পাঠকের কলম,অয়নবাংলানিউজ:-
আজ নারী দিবস। যারা সোনাগাছিতে পুলিশের ভয়ে অথচ কাস্টমারের আশায় দুচোখ মেলে রাস্তার ধারে কালো কাজল আর এলোমেলো শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে থাকে, আজ তাদের নারী দিবস। যারা পণ্যের মত বিজ্ঞাপনীতে ‘হয়ে যাক ‘ ডাকে সাড়া দেয়, আজ তাদের নারী দিবস। যারা পুরুষের অন্তর্বাসের বিজ্ঞাপনে প্রচন্ড কামুক স্টাইলে নিজেদের শরীর দুনিয়ার অপরিচিত, ক্ষুধার্ত পুরুষদের কাছে মেলে ধরে, আজ তাদের নারী দিবস। আজ নারী দিবস। যারা সেকেন্ড হ্যান্ড ট্রাকের পিছনে বিকিনি কাট-আউটে অপ্রাসঙ্গিক ভাবে ট্রাকের কাস্টমার ডেকে আনে, আজ তাদের নারী দিবস।
যারা পুরুষের পারফিউমের গন্ধে বিজ্ঞাপনী মাদকতায় পুরুষদের পিছনে নিজের পোষাক রাস্তায় খুলতে খুলতে প্রকাশ্যে ছুটে চলে, আজ তাদের নারী দিবস। যে ক্লাস টেনের মেয়ে একটা আইফোনের জন্য নিজের যত্নশীল শরীরকে অচেনা পুরুষের কাছে স্বেচ্ছায় বিলিয়ে দেয়, আজ তার নারী দিবস। ঠোঁটে আমের জুস নিয়ে পুরুষাঙ্গ চাঁটার রূপক বিজ্ঞাপনে যে নায়িকা পুরুষহৃদয়ে বিরাজমান, সেই নায়িকাও আজ নারী দিবস নিয়ে ভাষণ দেবেন।
নারী মানে পন্যসর্বস্ব ক্যাপিটালিজমের একান্ত ভোগ্য প্রোডাক্ট বানিয়ে দেওয়া বুদ্ধিজীবী আজ নারীত্বের সংজ্ঞা নিয়ে ভাষণ দেবেন। যে চিত্রপরিচালক অপ্রাসঙ্গিক ভাবে বিছানায় রগরগে দৃশ্য দেখিয়ে বাণিজ্যিক মুনাফা লুটেছেন, তিনি আজ নারীস্বাধীনতার উপর থিসিস বর্ণনা করবেন। ছাগল-গরু-মুরগীর মত কাটা মাংস হিসাবে দাঁড়িপাল্লায় ঝুলিয়ে রাখা নরম নারীমাংসের গ্ল্যামারে যে সকল প্রগতিশীল দাদাদের গোপন লালাতে ভিজে যায় বোধের বিছানা, আজ সেইসব দাদা-ভাইয়েরা নারীশক্তির উপর কবিতা লিখবেন।
আজ নারী দিবস। আহ! বড় বেশী কথা হয়ে গেল। আজকের এই পুণ্যতিথিতে আমার মত পুরুষবাদীদের চুপটি থাকাই শ্রেয়…(পাঠকের কলাম সুতীর্থ মুর্খাজী )