নিউজ ডেস্ক :- এরপরই তাঁকে ঘিরে সম্প্রতি নানা সংবাদমাধ্যমে যে জল্পনা শুরু হয়েছে তা নিয়ে মুখ খুলেছেন শুভেন্দু। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বা কর্মসূচির প্রতি ইঙ্গিত করে স্পষ্ট করে বলেছেন, তাঁর সম্পর্কে কোনও কথা শুনলে সরাসরি যেন মুখ থেকেই শোনা হয়, অন্যের কথায় বিচার নয়। এরপরই আগামী ১০ নভেম্বর ঐতিহাসিক রক্তাক্ত সূর্যোদয়ের বর্ষপূর্তি সমাবেশের ঘোষণা করেছেন শুভেন্দু।
সংবাদ মাধ্যমে যাই বেরোক না কেনো আমি যতক্ষণ কিছু না বলছি বিশ্বাস করবেন না। আমি প্যারাসুটে নামিনি এবং লিফটেও উঠিনি। সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে উঠেছি। ছোটলোকদের দিয়ে বাজে কথা বলিয়ে ভেবেছে আমি উত্তর দেব। কুকুর পায়ে কামড়ালে মানুষ কখনো কুকুরের পায়ে কামড়ায় না।” শনিবার নন্দীগ্রামে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করলেন রাজ্যের পরিবহন সেচ ও জলসম্পদ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। বাংলার রাজনীতিতে এই মুহূর্তে জল্পনার শীর্ষে শুভেন্দু অধিকারী। তাঁকে নিয়ে বারবার দলবদলের জল্পনা। মন্তব্য, পাল্টা মন্তব্যের চাপান-উতোর। এরই মধ্যে শনিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামে এক বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন শুভেন্দু। সেখানেই এমন ঝাঁঝালো বক্তব্য রাখেন শুভেন্দুবাবু।
অন্যদিকে আগামী ৭ নভেম্বর পুরুলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে শুভেন্দু অধিকারীর বিজয়া সম্মিলনী। ওইদিন অরাজনৈতিক মঞ্চে হবে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান। সমগ্র পুরুলিয়া জেলাজুড়ে পাগড়ি পড়া শুভেন্দুর ছবি দেওয়া পোস্টার টাঙ্গানো হয়েছে। এমনকি পোস্টারে সিংহের লোগো রয়েছে। এর ফলে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা।তবে এদিন তিনি বলেন, “আমরা চলি সম্মুখপানে কে আমাদের রুখবে। উচ্চ যেথা ভয় শূন্য চিত্ত যেথা শির।“এমনকি তাঁর কোন পরিবার নেই বলেও দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি অন্য নেতাদের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, আমি কিন্তু আচমকা মন্ত্রী হইনি। কলেজের জেনারেল সেক্রেটারি পদ থেকে উঠেছি। সঙ্গে মঞ্চ থেকে দাঁড়িয়ে জেলার মানুষদের কাছে জিজ্ঞেস করেন বিগত বছরের শুভেন্দু অধিকারী আর এখনকার শুভেন্দু অধিকারী এক আছে কিনা? তাঁর প্রশ্নের উত্তরে উপস্থতি সকলেই এক আছেন বলে সম্মতি জানায়। তিনি আরও বলেন, “আমি বিয়ে করিনি কিন্তু সেটা কাউকে দেখে নয়। সুশীল ধারার মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীর দ্বারা আমি অনুপ্রাণিত। আমার পরিবার বৃহৎ পরিবার।“ এমনকি করোনা আক্রান্ত থাকাকালীন রাজ্যবাসীর শুভেচ্ছা বার্তায় যে তিনি আপ্লূত তারও উল্লেখ করেন শুভেন্দু অধিকারী। সমগ্র রাজ্যজুড়ে প্রায় ৩ লক্ষ ম্যাসেজ এবং তিরিশ হাজার ফোন পান তিনি। পাশাপাশি ১০ নভেম্বর রক্তাক্ত সূর্যাদয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে নন্দীগ্রামে সমাবেশের ডাক দেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু বাবু বলেন, নন্দীগ্রামের মানুষের সঙ্গে আমি ছিলাম আছি এবং আগামী দিনেও থাকবো। আগামী ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে রক্তাক্ত সূর্যোদয়ের বর্ষপূর্তি। ওইদিন শহীদ স্মরনের পাশাপাশি নন্দীগ্রামে বড় সমাবেশ হবে বলেও ঘোষণা করেন শুভেন্দু। এছাড়াও সেখানের খেজুরি এলাকার মানুষের যোগ দেওয়ার কথা বলেন তিনি। সুতরাং, আজ শুভেন্দু অধিকারী অনেক ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেও আগামী ৭ নভেম্বর পুরুলিয়ার মাটিতে ও ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে তিনি কী বলেন সেদিকেই এখন সবার নজর ।
এদিনের সভায় শুভেন্দু নিজের রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে কেন তিনি অকৃতদার, সব কিছুর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বলেছেন, প্রাতঃস্মরণীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীশ সামন্ত, অজয় মুখোপাধ্যায়, সুশীল ধাড়াদের জীবন-চরিত পড়েই তিনি বিবাহিত জীবনে পা না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর কথায়, “পিছুটান রাখতে নেই। নিজের ছোট সংসার নয়, বড় পরিবার, সাধারণ মানুষকে নিয়ে বৃহত্তর পরিবারে থাকব বলেই ঘোষিত অকৃতদার আমি।” এদিন তিনি ২০০৪ সাল থেকে ২০০৯, ২০১৪, ২০১৬ থেকে আজ পর্যন্ত তাঁর মধ্যে আচার-ব্যবহারের কোনও পরিবর্তন হয়েছে কী না, উপস্থিত জনতার কাছে বারবার তা জানতে চান পরিবহণ মন্ত্রী।