একই নামে দুই দুইটি ঘরের আইডি, অভিযোগ,বিডিও’র তদন্ত শুরু হতেই বচসা তৃনমূল ও সিপিআইএম এর মধ্যে, আহত দুই
নাজিম আক্তার,হরিশ্চন্দ্রপুর,২৪ জুলাই:
একই উপভোক্তার নামে দুই দুইটি করে ঘরের আইডি।বিডিও অফিসে অভিযোগ করতেই শুরু তৃণমূল ও সিপিআইএম এর মধ্যে বচসা।আহত তৃনমূলের এক নেতা ও সিপিআইএম এর এক কর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর জিপির ভবানীপুর গ্রামে।আহত হয়েছেন তৃনমূল নেতা আনোয়ার কবির ও সিপিআইএম এর এক কর্মী সাদির হোসেন। আহত দুই জনকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।উভয় পক্ষই হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা যায়।
জানা যায় তৃনমূল নেতা আনোয়ার কবির ও উপভোক্তার একাংশ মিলে বৃহস্পতিবার বিডিও অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিআইএম এর সদস্যা রবিনা খাতুন ও তার স্বামী গোলাম মর্তুজা এবং নোডাল অফিসার মহম্মদ ইয়াসিনের নামে। অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার তদন্তে আসে যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক।এদিন তদন্ত করে যেতেই শুরু হয় দুই দলের মধ্যে বচসা।বিডিওর নির্দেশ অমান্য করে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা তালিকায় একই উপভোক্তার ডবল আইডিতে টাকা ঢোকানোর জন্য রেজিস্ট্রেশন করিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।একই তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও প্রথম কিস্তির টাকা পর্যন্ত পাইনি অনেক উপভোক্তাই।তাই কিস্তির টাকা পাওয়ার দাবিতে এবং সরজমিন তদন্ত চেয়ে বৃহস্পতিবার বিডিও দ্বারস্থ হয়েছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর জিপির ভবানীপুর পূর্ব বুথের উপভোক্তারা।যদিও অভিযুক্ত গোলাম মর্তুজা তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ কিছুটা স্বীকার করে নিয়েছেন।২০১৪-১৫ সালের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা তালিকায় ভবানীপুর পূর্ব বুথে প্রায় দুইশত উপভোক্তার নাম রয়েছে।ইতিমধ্যে বেশিরভাগই উপভোক্তারা তিনটি কিস্তির মাধ্যমে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পেয়ে ঘর তুলে নিয়েছে।মাত্র হাতে গোনা ১০-১২ জন উপভোক্তারা প্রথম কিস্তির টাকা পাইনি।তাদেরকে বঞ্চিত রেখে একই উপভোক্তার দ্বিতীয় আইডিতে টাকা ঢোকানোর জন্য রেজিস্ট্রেশন করে রেখেছে অভিযুক্তরা।
অভিযোগকারী আনোয়ার কবির জানান ভবানীপুর পূর্ব বুথে প্রায় ৮-১০ জন উপভোক্তার নামে দুই দুইটি করে ঘরের আইডি রয়েছে।উপভোক্তারা প্রথম আইডি’র টাকা পেয়ে ইতিমধ্যে ঘর তুলে নিয়েছে।আবার সেই উপভোক্তার দ্বিতীয় আইডি দেখিয়ে নোডাল অফিসারকে হাতে করে পরিবারের অন্য সদস্যের নামে টাকা ঢোকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে পঞ্চায়েত সদস্যা রবিনা খাতুন ও তার স্বামী গোলাম মর্তুজা।যাদের দুইতলা পাকা বাড়ি রয়েছে আবার তারাই পাচ্ছে সেই ঘর।অথচ যারা প্রকৃত ঘর পাওয়ার উপযুক্ত তারা বঞ্চিত রয়েছে।তাই সরজমিন তদন্ত চেয়ে বিডিও’র দ্বারস্থ হয়েছি।
এই অভিযোগ এসডিও ও ডিএম হয়ে নবান্ন ভবন পর্যন্ত জানাবে বলে জানান।বিডিও তদন্ত করে গেলে সিপিআইএম এর কর্মীরা প্রকাশ্য রাস্তায় তাকে এবং তার দলের লোকেদের মারধর করে বলে অভিযোগ।
অভিযুক্ত গোলাম মর্তুজা জানান অভিযোগটি আংশিক সত্য হলেও তাকে ফাঁসানোর একটা চক্রান্ত করছে তৃনমূল নেতা আনোয়ার কবির ও তার দলের লোকেরা।ভুলবশত হয়তো দ্বিতীয় আইডিতে রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে। এখনো পর্যন্ত কোনো উপভোক্তার দ্বিতীয় আইডিতে টাকা ঢোকেনি।বিডিওর তদন্তের ভিত্তিতে সেই সব উপভোক্তাদের দ্বিতীয় আইডি বাদ দিয়ে দিলে তার কোনো আপত্তি থাকবে না বলে জানান।
আহত সিপিআইএম এর কর্মী সাদির হোসেন জানান সংবাদমাধ্যমের লোক তার বাড়ির ছবি তুলতে গেলে তাকে গালিগালাজ করে। তৃনমূল নেতা আনোয়ার কবির ও তার দলের লোকেরা না জেনেই তাকে মারধর করে বলে অভিযোগ।
অভিযুক্ত নোডাল অফিসার মহম্মদ ইয়াসিন জানান পঞ্চায়েত সদস্যরা উপভোক্তাদের কাগজপত্র পত্রের ফাইল বানিয়ে পঞ্চায়েতে জমা দেয়। সঠিক তথ্য যাচাই করেই টাকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করা হয়। হয়তো ভুলবশত এই কাজগুলি হয়ে গেছে।
বিডিও অনির্বাণ বসু জানান অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হয়েছে।অভিযোগ তালিকার সঙ্গে তদন্ত সঠিক বেরিয়ে আসলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিবেন