জনজীবন স্বাভাবিক বেহালায়, উঠছে প্রশ্ন করোনা কি পালিয়ে গেলো ?
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পর আজ (সোমবার) থেকে সারা রাজ্যের মতো বেহালাতেও সমস্ত দোকানপাট খুলে গিয়েছে। অটো থেকে শুরু করে ট্যাক্সি, বাস ইত্যাদিও চলাচল শুরু করেছে। লকডাউনের চিহ্ন এখন উধাও। জনজীবন পুরোপুরি স্বাভাবিক বেহালায়। কিন্তু এরই মধ্যে নানা মহল থেকে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই বলছেন, করোনা কি এখন পালিয়ে গেল ?
কলকাতা দক্ষিণ শহরতলী জেলা বিজেপি’র সভাপতি সোমনাথ ব্যানার্জীর অভিযোগ, রাজ্যে করোনা’য় আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন যখন বাড়ছে, ঠিক সেই সময়ই রাজ্য সরকার লকডাউন তুলে দিয়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিল রাজ্যবাসীকে। তার অভিযোগ, এরাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যখন অনেক কম ছিল, তখন তো এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খুব তৎপরতা দেখিয়েছিলেন। এমনকি জরুরী প্রয়োজনে দোকানে বাজারে গেলেও রাজ্যের পুলিশ মানুষকে বেধড়ক পিটিয়েছে। পুলিসের অমানবিক লাঠিচার্জে হাত,পা ভেঙ্গেছে, মাথা ফেটেছে বহু মানুষের। ওইভাবে কোনও মানুষকে মারা যায় নাকি ? তবুও মুখ বুজে সেটাও সহ্য করেছ রাজ্যের মানুষ। আর পরিস্থিতি যখন ঘোরালো হয়ে জটিল আকার নিচ্ছে, আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশঃ বাড়ছে ঠিক তখনই মুখ্যমন্ত্রী লকডাউন তুলে দিলেন। এতে কি পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে ? সোস্যাল ডিসটেন্স কিভাবে মেইন্টেন করবে মানুষ ? তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, একটা বাসে যতগুলি সিট আছে, ততজনই বাসে উঠতে পারবেন। বাসের সিটে পাশাপাশি গায়ে গায়ে বসে কি সোস্যাল ডিসটেন্স মেইন্টেন করা যায় ? ভয়ঙ্কর ক্ষতি হলো রাজ্যের মানুষের, এমনই অভিযোগ তার।
কলকাতা দক্ষিণ শহরতলী জেলা ক্লাব সেলের কনভেনর তরুণ দাস (রাজু) ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, করোনা কি এখন পালিয়ে গেল ? আসলে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতায় করোনা পরিস্থিতি এখন ভয়ানক রূপ নিয়েছে এ রাজ্যে। তার উপর “আমফান” কান্ডেও রাজ্যবাসীর দুর্ভোগের জন্য চরম ব্যর্থ রাজ্য সরকার। কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের ব্যর্থতা নিয়ে সরব হয়েছেন তারই দলের নেতা মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও। এই পরিস্থিতিতে ফিরহাদ হাকিমের ব্যর্থতা ঢেকে তাকে আড়াল করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই লকডাউন খুলে দেওয়া হলো। কারণ ঝড় ঝঞ্ঝায় ভাঙ্গা গাছ সরাবার মতো পরিকাঠামোও নেই সরকারের। জনগণের একটার পর একটা বিক্ষোভ আর অভিযোগের তীর এখন পুর প্রশাসককের দিকে ধেয়ে আসছে। তার উপর লকডাউনের আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যার্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। তাই লকডাউনের দায় ঝেড়ে ফেলতে লকডাউন কার্যত: তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।