অসমে মাদ্রাসা বন্ধের সরকারি নির্দেশের প্রতিবাদে অসম ভবন ঘেরাও করল যুব ফেডারেশন
নিজস্ব সংবাদদাতা :- বিজেপি শাসিত অসমে সরকারি মাদ্রাসা বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের পক্ষ থেকে কোলকাতার অসম ভবন ঘেরাও কর্মসূচি ও ডেপুটেশন দেওয়া হয়।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে এদিন দুপুরে কলকাতার আসাম ভবন এর সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। বিক্ষোভে অসম সরকারের মাদ্রাসা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোচ্চার হয় সংগঠনের সদস্যরা। বিক্ষোভ সভা থেকে তিনজনের এক প্রতিনিধি দল অসম ভবনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক অসীম কুমার ভট্টাচার্যের হাতে দাবিপত্র তুলে দেন।
ডেপুটেশনে সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় অসমে মাদ্রাসা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সরকারকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা মাদ্রাসাগুলি পরিচালনার জন্য অবিলম্বে পূর্বের ন্যায় স্ব-শাসিত বোর্ড পুনর প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সাধারণ বিদ্যালয়ের ন্যায় মাদ্রাসা গুলির সমস্ত রকম সুযোগ-সুবিধা পূর্বের ন্যায় প্রদান করতে হবে।
মহঃ কামরুজ্জামান এক বিবৃতিতে বলেন মাদ্রাসাকে আবার বিতর্কের মুখে এনে নিয়ে এসেছে বিজেপি শাসিত সরকার। তারা ঘোষণা করেছেন সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত অনুমোদিত মাদ্রাসাগুলোকে বন্ধ করে দেবেন। বিজেপির এ ধরনের সাম্প্রদায়িক খেলা একের পর এক চলছে। তাদের জানা দরকার যে আমাদের দেশের সংবিধানের ৩০ ধারায় যে কোনো ধর্মীয় সংখ্যালঘু ভাষাগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি বজায় রাখার জন্য নিজেদের পছন্দমতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করার স্বাধীনতা দিয়েছে।
এ ক্ষেত্রে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে সরকার কোনভাবেই বেসরকারী বা সংখ্যালঘুদের প্রতিষ্ঠান সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করতে পারবে না। তার পরেও বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে মুসলিম বিদ্বেষকে আরো বিস্তার ঘটানোর জন্য একের পর এক এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সংখ্যালঘুদের কোণঠাসা করার জন্য, বঞ্চিত করার জন্য, অধিকার কেড়ে নেওয়ার জন্য, ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার জন্য, নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এই জঘন্য অপচেষ্টার বিরুদ্ধে আমরা বারবার প্রতিবাদ আন্দোলনে নেমেছি।আগামীতেও যতক্ষণ পর্যন্ত বিজেপি বা রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধান মোতাবেক দেশের সংখ্যালঘু মানুষের স্বাধীনতা সুরক্ষিত সুনিশ্চিত না করবে আমাদের লড়াই চলবে। আজকের এই বিক্ষোভ ও ডেপুটেশন বিজেপি সরকারের মাদ্রাসা বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এক প্রতিকী বিক্ষোভ। সরকার যদি তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করে তাহলে দেশের ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অনির্দিষ্টকালীন অসম ভবন ঘেরাও করে রাখা হবে।
এদিন বিক্ষোভ সভা ও ডেপুটেশনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার হোসেন কাসেমী, কোষাধ্যাক্ষ বাবর হোসেন, অনন্ত আচার্য, খলিল মল্লিক, আলি আকবর, আশরাফ আলী মোল্লা, জিয়াউর রহমান গাইন, নাসির উদ্দিন ঘরামি, মহঃ আহসানুলন ইসলাম, জসীম উদ্দিন সহ বিভিন্ন নেতৃত্ব।