে ফোন করে চাপ দিচ্ছেন।
এই ট্যুইটের কিছুক্ষণ পরেই ফের আরজেডির পক্ষ থেকে ১১৯ আসনের এক তালিকা ট্যুইট করা হয় এবং দাবী করা হয় এই ১১৯ আসনে গণনা শেষ হবার পর আরজেডি প্রার্থী জয়ী হয়েছে। রিটার্নিং অফিসার তাঁদের জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। কিন্তু সার্টিফিকেট দিচ্ছেন না। বলছেন আপনারা হেরে গেছেন। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটেও এই প্রার্থীদের জয়ী দেখানো হচ্ছে। গণতন্ত্রে এই লুট চলবে না
এর আগে এদিনই আরজেডি-র পক্ষ থেকে দলীয় প্রার্থী ও কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো একমাত্র জয়ের সার্টিফিকেট পাবার পরেই যেন তাঁরা গণনাকেন্দ্র ছাড়েন।
যদিও আরজেডি, কংগ্রেস ও বামেদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বহু কেন্দ্রে শেষ মুহূর্তে কাউন্টিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলাফল ঘোষণা হচ্ছে না। কাউন্টিং আরও পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। SP/DM-রা কাউন্টিং সেন্টারে ঢুকে হস্তক্ষেপ করছে বলেও বলে অভিযোগ বিরোধীদের। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিহারে সেই সমস্ত আসনে পুনর্গণনা করা হবে, যেখানে ভোটের ব্যবধান মোট বাতিল পোস্টাল ব্যালটের থেকে কম হবে।