কৃষি বিল বাতিলের দাবীতে অনড় কৃষকরা , চার দফা আলোচনাতেই মিলল না সমাধান
নিউজ ডেস্ক :- কৃষি বিল বাতিলের দাবীতে অনড় কৃষকরা , চার দফা আলোচনাতেই মিলল না সমাধান বৈঠকের আগে ‘শান্তিপূর্ণ আলোচনা’, ‘খোলামনে আলোচনা’র মতো একাধিক আশ্বাস বাক্য শোনা গেলেও আখেরে সমাধান এদিনও হল না। তবে, কেন্দ্র দু’টি সংশোধনীতে রাজি হয়ে কিছুটা নমনীয়তা দেখিয়েছে।
চার দফায় আলোচনার পর কেন্দ্রের মোদী সরকার কিছুটা নমনীয় মনোভাব প্রকাশ করলেও কৃষকরা আর তাতে ভুলছেন না। কৃষি সংক্রান্ত সবক’টি নয়া আইন বাতিলের দাবিতে কৃষক সংগঠনের নেতারা অনড় রয়েছেন। কৃষকদের লাগাতার আন্দোলনের জেরে এদিন পিছিয়ে আসে কেন্দ্র। ফার্মার্স প্রোডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স আইনের ৬ এবং ১৫নম্বর ধারা সংশোধনে রাজি হয় সরকার। কিন্তু, এদিনের বৈঠকে কৃষক নেতার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, নয়া কৃষি আইনগুলি সরকারকে প্রত্যাহার করতেই
কেন্দ্রের সঙ্গে কৃষক নেতাদের বৈঠক
শনিবার বেলা আড়াইটে নাগাদ কৃষকদের সঙ্গে দিল্লির বিজ্ঞানভবনে পঞ্চম দফার আলোচনায় বসেছিলেন কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর এবং রেল, বাণিজ্য ও খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়ল। কৃষকদের কাছে কেন্দ্রের প্রস্তাব লিখিত ভাবে দেওয়া হয়। সরকারের তরফে ওই লিখিত কাগজ পাওয়ার পর ১৫ মিনিটের বিরতি নেওয়া হয়েছিল। ওই সময়ই একটি কর সেবা গাড়ি কৃষকদের জন্য খাবার নিয়ে যায়। পরে কৃষকরা পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা আর কোনও আলোচনা চাইছেন না। এ বার সমাধান চান। সরকার তাঁদের দাবি নিয়ে কী স্থির করেছে, তা জানাতে হবে।
বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের ৪০ জন প্রতিনিধি শনিবার বারবেলার এই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। সরকারের তরফে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর শুরুতেই বলেন, ‘আমরা আন্তরিক আলোচনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নতুন কৃষি আইন সম্পর্কিত সমস্ত ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সরকার স্বাগত জানাবে।’
পরে বাণিজ্য মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী, পঞ্জাবের সাংসদ সোম প্রকাশ তাঁর রাজ্যের কৃষক নেতাদের উদ্দেশ বলেন, ‘সরকার পঞ্জাবের আবেগ বোঝে। আমরা এই সংক্রান্ত সকল বিষয়ে খোলামনে আলোচনা করতে রাজি আছি।’ আগের দিনের মতোই এদিন কেন্দ্রের তরফে আলোচনায় নেতৃত্ব দেন কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর। তিনি বলেন, ‘আমরা কৃষক নেতাদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনা চাইছি। কৃষকদের আবেগকে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।’
এদিন বৈঠকের পরেও আন্দোলনকারী কৃষকরা ভারত বন্ধের কর্মসূচি থেকে সরছেন না। ৮ ডিসেম্বর ভারত বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। অন্য রাজ্যগুলির সঙ্গে বাংলাতেও এই বন্ধের প্রভাব পড়তে পারে। তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কৃষকদের বন্ধের প্রতি দলের নৈতিক সমর্থন রয়েছে। তবে আমরা বন্ধ করছি না।’ সুদীপের বক্তব্য, এই কৃষি বিল প্রত্যাহার করা হোক। বিলটিকে স্ট্যান্টিং বা সিলেক্ট কমিটিতেও পাঠানোর কথা বলেন তিনি।
কৃষিক্ষেত্রে বড় সংস্কার হিসেবে উল্লেখে করে গত সেপ্টেম্বের তিনটি নতুন কৃষি বিল আনে সরকার। ‘মিডলম্যান’ তুলে দিয়ে বলা হয়, দেশের সর্বত্র কৃষকরা তাঁদের উত্পাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। আন্দোলনকারী কৃষকদের বক্তব্য, নয়া আইনে কৃষকদের সুরক্ষার দিকটি নিশ্চিত করা হয়নি। উত্পাদিত পণ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ও মান্ডি ব্যবস্থা তুলে দিয়ে সবটাই বড় কর্পোরেটদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। যার জেরে এই আইন পাস হওয়ার পর থেকেই কৃষক বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে। পঞ্জাব, হরিয়ানা সহ একাধিক রাজ্যের কৃষকরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শনিবার ১০ দিনে পা রাখে এই আন্দোলন। কৃষক বিক্ষোভের জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে রাজধানী শহর। জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রেও ব্যাঘাত
সৌজন্য :- এই সময় পত্রিকা