*নাট্যকর্মীর জীবনের কথা বলে এই নাটক*
ঈশান কর্মকার
নিউজ ডেস্ক :-; অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত “নানা রঙের দিন” এক কথায় একটি অসাধারণ নাটক। নাটকের ভাষা সহজ সরল ও সাধারণের বোধগম্য যোগ্য এবং অসাধারণ সংলাপ এই নাটকের মান অনেকাংশে বৃদ্ধি করে “নানা রঙের দিন” নাটকটি আমাদের সকলের অতি পরিচিত একটি নাটক। আমাদের কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের বেশকিছু নাট্যদল এই নাটকটি নিয়ে কাজ করছেন বা বর্তমানে করছেন। কিন্তু নানা রঙের দিন নাটকটি যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে করা যায় তা প্রমাণ করে দিয়েছে ‘নৈহাটি থিয়েটার জোন’। নারায়ণ দত্তের নির্দেশনা বহু চর্চিত এই নাটকটি কে একটি অন্য মাত্রা দিয়েছে।
একজন বৃদ্ধ নাট্যকর্মীর বর্তমান সমাজের অবস্থান কে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে এই নাটকের প্রেক্ষাপট। এই নাটকে মোট দুটি চরিত্র প্রথম জন হলেন ৬৮ বর্ষিয় নাট্যকর্মী রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ও দ্বিতীয়জন ৬০ বছর বয়সি কালিনাথ সেন। নাটকে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় তার সুদীর্ঘ ৪৫ বছরের নাটকের অভিজ্ঞতা একদিন মাঝরাতে দিলদারের পোশাক পরিহিত অবস্থায় ব্যক্ত করেছেন প্রম্পটার কালিনাথ সেনের কাছে। তিনি থিয়েটারের দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন, দর্শকেরা সারাদিন খাটা-খাটনির পর কেবলমাত্র বিনোদনের জন্য প্রেক্ষাগৃহে আসেন, নাটক উপভোগ করেন এবং নাটক শেষে বাড়ি চলে যান। কিন্তু সেই নাট্যকর্মীর অবস্থা কেউই জানতে চান না। তৎকালীন একজন নাট্যকর্মীর জীবন-যাপনের ধরাকে কেন্দ্র করেই উক্ত নাটকটি রচিত।
এবার আসি অভিনয় প্রসঙ্গে, নির্দেশনার গুণে এবং কুশীলবদের দুর্দান্ত অভিনয়ের দরুণ এই নাটকটির মাত্রা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রে সোহম চট্টোপাধ্যায় এককথায় অনবদ্য, কারণ নিজের বয়সের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বয়সী একটি চরিত্রে অভিনয় করা এবং সবশেষে সেটিকে রাস্তায় পরিবেশন করা, এই গোটা ব্যাপারটা ঘটানোর জন্য অত্যন্ত দক্ষতার প্রয়োজন সে কাজে অভিনেতা সার্থকই বলা চলে। তার গলার আওয়াজ পথনাটকের জন্য একেবারে উপযুক্ত।
কালিনাথ সেনের চরিত্রে কৃশানু রায় যথেষ্ট দক্ষ, তবে এই চরিত্রটি আরো একটু দক্ষ হলে নাটকটির মান নিঃসন্দেহে একটি অন্য মাত্রা পাবে
তবে সব মিলিয়ে নাটকটি অতি বিনোদনপ্রদ। সামগ্রিকতার বিচারে ‘নৈহাটি থিয়েটার জোন’ প্রযোজিত এবং নারায়ণ দত্ত নির্দেশিত “নানা রঙের দিন” নাটকটি নিঃসন্দেহে একটি সার্থক নাটক।