লিঙ্গের অস্ত্রোপচার করে হিজড়া তৈরি করা হচ্ছে — সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য, চলছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : লিঙ্গের অস্ত্রোপচার করে হিজড়া তৈরি করা হচ্ছে, এনিয়ে হিজড়াদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ বেধেছে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে এখন শুরু হয়েছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ। ইতিমধ্যে হিজড়াদের একটি গোষ্ঠী প্রকাশ্যে রাস্তায় প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয়েছে। চলছে নানা চাপান-উতোর, চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে সাধারন মানুষের মধ্যে।
ঘটনায় প্রকাশ, গত জানুয়ারি মাসে মোহাম্মদ নূর নামের এক হিজড়া ও তার দলবল সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে দাবি করে যে — “হিজড়া” বলে কোনো কিছু হয়না, লিঙ্গের অস্ত্রোপচার করে পুরুষ ও মহিলাদের হিজড়া তৈরি করা হয়। নূরের অভিযোগ, এর পিছনে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বিষ্ণুপুর থানা এলাকার খড়িবেড়িয়ার “পপি” নামের একটি হিজড়া গোষ্ঠী। শুধু তাই নয়, নূর দাবি করেছে সে নিজেও পুরুষ, তাকেও অস্ত্রোপচার করে হিজড়া তৈরি করা হয়েছে। মূলতঃ রমরমা ব্যবসার জন্যই হিজড়া তৈরি করা হয় বলে তার অভিযোগ। আরও অভিযোগ, বিভিন্ন উপলক্ষ্য দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা আদায় করছে হিজড়ারা। এছাড়া যৌন ব্যবসায় সামিল হচ্ছে এক শ্রেণীর হিজড়ারা — এগুলো বন্ধ হওয়া দরকার। পুলিশ প্রশাসনকে এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নিতে আবেদন জানিয়েছেন “নূর” হিজড়া।
সংবাদমাধ্যমে নূরে’র এই সাক্ষাৎকারটি প্রচার হতেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায় হিজড়া সমাজে। “পপি” গোষ্ঠীর হিজড়ারা ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে রাস্তায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয়েছে। নূরে’র বিরুদ্ধে বিষ্ণুপুর থানা সহ অন্যান্য থানায়ও লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছে “পপি” গোষ্ঠী। এদের অভিযোগ, “নূর” গোষ্ঠীর হিজড়ারা বজবজ, বিষ্ণুপুর এলাকায় অবৈধভাবে টাকা আদায় করছে। এর প্রতিবাদ করলে “পপি” গোষ্ঠীর হিজড়াদের মারধোর করেছে “নূর” গোষ্ঠীর হিজড়ারা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের একজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। থানায় অভিযোগ জানিয়েও এখনও পর্যন্ত এর কোনো সুরাহা হয়নি। তাই এব্যাপারে তারা শীঘ্রই বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন বলে জানিয়েছেন।
হিজড়াদের দুই গোষ্ঠীর বিবাদে সাধারণ মানুষ এখন বিস্মিত এই ভেবে যে, হিজড়ারা যখন নিজেরাই দাবি করছে “হিজড়া বলে কিছু হয়না…।” তখন অবিলম্বে এর তদন্ত হওয়া দরকার।