*সংখ্যালঘু উন্নয়নের টাকা দিয়ে মুসলিম এলাকা উন্নয়নের দাবিতে কোলাঘাতে যুব ফেডারেশনের বিক্ষোভ*

Spread the love

*সংখ্যালঘু উন্নয়নের টাকা দিয়ে মুসলিম এলাকা উন্নয়নের দাবিতে কোলাঘাতে যুব ফেডারেশনের বিক্ষোভ*

সোমবার সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের কোলাঘাট ব্লক কমিটির পক্ষথেকে সংখ্যালঘু উন্নয়নে বরাদ্দ টাকা মুসলিম এলাকার উন্নয়নে খরচ করার দাবিতে মিছিল করে বিডিও অফিস ঘেরাও করে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

সেখানে উপস্থিত হয়ে সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন আমরা দেখছি সংখ্যালঘু উন্নয়নে রাজ্য সরকার নানা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। কিন্তু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সঠিক ভাবে তার সুফল পাচ্ছে না। প্রায় প্রতি বছর সংখ্যালঘু উন্নয়নের বরাদ্দগুলির অধিকাংশ অর্থ অন্যত্রে ব্যয় করা হচ্ছে। এম এস ডি পি ও আই এম ডি পি-র জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার ২- ৩ কোটি টাকা প্রতি বছর সংখ্যালঘু ব্লক ভিত্তিক বরাদ্দ করে। এই প্রকল্প সঠিক ভাবে রূপায়ন হলে অনগ্রসর পশ্চাৎপদ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আর্থিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত অবস্থার অনেকটায় মানোন্নয়ন করা যেত। অনেক ক্ষেত্রে কিছু কাজ করা হলেও যথাযথ পরিকল্পনার অভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ তার সুবিধা পাচ্ছে না।

এছাড়াও আমরা বর্তমান সময়ে দেখছি কেন্দ্রের মোদী সরকার ওয়াকফ সংশোধনী বিল নামে কালাকানুন আইন এনে মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, ঈদগাহ, এতিমখানা সহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলকে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসছে, ফলে এই সম্পত্তি মুসলিমদের সম্পত্তি হিসাবে ধরে রাখা বড় কঠিন হবে।

আমরা চাই, প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা পালন করে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওয়াকফ সম্পত্তিকে অক্ষুন্ন রেখে উন্নয়নের কাজকে তরান্বিত করুক।

এদিন স্মারকলিপি প্রদান করে ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে যে দাবি রাখা হয়

১) আই এম ডি পি প্রকল্প বরাদ্দের একশ শতাংশই সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের জন্য সংখ্যালঘু এলাকায় বরাদ্দ করতে হবে।

২) অসহায় সম্বলহীন, নিঃস্ব, বিধবা সংখ্যালঘু মহিলাদের গৃহনির্মান প্রকল্পের উপভোগ নির্বাচনে তাদের বর্তমান আর্থিক অবস্থাকে প্রাধান্য দিয়া নিরপেক্ষ বজায় ও ২২-২৩, ২৩-২৪ আর্থিক বছরে বিধবা মহিলাদের গৃহ নির্মানের জন্য যে নামের লিস্ট তৈরি করা হয়েছে তা প্রকাশ করতে হবে।

৩) কোলাঘাট ব্লকে যে সমস্ত ওয়াকফ সম্পত্তি আছে তা সুরক্ষিত করা।

৪) কোলাঘাট ব্লকের সাগরবাড় উচ্চমাধ্যমিক হাই স্কুল, শালুকা এম এস কে সিনিয়ার মাদ্রাসা, দেড়িয়াচক এম এস কে সিনিয়ার মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আবাসিক ছাত্রাবাস অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে।

৫) কোলাঘাট শহর এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যে মানসিক অত্যাচার ও প্রশাসনিক অসহযোগিতা চোখে পড়ছে তা অবিলম্বে বন্ধ করা ও সুষ্ঠু সমাধানের মাধ্যমে নিরসন করতে হবে।

৬) দেড়িচক সরকারী সিনিয়ার মাদ্রাসা সংলগ্ন যে বেহাল রাস্তা খাল বাঁধ বরাবর বয়ে গিয়েছে অবিলম্বে সংস্কার করতে হবে।

৭) খড়িচক পুল হইতে মাড়বেড়িয়া সামন্ত ভাটা পর্যন্ত নদী বাঁধের দ্রুত রাস্তা মেরামতি ব্যবস্থা করা এবং অত্যাধিক ভারী যানবাহন নিষিদ্ধ করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।

৮) কোলাঘাটের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার জশাড় থেকে পানশিলা ন্যাশনাল হাইওয়ে রোড পর্যন্ত রাস্তার উভয় দিকে জল নিকাশির জন্য ড্রেনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৯) পারিট গ্রামের বুড়িমা থানের পার্শ্ববর্তীতে জলনিকাশির জন্য যে চঙ বসানো আছে, তার পরিবর্তে অতি দ্রুত সুইলিশ পোলের ব্যবস্থা করা, যার ফলে পারিট, বার পারিট, দেউলিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকার জনগন বর্ষার জল থেকে মুক্তি পায়।

১০) সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মাড়বেড়িয়া গ্রামের ৫ হাজারের অধিক জনসাধারনের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রর নির্মান করতে হবে।

১১) দেউলিয়া বাজার সংলগ্ন সুইলিশ পোল থেকে খাল বরাবর যে রাস্তা বড়দাবাড় জেলে পাড়া সুইলিশ পোল পর্যন্ত গিয়েছে তা অবিলম্বে কংক্রিট ঢালাইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

১২) দেউলিয়া বাজার সংলগ্ন পুল থেকে দেউলিয়া হীরারাম হাইস্কুলের পাশ দিয়ে যে পিচ রাস্তা মান্দারগেছিয়া পোল পর্যন্ত গিয়েছে এই বেহাল রাস্তার সংস্কার অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

১৩) মাড়বেড়ি সুইলিশ পোল থেকে যে মোরাম রাস্তা গঙ্গামাড়ো পিচ রাস্তা পর্যন্ত গিয়েছে তা অবিলম্বে কংক্রীট ঢালাই এর ব্যবস্থা করতে হবে।

১৪) সংখ্যালঘু উন্নয়নের প্রকৃত প্রয়োজনীয় কাজগুলি চিহ্নিত করতে ও কাজের তদারকি করার জন্য রাজ্য সরকারের নির্দেশ মোতাবেক ব্লক ভিত্তিক তদারকি কমিটি গঠন করতে হবে এবং এই কমিটিতে স্থানীয় সংখ্যালঘু সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের রাখতে হবে।

এদিন এ ঘেরাও কর্মসূচি ও ডেপুটেশনে উপস্থিত ছিলেন সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সহ-সম্পাদক আলী আকবর, সহ সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান, জেলা নেতৃত্ব মনিরুল হক হামিদুল ইসলাম সহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.