ভারতীয় চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক আসরে তুলে ধরতে চলেছে ফিরেদেখা শটফ্লিম বা তথ্যচিত্র
নিউজ ডেস্ক :- ভারতীয় চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক আসরে তুলে ধরার ক্ষেত্রে সব চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বাঙালি চলচ্চিত্রকারেরা। সত্যজিত রায় ছাড়াও এ তালিকায় আছেন ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, তপন সিনহা, ঋতুপর্ণ ঘোষদের মতো কিংবদন্তিরা। বর্তমান যুগে কিংবদন্তির খাতায় আবার নতুন নাম উল্লেখিত করে রেখে যেতে চাইছে তিনি হচ্ছেন বাংলার নবীন পরিচালক মৃত্যুঞ্জয় সরদার। করোনাভাইরাস এর ফলে বিশ্বে মহামারী শুরু হয়ে গেছে করোনাভাইরাস এর চরিত্র কে অবলম্বন করে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও জীবনযাত্রার মান তুলে ধরতে আন্তর্জাতিক চ্যানেল থেকে প্রকাশিত হতে চলেছে ফিরে দেখা তথ্যচিত্র পরিচালনায় মৃত্যুঞ্জয় সরদার।গল্পের শুরুটা কে যেভাবে শুরু হয়েছে এই লেখার মধ্যে কিছুটা উল্লেখ করে দিতে চাই । করোনাভাইরাস আক্রমণের ফলে দুই হাজার কুড়ি সালে সমস্ত বিশ্বে স্তব্ধতা নেমে এসেছিল।করোনা ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে বিশ্ব জুড়ে লকডাউন শুরু হয়েছিল,লকডাউন এর ফলে শত শত মানুষ রুটি রোজকার হারিয়েছে কাজের সন্ধানে কি কাজ পাইনি এক গরিব বাড়ির সন্তান। কিছু তার বাবাই করোনায় আক্রান্ত খাওয়ারও পয়সা নেই দুঃখ-দুর্দশার মধ্যেও তিনি তার বাবাকে না বলে কলকাতায় পালিয়ে আসে গ্রাম থেকে । বাবার জন্য বাধ্য হয়ে আবার কলকাতায় ফিরতে হল। শুধু এখানেই শেষ নয় ছোটবেলার বান্ধবী সে পড়াশোনা করে ডক্টর হয়ে গেছে, অথচ গরিব বাড়ির ছেলে মেধাবী ছাত্র জয় তার চাকরি জোটেনি। লকডাউন এ বেহাল দশা আর করনা ভাইরাসে আক্রান্ত থেকে তার বাবাকে বাঁচায় সেই বান্ধবী বান্ধবীর প্রেমগুলো তথ্যচিত্র মধ্যে ফুটে ওঠে।বান্ধবীর ভাই নাম শুভম সে একজন সংগীতশিল্পী লকডাউনে কিভাবে ঘরে আটকে শিল্পীর জীবন চর্চা করছে এই গল্পে সে কথা ফুটে উঠেছে।সমাজের বুকে মাতাল রা এই লকডাউনে তাদের মাতলামি একটুও কমেনি ফিরে দেখা সেই চরিত্রের মধ্যে যেমন অভিনয় ফুটিয়ে তুলেছে এই গল্পটিতে। জয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন মৃত্যুঞ্জয় সরদার। জয় বান্ধবীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন কাজল, বান্ধবীর দাদার চরিত্রে অভিনয় করেছেন মেহেবুব। মাতালের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জয় সরদার ও জামাল, বাশিরুল হক। তবে লেখার মধ্যে সম্পূর্ণ কথা তুলে ধরা হয়নি সেগুলো আন্তর্জাতিক চ্যানেলে তে দেখার জন্ত অপেক্ষা করে থাকতে হবে দর্শকবৃন্দ দের। এই গল্পের দুই বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন চন্দ্রশেখর সরকার ও সমীর দাস। ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করেছে পিন্টু ও নান্টু। কাহিনী চিত্রনাট্য ও সংলাপ মৃত্যুঞ্জয় সরদার। পরিচালনায় মৃত্যুঞ্জয় সরদার এবং সহযোগী পরিচালক হিসাবে নন্দগোপাল ত্রিপাঠী। মুখ্য পরিচালকের ভূমিকায় ছিলেন দেবাংশু চক্রবর্তী। ফিরেদেখা নিবেদিত নিউজ সারাদিন ওয়েস্টবেঙ্গল নিউজ 24, মিডিয়া পার্টনার ছিলেন দেশে বিদেশে আন্তর্জাতিক পত্রিকা, লিপি, সকাল সকাল, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল। তবে
এই চলচ্চিত্র নির্মাতারা তাঁদের চলচ্চিত্রকর্ম দিয়ে সবার মন যেমন জয় করেছেন তেমনি দেশের বাইরের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করে ও পুরস্কার জিততে পারে । ভারতের জন্য বয়ে আনতে পারে বিপুল সম্মান। তাঁরা ভারতীয় চলচ্চিত্রের শিল্পমানকে এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেন যে বাংলা তথা ভারতীয় চলচ্চিত্রের ভাষাকে বিশ্ব সমীহের দৃষ্টিতে দেখা শুরু করে।শুধু তা-ই নয় ভারতীয় চলচ্চিত্রের সব চেয়ে আলোচিত ও জনপ্রিয় উত্তম-সুচিত্রা জুটি এসেছে বাংলা সিনেমা থেকেই। কলকাতার বাংলা সিনেমায় উত্তম কুমার মহানায়ক হিসেবে সর্বজন শ্রদ্ধেয়। একই ভাবে অভিনেত্রীদের মধ্যে সুচিত্রা সেনের স্থানও সবার উপরে। এই জুটির অসংখ্য হিট ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারানো সুর, সপ্তপদী, পথে হলো দেরি, চাওয়া পাওয়া, জীবনতৃষ্ণা, সাগরিকা প্রভৃতি।নতুন মুখে জুটি হতে চলেছে মৃত্যুঞ্জয় সরদার ও কাজল।যেন আন্তর্জাতিক স্তরে এদের মর্যাদা অনেকটা বিপুলভাবে পেতে চলেছে, সেই কারনে বাংলার উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম মৃত্যুঞ্জয় সরদার।সে দিক থেকে বাংলা ইতিহাসের ফিরে দেখার ইতিহাস এই লেখার মধ্যে উল্লেখ না করলে এই লেখাটা হয়ত আজকের দিনের প্রাধান্য পাবে না।তাই বলে যেতে চাই বাঙালির সিনেমা বা চলচ্চিত্র চর্চার ইতিহাস বহু পুরনো। ১০০ বছর অধিক হয়ে গেল বাংলা ছবি তার সূচনা কাল থেকে আজ পর্যন্ত বহু বিচিত্র ধরনের ঘটনার সাক্ষী। ভিন্ন ধরনের মানুষ যারা কেউ নায়কনায়িকা, কেউ পরিচালক, কেউ চরিত্রাভিনেতা, কেউ ক্যামেরাম্যান, কেউ সহযোগী, এবং সবশেষে যারা এইসব চলচ্চিত্রের সমঝদার অর্থাৎ দর্শক হিসেবে তাদের ভূমিকা পালন করে গেছেন। সবটা মিলিয়ে বাংলা ছবির বিগত শতাধিক বৎসরের ইতিহাস এর একটি ছোটখাটো বর্ণনা সহজেই করা যায় যদিও পুঙখানুপুঙখ ভাবে সবটা তুলে ধরা মোটেই সহজ কাজ নয়। তবে এটা অবশ্যই বলা যায় যে বাংলা ছবি যেমন এই মাধ্যমের কিছু শিক্ষিত মানুষের বদান্যতায় তার নিজের প্রদেশ তথা দেশের লোককে অভূতপূর্ব রসাস্বাদন করিয়েছে ঠিক তেমনি, কিছু গুনী ব্যাক্তির আগ্রহে অতীত এবং বর্তমান মিলিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্র দরবারেও তার জয়ধ্বজা উড়িয়েছে।
