EMI তে সুদের উপর সুদ দিতে হবে না সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা কেন্দ্র সরকারের

Spread the love

ওয়েব ডেস্ক :- এবার কেন্দ্রীয় সরকারের আবেদন লকডাউনে কিস্তির   সুদের  উপর আর সুদ দিতে হবে না।    EMI তে সুদের উপর সুদ দিতে হবে না। কতটা লাভবান হচ্ছেন গ্রাহক? করোনা ও লকডাউনে বিপর্যন্ত সাধারণ মানুষ। চাকরি চলে গিয়েছে বহু মানুষের। ধুঁকছে শিল্প সংস্থাগুলিও। ফলে ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা হারিয়েছেন লাখো মানুষ। এই পরিস্থিতিতে ঋণ গ্রাহকদের জন্য স্বস্তির খবর জানাল কেন্দ্র। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে কেন্দ্রিয় সরকার জানিয়েছে, ঋণ গ্রাহকদের মোরাটোরিয়ামের মেয়াদের জন্য বকেয়া সুদের উপর আর সুদ দিতে হবে না।

 

EMI তে সুদের উপর সুদ দিতে হবে না। কতটা লাভবান হচ্ছেন গ্রাহক? যারা বিভিন্ন কারনে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছেন এবং যে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ২ কোটি টাকা তাঁদের দিতে হবে না সুদের ওপর সুদ। ব্যাঙ্ক এবং গ্রাহক উভয়পক্ষ কে বাঁচাতে সরকার ওই বাড়তি সুদ বাবদ খরচ বহন করবে। কিন্তু অনেকেই জানতে চাইছেন এই সুদের ওপর সুদ বিষয় টি কি? বা তাতে কতটা সুবিধা পাবেন গ্রাহক?

ধরা যাক কোন গ্রাহক বাড়ি কেনার খাতে ঋন নিয়েছেন ৪০ লক্ষ টাকা। আর এই ৪০ লক্ষ টাকা ঋণের জন্যে তাকে মাসে ৩০ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হচ্ছে এখন। এই ৩০ হাজার টাকার মধ্যে সুদ বাবদ দিতে হচ্ছে ১৭ হাজার আর মূল ঋণ অর্থাৎ প্রিন্সিপ্যাল অ্যামাউন্ট শোধ হচ্ছে ১৩ হাজার টাকা।

এদিকে গ্রাহক করোনা পরিস্থিতিতে ইএমআই দিতে পারেননি ৬ মাস(মার্চ ২০২০-আগস্ট ২০২০) অর্থাৎ তার প্রদেয় সুদের অর্থ জমে গেল ১৭ হাজার X ৬ = ১ লক্ষ ২ হাজার টাকা। ব্যাঙ্ক চক্রবৃদ্ধি হারে এই সুদের অপর সুদ চাপাচ্ছিল। আজ সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র হলফনামা দিয়ে জানিয়ে দিল সুদের ওপর চাপানো সুদের অংশ টি পরিষোধ করবে কেন্দ্র।

করোনা আবহের শুরুতে ঋণ গ্রাহকদের স্বস্তি দেওয়ার জন্য ছ’মাসের মোরাটোরিয়াম ঘোষণা করেছিল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI)। যা শেষ হয়েছে ৩১শে অগাস্ট। সাধারন মানুষের জন্যে ইএমআই তে স্থগিতাদেশ দিলেও পরে দেখা যায় আসলে জনগনের থেকে অনেক বেশী লাভবান হচ্ছে ব্যাঙ্ক। কার্যত শোষনের মুখে পড়ছেন সাধারন মানুষ। করোনা পরিস্থিতিতে রোজগার কমে যাওয়ায় যারা ইএমআই দিতে পারছেন না এখন তাদের পরে গুনতে হবে অনেক বেশি টাকা। কারন স্থগিত ইএমআই এর উপর ব্যাঙ্কগুলি অতিরিক্ত সুদ নেবে। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয় বিষয়টি নিয়ে।

পিটিশনার দের পক্ষে আইনজীবী রাজীব দত্ত ২ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে সুপ্রিম কোর্ট কে বলেন, সুদের ওপর সুদ নেওয়া একেবারেই উচিত নয় ব্যাঙ্কগুলির। তাঁরা এই অতিরিক্ত সুদ নিতে পারেনা।” গতকাল যে কথা আইনজীবী রাজীব দত্ত বলেন সেই প্রসঙ্গে অনেক আগেই সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য করেছিল। সুপ্রিম কোর্ট আগেই জানিয়েছিল “সুদের ওপর সুদ বসানো উচিত নয়”। গত ৪ই জুন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুপ্রিম কোর্ট কে জানায় “EMI স্থগিত থাকার কারনে ঋণ দাতাদের প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।”

এদিকে ৩১শে অগাস্ট ইএমআই এর অপর থাকা স্থগিতাদেশের মেয়ার শেষ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইএমআই দাতা জনগন কে স্বস্তি দিতে সুপ্রিম কোর্টে বড় সিদ্ধান্তের কথা জানায় কেন্দ্র। কদিন আগে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা কেন্দ্রিয় সরকারের সিদ্ধন্তের কথা জানান। তিনি বলেন, “ঋণ শোধ করার মোরেটোরিয়াম বা ইএমআই আগামী দু’‌বছরের জন্য স্থগিত রাখা যেতে পারে। মহামারী পরিস্থিতিতে কোন কোন সেক্টর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে বিষয়টা সরকার খতিয়ে দেখছে।”

মহামান্য বিচারপতি অশোক ভূষন, আর সুভাষ রেড্ডি এবং এমআর শাহ এই তিনজনের বেঞ্চে শুনানি চলছে। সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে আপাতত ব্যাংকগুলি কোনও ব্যক্তি বা কোম্পানির অ্যাকাউন্টকে নন-পারফর্মিং অ্যাসেট হিসেবে ঘোষণা করতে পারবে না। অর্থাৎ কেউ EMI দিতে না পারলে তাকে ঋণ খেলাপির তকমা দেওয়া যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে আগামি ২ মাস এই নির্দেশ বহাল থাকবে। শুনানি হবে অক্টোবর মাসের পাঁচ তারিখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.