শিক্ষক দিবস পালন নাগরিক কণ্ঠ ও student’s হেলথ হোমের
তুষার কান্তি খাঁ, বহরমপুর, 5 ই সেপ্টেম্বর———— একাদশ শতাব্দীতে ও দ্বাদশ শতাব্দীর প্রথমে অক্সফোর্ডে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা মধ্য ও পশ্চিম ইউরোপ থেকে ক্রমশ সমস্ত বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। আধুনিক পৃথিবীতে বিংশ শতাব্দীতে নতুন করে’শিক্ষক দিবস’পালনের ইচ্ছা জাগে।
আর্জেন্টিনায় এক প্রিয় শিক্ষক Domingo Fanstino Sarmiento -র মৃত্যু হয় ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের ১১ই সেপ্টেম্বর। সেই থেকে আর্জেন্টিনায় প্রতিবছর ১১ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস পালন করা হয়। বস্তুত বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন দিনে শিক্ষক দিবস পালন করে। মূলত সেই স্থানের কোন প্রিয় শিক্ষকের জন্ম বা মৃত্যু দিন অথবা শিক্ষা বিস্তারের কোন এক বিশেষ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক দিবস পালন করা হয়। যেমন মালয়েশিয়া তে প্রতিবছর ১৯৯৫৮সালের ১৬মে শিক্ষক দিবস পালিত হয়। তাইওয়ান, চীন, হংকং -এ কনফুসিয়াসের জন্মদিন ২৮ শে সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন করা হয়।
ভারতবর্ষে ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দের ৫সেপ্টেম্বর প্রথম শিক্ষক দিবস পালন করা হয়। সেই থেকে প্রতিবছর ৫ সেপ্টেম্বর দিনটি শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। আমাদের দেশের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি, শিক্ষক, দার্শনিক রাষ্ট্রনেতা ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের জন্ম ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দের৫ ই সেপ্টেম্বর। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে ডঃ রাধাকৃষ্ণন’ ভারতরত্ন’উপাধিতে ভূষিত হন। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দের ৫ই সেপ্টেম্বর তাঁর অসংখ্য ছাত্র ও অনুরাগী মিলে তাঁর জন্মদিন পালনের আয়োজন করে তাঁকে আমন্ত্রণ জানায়। সেই অনুষ্ঠানে ডঃ রাধাকৃষ্ণন বক্তৃতায় জানান, আলাদাভাবে তাঁর জন্মদিন পালন না করে যদি শিক্ষক দিবসরূপে পালন করা হয় তবে তিনি আনন্দ লাভ করবেন। তাঁর ইচ্ছাকে রাষ্ট্র মর্যাদা দিলে ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দের ৫ ই সেপ্টেম্বর দেশের সর্বত্র শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন করা হয়।
১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে র ৫ অক্টোবর ফ্রান্সের প্যারিসে ইউনেস্কো ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন) শিক্ষকদের মর্যাদা নিয়ে আলোচনা শুরু করে। পরে ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দের ৫ অক্টোবর থেকে প্রায় টি দেশে ‘শিক্ষক দিবস’পালন শুরু হয়। তাই ৫ ই অক্টোবর কে আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
শিক্ষক দিবসে ছাত্র-ছাত্রীরা তাঁদের প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও আশীর্বাদ এর মাধ্যমে শাশ্বত শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্ক ব্যক্ত হয়।
শিক্ষক দিবসে ‘নাগরিক কণ্ঠ’পরিবারের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বহরমপুর student’s হেলথ হোমেরদ্বিতল ভবনে। উদ্বোধনী সংগীত এর মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন’ঋত্বিক নাট্যগোষ্ঠী’। এরপর সম্মানী য় অতিথি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ কে বরণ করে নেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে সেরা সেরা বর্ষসেরা পুরস্কার প্রদান করা হয় শহরের জে.এন. একাডেমির প্রাক্তন শিক্ষক সোমনাথ চক্রবর্তী মহাশয় কে।মহান যুগপুরুষ’ পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে স্মরণে রেখে’নির্ভীক নাগরিক কন্ঠের’রঙিন উৎসব সংখ্যা ও পাক্ষিক সংখ্যা প্রকাশ করেন তপ নিষ্ঠানন্দ ও দীনবন্ধু সাহা মহাশয়।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পত্রিকা গোষ্ঠীর মূল কর্ণধার ছবি রঞ্জন মজুমদার,সুজিত ভট্টাচার্য সহ পত্রিকা পরিবারের অনেক সদস্য ও বহু গুণীজন। সৌপর্ণ চ্যাটার্জির দেশাত্মবোধক গিটার অনুষ্ঠানকে অন্য মাত্রা এনে দিয়েছিল।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে ছবি রঞ্জনবাবু বলেন,”অজ্ঞান তার অন্ধকার থেকে জ্ঞানের আলোক বর্তিকা যত পৃথিবীকে আলোকিত করবে, ততো শিক্ষক দিবসের মর্যাদা মানব সমাজে ছড়িয়ে পড়বে।
শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বহরমপুর student’s হেলথ হোম আরো একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হেলথ হোম এর তৃতীয় তল প্রভাত রায় চৌধুরী স্মৃতি মঞ্চ এ। অনুষ্ঠানে বিবিসি কর্তৃক ঘোষিত বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ প্রধান শিক্ষক বাবর আলীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সাথে ঘুমের স্বেচ্ছাসেবক ছাত্রদের ‘দীলিপ ভট্টাচার্য’স্মৃতির স্কলারশীপ প্রদান করেন তাঁর সুযোগ্য পুত্র শৈবাল ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিউটি চন্দ্র, সুজাতা চক্রবর্তী, ও আহবায়ক নীলাঞ্জন পান্ডে।