রেলমন্ত্রী বলল ট্রেন চালানোয় লোকসান হয়েছে লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর হিষাব নেই ,জনমানসে প্রশ্ন কেন্দ্রের সদিচ্ছা নিয়ে
ওয়েব ডেস্ক :- গোটা দেশ যখন লকডাউনে ,পরিযায়ী শ্রমিকদের চুড়ান্ত দুরাবস্থা .সেই সময় গোটা দেশে আওয়াজ উঠেছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের বাঁচানো ।আর আজ কেন্দ্র সরকার বলছে ট্রেন চালানোয় লোকসান হয়েছে। স্বভাবতই সাধারণ মানুষের প্রশ্ন কেন্দ্রের সদিচ্ছা নিয়ে। সেই মার্চ মাসে লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই তাঁদের দুর্দশা শুরু। করোনা পরিস্থিতিতে ‘পরিযায়ী শ্রমিক’দের নিদারুণ জীবনই হয়ে উঠেছিল মূল আলোচনার বিষয়। লকডাউনের ফলে তাঁদের বাড়ি ফিরতে না পারা, খাদ্য সংকট, বাড়ি ফিরতে হাজার-হাজার কিলোমিটার হাঁটা, খিদের জ্বালায় মৃত্যু এই সবই যেন ইতিহাস হয়ে গিয়েছে! এবার রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল লোকসভায় দাবি করলেন, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া অগণিত পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে গিয়ে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ভারতীয় রেল। তাঁর দাবি, মে থেকে অগস্ট পর্যন্ত শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের যাত্রী ভাড়া বাবদ ভারতীয় রেলের আয় হয়েছে ৪৩৩ কোটি টাকা। তারপরেও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে রেল মন্ত্রক। তবে, পরিযায়ীদের জন্যে রেলের ক্ষতির পরিমাণ কত, তা তিনি জানাননি। তৃণমূল কংগ্রেসের দুই সাংসদ মালা রায় ও প্রসূন বন্দ্যেপাধ্যায় এ নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন সংসদে। সেই প্রশ্নের জবাবেই এই তথ্য দিয়েছেন রেলমন্ত্রী।
যদিও রেল মন্ত্রীর এই দাবির পরেই প্রশ্ন উঠছে, গোটা দেশ যখন করোনার সঙ্গে লড়ছে, সেই সময়ে বিভিন্ন রাজ্যে আটকে থাকা অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে গিয়ে যে খরচ হয়েছে সরকারের, তাকেও ‘ক্ষতি’ হিসেবে দেখছেন খোদ রেলমন্ত্রী? এরপরই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। কেন্দ্রের সহমর্মিতার অভাব বলেও বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তাঁরা।
যদিও রেলমন্ত্রীই প্রথম নন, লকডাউনের সময় কতজন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে শ্রম মন্ত্রকের কাছে কোনও তথ্যই নেই বলে সোমবার সংসদে জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ কুমার গাঙ্গওয়াড়। আর মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাজ্যমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি দাবি করেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের এভাবে উদভ্রান্তের মতো বাড়ি ফিরতে চাওয়ার কারণ ফেক নিউজ! এদিন সেই তালিকায় যোগ দিয়ে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বললেন, পরিযায়ীদের জন্যে ট্রেন চালিয়ে ক্ষতি হয়েছে রেলের।
উল্লেখ্য, গত সোমবার থেকে ১৮ দিনের জন্য শুরু হয়েছে সংসদের বাদল অধিবেশন। করোনা মহামারীর মধ্যে করোনা সংক্রান্ত সমস্ত বিধিনিষেধ মেনেই প্রতিদিন সকাল ৯ টায় সংসদে অধিবেশন শুরু হচ্ছে। সোমবার দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে ভাষণ দেন একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সেখানেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ কুমার গাঙ্গওয়াড় বলেন, লকডাউনের মাঝে কতজন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে শ্রম মন্ত্রকের কাছে কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্যই নেই।অপর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি ‘হাতিয়ার’ করেন ফেক নিউজকে। এবার রেলের ‘ক্ষতি’ও যোগ হয়েছিল সেই তালিকায়।