নিউজ ডেস্ক :- নজির বিহীণ ভাবে বিহার বিধানসভায় ক্যাবিনেটে একজনও মুসলিম সদস্য নাই। ফের বিতর্কে নীতীশ কুমারের মন্ত্রিসভা! বিহার ক্যাবিনেটের ১৪ জন সদস্য শপথ নিয়েছেন। অথচ তাঁদের মধ্যে একজনও মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত নন। যা ১৬ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্যা অধ্যুষিত বিহারের রাজনৈতিক ইতিহাসে একেবারে নজিরবিহীন।
বিতর্ক থামাতে জেডিইউ-র তরফে দাবি করা হয়েছে, সম্প্রসারণের সময় মুসলিম প্রতিনিধিকে বিহার মন্ত্রিসভার সদস্য করা হবে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, এবার বিহারে এনডিএ-র কোনও মুসলিম বিধায়কই নেই।
সদ্য সমাপ্ত বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ১২৫টি আসন নিয়ে পাটনার মসনদ দখল করেছে এনডিএ । সোমবার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার-সহ মোট ১৪ জন মন্ত্রী শপথও নিয়েছেন। যাঁদের মধ্যে দুই উপমুখ্যমন্ত্রী-সহ মোট সাতজন বিজেপির বিধায়ক। মুখ্যমন্ত্রী-সহ পাঁচজন জেডিইউ বিধায়ক ও বাকি দুজন হাম ও ভিআইপি-র সদস্য। গুরুত্বের নিরিখে দেখতে গেলে অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরই রয়েছে বিজেপির হাতে। তবে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের দায়িত্ব নিজের হাতে রেখেছেন নীতীশ কুমার।
রাজনৈতিক মহলের অভিযোগ, বিজেপির অঙ্গুলিহেলনেই চলবেন নীতীশ কুমার ও তাঁর মন্ত্রিসভা। ক্যাবিনেট গঠনেই তার ছাপ পাওয়া গেল বলেই মনে করছেন তাঁরা। উল্লেখ্য, গতবার নীতীশ কুমারের মন্ত্রিসভার একমাত্র মুসলিম প্রতিনিধি ছিলেন খুরশিদ আলম। এবারের মন্ত্রিসভায় দলিত, যাদব, ভূমিহারা, ব্রাহ্মণ, রাজপুত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। নেই কেবল মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত কোনও মন্ত্রী। যা নিয়ে ইতিমধ্যে বিতর্ক মাথাচারা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি, হাম অথবা ভিআইপির তরফে কোনও মুসলিম প্রার্থী ভোটে লড়াই করেননি। একমাত্র নীতীশের দলের ১১ জন প্রার্থী ভোটে লড়েছেন। তবে তাঁদের মধ্যে কেউই নির্বাচনে জিততে পারেননি। গতবারের মন্ত্রী খুশিদ আলমও হেরে গিয়েছেন। উলটো দিকে মহাজোটের তরফে বহু মুসলিম বিধায়ক রয়েছেন। নথি বলছে, আরজেডির ৭৫ বিধায়কের মধ্যে আটজন, কংগ্রেসের ১৯ জনের মধ্যে চারজন, বামেদের ১৬ জনের মধ্যে একজন, এআইএমআইএমের পাঁচজনই এবং বিএসপির একজন মুসলিম বিধায়ক রয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই পরিসংখ্যানই এনডিএ সরকারের মুসলিম প্রীতি ছবি তুলে ধরছে বলে কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা।
এই নিন্দায় অবশ্য কান দিতে নারাজ জেডিইউ বিধায়করা। তাঁদের হাতিয়ার বিধানসভার উচ্চকক্ষ তথা বিধান পরিষদের পরিসংখ্যান। সেখানে নীতীশের দলের একাধিক মুসলিম প্রতিনিধি রয়েছে। এই প্রসঙ্গে জেডিইউয়ের এক এমএলসি কোমার আলম বলেন, “নীতীশ কুমারে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের সময় একজন মুসলিম প্রতিনিধিকে নিয়োগ করা হবে। এবার আমাদের দলের তরফে ১১ জন মুসলিম প্রতিনিধিকে দাঁড় করানো হয়েছিল, কিন্তু তাঁরা কেউই জিততে পারেননি। তা বলে নীতীশ কুমারের মন্ত্রিসভায় মুসলিম সদস্য থাকবেন না, তা হতে পারে না। গত ১৫ বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।” কিন্তু এনডিএ জোটে সর্বাধিক আসনের দখলদার বিজেপি নীতীশ কুমারকে কি সেই অনুমতি দেবে? এটাই এখন দেখার।
সৌজন্য :- সংবাদ প্রতিদিন