তাজমত সেখ ,কোলকাতা:- মাদ্রাসার বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের অনশনের দশম দিবস। তারা অনশন বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন, বিকাশ ভবনের কাছে। মহামান্য হাইকোর্ট এর অনুমতি সাপেক্ষে টানা ১৪ দিনের অনশন কর্মসূচি।
কিন্তু মঞ্চে সকল স্তরের বুদ্ধিজীবী রাজনীতিবিদ উপস্থিত হলেও মঞ্চে অদ্যাবধি উপস্থিত হন নি, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারি। শুধু তাই নয়, চাকরিপ্রার্থীরা পাঁচ বছর ধরে কমিশনে ডেপুটেশন জমা করতে গেলেও কমিশনের চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারির দেখা মেলে না।
তাই আজকে অনশনকারী চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ হাজরা মোড়ে উপস্থিত হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে সরাসরি ডেপুটেশন জমা করতে। কিন্তু সেখানে ডিউটি রত পুলিশ তাদের আটকায়। ফলত চাকরিপ্রার্থীরা শ্লোগান দিতে শুরু করে, ধর্নায় বসে যায়। প্রাথমিকভাবে ধস্তাধস্তি হলেও উর্ধতন কর্মকর্তা এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। এবং চাকরিপ্রার্থীদের প্রতি সহানুভূতি পূর্ণ ব্যবহার করে, চাকরিপ্রার্থীদের থেকে নিজে ডেপুটেশন জমা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সেইসাথে আগামী সোমবার চাকরিপ্রার্থীদের পুনরায় ডাকা হবে, বলে জানান।
মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন ৩১৮৩ টি পদে শিক্ষকশিক্ষিকা নিয়োগ করব বলে ২০১৩ সালে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। সেই সঙ্গে গেজেট প্রকাশিত হয়। গেজেটে উল্লেখ ছিল, ৩১৮৩ টি পদের সহিত লিখিত পরীক্ষার রেজাল্টের আগের দিন পর্যন্ত ভ্যাকান্সি আপডেট হয়ে নিয়োগ করা হবে। চাকরিপ্রার্থীদের মেরিট অনুযায়ী কমিশনের ওয়েবসাইট ও ডি আই অফিস গুলিতে প্যানেল প্রকাশিত হবে। বি.এড প্রশিক্ষণদের আগে নিয়োগ করা হবে। ২০১০ রুলস অনুযায়ী একাডেমিক ইভালুয়েশন দেওয়া হবে। কিন্তু মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন এর কোনোটিই করেন নি।
২০১৮ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এবং মাত্র ১৫০০ টি শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ করা হয়। ভ্যাকান্সি আপডেট তো হলোই না, বরং ভ্যাকান্সি কমিয়ে দেওয়া হলো। পরবর্তী ফেজের অপেক্ষায় চাকরিপ্রার্থীরা দিন কাটায়। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও কোনো সমাধান। এরপর চাকরিপ্রার্থীরা আইনের দারস্থ হয়, মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট ২৬০০ জনের অধিক নিয়োগ করার অর্ডার দেয়। কিন্তু কমিশন তা অবজ্ঞা করে। এরপর মহামান্য হাইকোর্ট ১৯০ জনের কেসে একটি Consideration অর্ডার দিলেও কমিশন মান্যতা দেয়নি। ফলত চাকরিপ্রার্থীরা আজ পাঁচটি বছর ধরে কলকাতার রাজপথ জুড়ে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। বরাবর পুলিশ তাদের দমিয়ে দেয়, যারফলে এবারে তারা কোর্টের অনুমতি সাপেক্ষে এই অনশন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।