এর শিঁকড়ে যাবার জন্য ফিরে যেতে হবে ১০০ বছর আগে অর্থাৎ সেই সময়টা ছিল ব্রিটিশ আমল যখন বাংলায় চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করার সূচনা হয়। আমরা জানি শ্রী হীরালাল সেনের হাত ধরে বাংলায় চলচ্চিত্রের প্রবেশ ঘটে। ম্যাডান থিয়েটার, এম পি, অরোরা, মুভিটোন এবং নিউ থিয়েটার্সের ভূমিকা এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য কারন তাঁরাই প্রথম চলচ্চিত্র কে ধারন করবার জন্য স্টুডিওর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে যা বাংলার চলচ্চিত্র শিল্পে বিপ্লবের সূচনা করে। বাংলা চলচ্চিত্র তার সূচনার দিনগুলোতে বেশ কিছু প্রতিকূলতার সম্মুখীন হলেও পৃষ্ঠপোষক হিসাবে পেয়েছিল স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে যিনি নিজে ছবি পরিচালনার পাশাপাশি একাধিক প্রেক্ষাগৃহের নামকরন করেছিলেন। তা ছাড়া তাঁর কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত অথবা তাঁর রচিত সুমধুর সঙ্গীত ব্যবহারকারী ছবির সংখ্যা বিগত একশ বছরে কিছু কম নয়।পরবর্তীতে বাংলার চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রক্ষাকারী হিসাবে প্রমথেশ চন্দ্র বড়ুয়া, কানন দেবী, উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, নচিকেতা ঘোষ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, তপন সিংহ, সত্যজিৎ রায়, তরুন মজুমদার, অঞ্জন চৌধুরী, স্বপন সাহা, রঞ্জিত মল্লিক, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং সবশেষে বলা যায় ঋতুপর্ন ঘোষ ও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এর নাম। এদের নাম এই কারণে করা হলো যে বাঙালীর এই বিগত শত বছরের চলচ্চিত্রযাপনে এঁরা একটা নির্দিষ্ট সময় জুড়ে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছেন বা নিজেরা ব্যাক্তি হয়েও প্রায় এক একটা প্রতিষ্ঠানে নিজেদের রূপান্তরিত করেছেন।যারা বাঙালি বুদ্ধিজীবী তাদের মধ্যে যারা চলচ্চিত্রপ্রেমী এই পুরো শত অব্দের মধ্যে ৫০, ৬০ এবং ৭০ এই তিনটে দশককে বাংলা ছবির স্বর্ণযুগ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তার কারণ হলো এই সময়টাতেই বাংলায় অসাধারণ কিছু চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে যা দেখতে সহজ বুঝতে সহজ কিন্তু যার ভাবনা অতি গভীর কারন বিশিষ্ট সাহিত্যিকদের লেখনী অবলম্বনে ছবিগুলি নির্মিত হয়েছিল। অসামান্য অভিনেতা অভিনেত্রীরা এতে রূপদান করেছিলেন এবং এই সময়টাতে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষিত পরিচালক বাংলা ছবিতে কাজ করেছেন। ভাল মূলচরিত্র বা নায়ক নায়িকার পাশাপাশি নিজেদের দাপটের নজির রেখে গেছেন অসাধারণ কিছু চরিত্রাভিনেতাও। এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন কমেডি বা হাস্যরস সৃষ্টিতে বিশেষ পারদর্শী ফলে তাঁদের যোগদান পুরো স্বর্ণযুগটাকেই আলাদা মাত্রা দিয়েছিল। এসেছিলেন প্রতিভাসম্পন্ন গীতিকার সুরকার ও নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পীরা। ফলে সব মিলিয়ে সিনেমা দেখার চরম সুখানুভূতি পেয়েছিল বাঙালী।