অয়ন বাংলা,নিউজ ডেস্ক:- বাস্তব বড় অসহায় ।আক্রান্ত আমরা মানুষ। এ যেন নরক জীবন। ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী হরেশ্বর দাসের মায়ের শেষকাজে অংশগ্রহণ করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। আসামের একটি জনপ্রিয় দৈনিকে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বঙাইগাও জেলার অভয়াপুরীর বাসিন্দা হরেশ্বর দাস। গত তিন বছর ধরে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রশ্নের নাগপাশে আবদ্ধ হয়ে গোয়ালপাড়া ডিটেনশন ক্যাম্পে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন।
নিজের ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমান হিসেবে তাঁর হাতে অনেক নথিপত্র থাকলেও কোনও সুফল পাওয়া যায়নি।তিনি গৌহাটি হাইকোর্ট পেরিয়ে সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন।তাও প্রায় ছ’মাস পেরিয়ে গিয়েছে। গৌহাটি হাইকোর্টের বহালকৃত নির্দেশের উপর স্থগীতাদেশের পরেও জামিন পাননি হরেশ্বর দাস। এখনও তিনি ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন।
আইনজীবী সূত্রে প্রকাশ,একে-একে দু’বার জামিনের জন্য আবেদনের পরেও নির্বিকার অভয়াপুরীর ২নম্বর ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল।
পত্রিকাটির খবরে বলা হয়েছে, হরেশ্বর দাসের জীবনে এধরনের অন্তহীন যাতনা কোনোভাবেই দূর হচ্ছেনা। শেষ না-হওয়া আইনী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে সারা অসম বাঙালি ঐক্যমঞ্চ।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো,হরেশ্বর দাসের মা গত ৩ সেপ্টেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। একমাত্র পুত্র ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন। একথা ভেবে শোকাগনিতে অবশেষ এই পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিলেন তিনি। কিন্তু যে মানবতার প্রশ্ন এখন আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হচ্ছে, তা হলো মায়ের শেষ কাজটি কি সম্পন্ন করার অনুমতি পাবেন হরেশ্বর দাস। পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করার আদৌ অনুমতি লাভ করতে সক্ষম হবেন কি-না–তা নিয়ে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে আশঙ্কাও। তাকে কী ডিটেনশন ক্যাম্পের অন্ধকার কুঠুরি থেকে আকাশের মুক্ত আলোয় আসার সুযোগ দেওয়া হবে কী-প্রশ্ন এটাই। সারা অসম বাঙালি ঐক্যমঞ্চের সূত্র মতে ,হরেশ্বর দাসের পক্ষ থেকে পনেরো দিন’প্যারোল’-এর মাধ্যমে মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানটিতে উপস্থিত থাকার জন্য বঙাইগাও জেলা সীমান্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক আবেদন জানানো হয়েছে।কিন্তু ,সেই আশা কতটা বাস্তবায়িত হবে তা কেউ জানেনা। ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে বের হওয়ার আশা অত্যান্ত ক্ষীণ।পারিবারিক সূত্রে প্রকাশ যে আসমের হিন্দু বাঙালিদের কাছে সর্বগ্রাসী এনআরসি চূড়ান্ত তালিকায় হরেশ্বর দাসের মা পদ্মারানি দাসের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু ,হতভাগ্য মা তাঁর জীবিতকালে ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে একমাত্র পুত্রের মুক্তি পাওয়ার খবরটি শুনে যেতে পারলেন না।
কিন্তু এটাই কি জীবন? কোন অভিশাপে এমন হচ্ছে? সরকার, প্রশাসন কবে মানবিক হবে? উঠছে প্রশ্ন।