দীপাবলীতে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে মাটির প্রদীপের আলো-
মোমিন আলি লস্কর ও তপন কুমার দাস দক্ষিণ 24পরগনার:-
অয়ন বাংলা নিউজ:- কদর কমেছে কালীপজোয় মাটির প্রদীপের, তবুও আশাবাদী জেলার মৃৎশিল্পীরা এমনি চিত্র দেখতে পাওয়া গেল বিভিন্ন মৃৎশিল্পীর কারখানায়। সারাদেশে সহ আপাময় বাঙালির আলোর রোশনাইয়ের উৎসব দীপাবলি উৎসব তথা কালীপূজার আনন্দে ঝলমলিয়ে উঠবে। অমাবস্যায় অন্ধকারকে দূরে সরিয়ে আলোক জ্বেলে ঝকঝকে করতে মা কালী মর্তে আর্বির্ভূতা হবেন। কিন্তু যাঁদের মাটির প্রদীপের ঝলমল করে উৎসবের আঙ্গিনা ,সেই মৃৎশিল্পীদের ঘরেই এখন অন্ধকার।
কারণ, বাজারে চিনা বাল্ব ও নানান বাহারি আলোর টুনি বাল্বের জেরে বর্তমানে কালীপুজোয় মাটির প্রদীপের কদর কমে গেছে। আর তার জন্য সৌজন্যতা রাখতে বৈদ্যুতিক মোমবাতি, টুনি লাইট প্রভৃতি এসেছে বাজারে।আগে কালীপুজো এলেই ঘর আলো করতে মাটির প্রদীপের চাহিদাই থাকত বেশি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে গৃহস্থরা ঝুঁকেছেন তুলনায় সস্তা এবং বাহারি বৈদ্যুতিক আলোর দিকে। এই পরিস্থিতিতে কালীপুজোর মুখে দুঃশ্চিন্তার মুখে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার কুমোররা। মাটির প্রদীপের কদর কমতে থাকায় এই কাজ ছেড়ে অনেকেই এখন অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছেন।আলোর উৎসব তথা দীপাবলীতে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে মাটির প্রদীপের আলো। তবে প্রদীপের চাহিদা কমলেও হাল ছাড়েননি জেলার অনেক মৃৎশিল্পীরা। সারা রাজ্য জুড়েই মৃৎশিল্পীরা পুজোর নানা উপকরণের সঙ্গে মাটির তৈরি প্রদীপ তৈরি করে আসছেন বংশ পরম্পরায়। কিন্তু বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক বৈদ্যুতিক বাতি বাজারে চলে আসায় প্রাচীন সেই মাটির প্রদীপ হারিয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু বাজারে সেই প্রদীপের কম চাহিদা থাকায় প্রায় বন্ধের মুখে এই শিল্প।জেলার বিভিন্ন গ্রামের বহু কুমোর পরিবার আগে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিল এখন সেটা কমে দাঁড়িয়েছে। মৃৎশিল্পীরা দীপাবলিকে সামনে রেখে ব্যস্ত নানা ধরনের প্রদীপ তৈরি করতে। তবে বেশ কিছু মৃৎশিল্পীর গলায় আক্ষেপের সুর। তাঁরা বলেন, “আজকালকার ডিজিটাল যুগে যে হারে চায়না লাইট, টুনি বাল্ব ও নানা ধরনে এলইডি লাইট এসেছে সেই তুলনায় হাতে গড়া মাটির প্রদীপের বিক্রয় কমেছে, কমেছে তার কদর”।লাভ কম হলেও কুমোরদের আশা এই বছর তাঁরা লাভের মুখ দেখবেন।
তাঁরা আরও বলেন, বর্তমানে মাটি ও খড়ির দামও বেড়েছে। কিন্তু প্রদীপের দাম বাড়ছে না। যাতে কোনও রকম খাওয়া খরচটা ওঠে। যদিও এখনো আগামী দিনে মাটির প্রদীপের চাহিদা ক্রমশ বাড়বে বলে আশাবাদী দক্ষিণ ২৪পরগনার জেলার মৃৎশিল্পীরা।ইলেক্টিক এর প্রদীপের আলো জ্বলুক বা না জলুক কালী পুজোতে মাটির প্রদীপে জ্বালাতেই হবে তাই ঘর সাজাতে মাটির প্রদীপ এখন অতীত হলেও পূজা মন্ডপে পুজোতেই কিন্তু মাটির প্রদীপ লাগবেই তাই চায়না লাইটের সাথে প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়েও বেঁচে আছে কুমোর পাড়ার প্রদীপ তৈরি কারিগরেরা। অতীতে কালীপুজোর দিন মাটির প্রদীপের প্রচুর চাহিদা ছিল। কিন্তু ২০১০ সালের পর থেকে সেই চাহিদা অনেকটাই কমে গিয়েছে। মূলত, চাইনা ও এলইডি’র আলোর কারণে এই মাটির প্রদীপের চাহিদা কমেছে। এক্ষেত্রে গত তিন বছর আবারো নতুন করে মাটির প্রদীপে চাহিদা বেড়েছে। তবে এখন কুমোর পাড়ার সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়। দুর্যোগের কারণে মাটির প্রদীপের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন কুমোর পাড়ার মৃৎশিল্পরা। নামখানা, ডায়মন্ড হারবার, রায়দীঘি ,কাকদ্বীপ সহ বিভিন্ন জায়গাতে এই মাটির প্রদীপ তৈরি করতে কুমোর পাড়াতে দেখা গেল। কুমোরেরা দিনরাত এক করে মাটির প্রদীপ তৈরি করল বিক্রয়ের আশায়