আবার বিনামূল্যে দু’মাসের চাল-ডাল দেবে রাজ্য সরকার , পরিযায়ী শ্রমিকদের

Spread the love

কৃষ্ণকুমার দাস: ভিন রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেন ভাড়ার একটা অংশ আগেই দিয়েছে রাজ্য সরকার। এবার সেই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারকে একসঙ্গে দু’মাসের রেশন বিনামূল্যে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল নবান্ন।  মাথা পিছু মাসিক পাঁচ কিলো চাল ও এক কিলো ডাল শ্রমিকের পরিবারের সদস্যদের দেওয়া হবে। কলকাতার খাদ্যভবনে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য মানবিক খাদ্যপ্রকল্পের কথা জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

লকডাউনে বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকরা গত কয়েকদিন ধরে ট্রেন ভর্তি করে দফায় দফায় বাংলায় ফিরছেন। উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, নিউ কোচবিহার থেকে দক্ষিণের সাঁতরাগাছি, ডানকুনি, পুরুলিয়াতে আসছে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন। স্টেশনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর সরকারি বাসে চাপিয়ে নির্দিষ্ট গ্রামে পৌছেও দিচ্ছে রাজ্য পরিবহণ দপ্তর। কিন্তু ওই শ্রমিকদের একটা বড় অংশের কোনও রেশন কার্ড নেই। তাই প্রতিবেশিরা যখন রেশন থেকে বিনামূল্যে চাল-আটা পাচ্ছেন তখন সদ্য পাড়ায় ফেরা এই পরিযায়ী শ্রমিকরা কার্যত নিরন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। জেলাশাসকরা ইতিমধ্যে পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁর পরিবারের এই রেশনকার্ড না থাকায় জন্য সঙ্কটের রিপোর্ট নবান্নে পাঠিয়েছেন। সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে এরপর মুখ্যমন্ত্রী পরিযায়ীদের ‘ফুড কুপন’ দ্রুত বণ্টন করে রেশন দিতে খাদ্যদফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষের নতুন করে যে ফুডকুপন বণ্টন করা হচ্ছে তা অনলাইনে পূরণের সমস্যা নিয়ে বৈঠকে বসেন পুরমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রী। সেখানেই পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের সদস্য মিলিয়ে প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে নতুন ফুড কুপন বিলির সিদ্ধান্ত হয়।

কেন্দ্রীয় সরকারের হিসাবে আপাতত ২০ লাখ পরিযায়ী শ্রমিক ফিরছে বাংলায়। অনেক শ্রমিকের পরিবারও সঙ্গে ফিরছে। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, “জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে দু’মাসের জন্য ১০ কেজি চাল ও দু’কেজি ডাল (চানা) পরিবারের প্রতি সদস্যকে দেওয়া হবে।” নবান্ন সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো এই ডাল (চানা) আসতে দিন সাতেক সময় লাগবে। তারপরই ওই ‘পরিযায়ী-রেশন’ বণ্টন শুরু হবে। তবে যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকের আগে থেকেই রেশন কার্ড রয়েছে তাদের নতুন করে আর কোনও ‘ফুড কুপন’ দেওয়া হবে না। নবান্ন সূত্রে খবর, খাদ্যদপ্তর পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য দু’একদিনের মধ্যে একটি বিশেষ ফর্ম জেলাশাসক ও কলকাতা পুরসভাকে পাঠিয়ে দিচ্ছে। যদি কেউ রেশন কার্ড থাকা সত্ত্বেও ওই বিশেষ ফর্ম পূরণ করে তবে তা আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড নম্বর দিয়ে মিলিয়ে দেখা হবে। খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, যদি কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ফর্ম পূরণ করে তবে ধরা পড়লে দু’টি কার্ডই বাতিল করে দেওয়া হবে।

এদিন কলকাতা ও রাজ্যের সমস্ত পুরসভায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য লকডাউনের কারণে যে বিশেষ ফুড কুপন দেওয়া হচ্ছে তা পূরণ করার জটিলতা কাটাতেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ঠিক হয়েছে, হাত লিখে পূরণ করে বরো অফিসে জমা দিলে পুরসভা ‘এক্সেল’ পদ্ধতিতে খাদ্যদপ্তরকে পাঠিয়ে দেবে। এরপর পরীক্ষা করে খাদ্যদপ্তরই নতুন করে চাল-আটা মঞ্জুর করবে।

আবার মানবিক মুখ রাজ্য সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের দু মাসের রেশনের ব্যাবস্থা ।

সৌজন্য:- সংবাদ প্রতিদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.