বিহার ভোটে শরিকি সঙ্ঘাত, যোগীর সিএএ মন্তব্যের বিরোধিতায় নীতীশ
ওয়েব ডেস্ক :-নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন তুলে ধরে অনুপ্রবেশকারীদের ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আর তা নিয়েই এবার বেজায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিহারের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। তিনি বলেন, এসব ফালতু কথা কারা বলে? ফালতু প্রচার কারা করে? এখানে কে কাকে দেশ থেকে বের করবে? আমরা সবাই হিন্দুস্তানি, আমরা সবাই ভারতীয়? কে বের করবে? অকারণে এসব কেন বলেন
বিহারে ভোটপর্ব শেষের আগেই ক্ষমতাসীন এনডিএ জোটে ফাটলের ছায়া। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ বুধবার বিহারের ভোটপ্রচারে এসে জানিয়েছিলেন, অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে বার করে দেওয়া হবে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জনসভায় দাঁড়িয়ে যোগীর নাম না করে বিঁধলেন তাঁকে।
বুধবার বিকেলে অরারিয়ায় নির্বাচনী সভায় জেডি(ইউ) সভাপতি নীতীশ বলেন, ‘‘কারা এ সব বিদ্বেষমূলক প্রচার করছে? কে এমন মিথ্যা কথা বলছে? তাড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা কার আছে? এমন সাহস কারও হতে পারে না। এখানে সকলেই ভারতের নাগরিক।’’
ঘটনাচক্রে তার কয়েক ঘণ্টা আগেই কাটিহারের একটি জনসভায় আদিত্যনাথ বলেছিলেন, ‘‘মোদীজি অনুপ্রবেশ সমস্যার সমাধান করেছেন। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে তিনি পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ থেকে আসা নির্যাতিত হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। আর যারা অনুপ্রবেশ করে দেশের সুরক্ষা বিঘ্নিত করছে তাদের বার করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র।’
আদিত্যনাথের মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই নীতীশ বলেন, ‘‘আমাদের সংস্কৃতি বহুত্ববাদের। সম্প্রীতিক, ঐক্য এবং সৌভ্রাতৃত্বের মাধ্যমেই বিহারের উন্নয়ন সম্ভব।’
প্রসঙ্গত, বিহারে এনআরসি কার্যকর হবে না বলে একাধিক বার প্রকাশ্যে জানিয়েছেন নীতীশ। জানিয়েছেন, অসমে চালু হওয়া ওি পদ্ধতি দেশের অন্য কোনও রাজ্যে কার্যকরের চেষ্টা হলে তিনি বিরোধিতা করবেন। এমনকি, সংসদে তাঁর দলের সাংসদেরা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সমর্থন করলেও পরে বিষয়টি নিয়ে ‘ধীরে চলো’র ইঙ্গিত দেন তিনি।
আরে আমি তো যখন থেকে সুযোগ পেয়েছি তখন থেকেই শুধু সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্বের পরিবেশ তৈরি করেছি। আমার লক্ষ্য সবাই একসঙ্গে নিয়ে মিলেমিশে সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্ব। তাহলেই তো উন্নতি হবে। আসলে কিছু মানুষ চায় নিজেদের মধ্যে এই ঝগড়া চলতে থাকুক। তাহলে কোনও কাজ করতে হবে না।”
উল্লেখ্য, যোগী আদিত্যনাথ এক জনসভায় বলেন, অনুপ্রবেশ রুখতে একটা সমাধান পেয়ে গিয়েছেন মোদিজি। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের নিপিড়িত সংখ্যালঘুদের তিনি নিরাপত্তা দিতে চান। যে কোনও অনুপ্রবেশকারী দেশের নিরাপত্তায় চিড় ধরাতে চাইলেই তাঁকে দেশ থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে।”