আসন্ন পুরসভা নির্বাচনে ১২৬ নম্বর ওয়ার্ডে সুদীপ রায়কেই প্রার্থী হিসেবে চাইছেন এলাকার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : রাজ্যে বিগত পুরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২০১৫ সালে। তারপর ২০২০ সালে পুর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও করোনা আবহের কারণে রাজ্যের ১১৩ টি পুরসভা ও পুর নিগমের নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। যারফলে তৎকালীন নির্বাচিত পুর প্রতিনিধিরা তাদের কাউন্সিলরের পদমর্যাদা হারিয়েছেন। এখন তারা শুধুমাত্র ওয়ার্ডের সমন্বয় সাধনকারী বা কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। একজন পুর-নাগরিক হিসেবে বাসিন্দাদের যতটা পুর পরিষেবা পাওয়ার কথা, বহু ক্ষেত্রেই তার সবটা হয়তো সমন্বয়কারী পূরণ করতে সমর্থ হচ্ছেন না। তবে তারা কাউন্সিলরের কাজটা অনেকটাই সামলে নিচ্ছেন বলে খবর। তাই অবিলম্বে পুর নির্বাচন হওয়াটা জরুরী বলেই ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। এমনই পরিস্থিতির মধ্যে আগামী জানুয়ারি মাসে পুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বলে সূত্রের খবর।
জানা গিয়েছে, রাজ্যের বহু ওয়ার্ডে বেশ কিছু পুর প্রতিনিধি মারা গিয়েছেন। যারফলে ওইসব ওয়ার্ডগুলি কাউন্সিলরহীন অবস্থায় রয়েছে। আবার যে ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থীরা বিগত নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিলেন, সেখানেও যোগ্য প্রার্থী দেওয়ার তৎপরতা চলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে। কিছু ওয়ার্ড মহিলা সংরক্ষণের আওতায় আসায় সেখানে নতুন মহিলা প্রার্থীর খোঁজ চলছে। নানা জটিলতা ও জল্পনা-কল্পনা নিয়েই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে আসন্ন পুর নির্বাচনের টিকিট দেওয়ার তৎপরতা শুরু হচ্ছে বলে খবর। তবে অন্যান্য দলগুলির থেকে তৃণমূলের টিকিটের দাবিদার অগণিত, আর এনিয়েই গোল বাঁধতে পারে দলীয় অন্দরে, এমনটাই আশঙ্কা রাজনৈতিক মহলে।
প্রসঙ্গত: কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডটি এবার মহিলা ওয়ার্ড হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যারফলে এই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ঘনশ্রী বাগ এই ওয়ার্ড থেকে দাঁড়াতে পারবেন না। একটি বিশ্বস্ত সূত্রের খবর তিনি ১২৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দাঁড়াবেন। কারণ ১২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শিপ্রা ঘটক বয়সজনিত কারণেই তিনি এবার আর নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন না। তাই এই শূন্য আসনটিতেই ঘনশ্রী বাগের দাঁড়ানো প্রায় নিশ্চিত। আর এনিয়েই গোল বেঁধেছে এই ওয়ার্ডের কর্মীদের মধ্যে… এমনটাই খবর তৃনমূলের দলীয় সূত্রে।
এব্যাপারে ১২৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃনমূলের কর্মীরা জানিয়েছেন, তৃনমূলের জন্মলগ্ন থেকেই সুদীপ রায় (রানা) তৃনমূলের বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের যেকোনো বিপদে-আপদে পাশে থাকেন। কোনও মানুষ সমস্যায় পড়লেই সুদীপ সেখানে ছুটে যায়। এই ওয়ার্ডের বকুলতলা, শীলপাড়া, সখেরবাজার, আনন্দনগর, সরশুনা মেইন রোড, ক্ষুদিরাম পল্লী, দক্ষিণ পাড়া রোড, বাগপোতা, খান মহাম্মদ রোড, বসুন্ধরা পার্ক সহ বিস্তীর্ণ এলাকা চষে বেড়ায় সে। এলাকার মানুষ ডাকলেই তাদের পাশে পান সুদীপকে। তাই তারা স্থির করেই রেখেছেন শিপ্রা ঘটক যদি ভোটে না দাঁড়ান, সেক্ষেত্রে এলাকার বাসিন্দা তথা দক্ষিণ কলকাতা জেলা যুব তৃনমূলের সম্পাদক সুদীপ রায়কেই (রানা) দল যেন প্রার্থী করে। অন্যথায় তারা অন্য কথা ভাববেন বলেও একটা ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
এ থেকেই আশঙ্কা, আসন্ন পুর নির্বাচনে এই ওয়ার্ডে সুদীপ রায়কে (রানা) দল টিকিট না দিলে গোষ্ঠী কোন্দল চরম আকার নিতে পারে বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।