নিউজ ডেস্ক :- নেই এর রাজত্ব এখন ত্রিপুরায় ,বিজেপির শাসনে অতিষ্ঠ জনগণ ,কড়া সমালোচনায় বিরোধী দল । দেশে গরিবের সংখ্যা বাড়ছে। বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। আর কয়েকটি পরিবার মুনাফা লুটছে। দেশে জনগণের সরকারের নেই, রয়েছে আরএসএস পরিচালিত বিজেপি সরকার। এভাবেই নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে কটাক্ষ করেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিআইএমের পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার। মঙ্গলবার তিনি বর্ধমান টাউন হল প্রাঙ্গণে এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রোল, ডিজেলের দাম কমছে। অথচ ভারতে পেট্রোল, ডিজেল ও গ্যাসের দাম বাড়ছে। আর আদানি, আম্বানিরা লাভবান হচ্ছে।
কেন্দ্রের কৃষিবিল নিয়েও তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন মানিক সরকার। কৃষক বিরোধী বিল পাশ করে বড় পুঁজিপতিদের হাত শক্ত করছে বিজেপি। কর্পোরেট সংস্থাগুলো সুবিধা পাবে। কৃষি আইন বাতিলের জন্য সারা ভারত কৃষকসভা আন্দোলন করছে মাসের পর মাস। কৃষক, শ্রমিক ছাত্র সবাই বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। আর বিজেপি ধর্মের মাধ্যমে আন্দোলনকে ভাগ করতে চাইছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি সরকার সাধারণ মানুষের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। ধর্মের নামে ভারতবর্ষকে যাতে ভাগ করতে না পারে তার জন্য ভারতে সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সংবিধানকে আক্রমণ করা হচ্ছে। সিপিআইএমের পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার আরও বলেন, কাশ্মীরে সংবিধান প্রদত্ত আইন তুলে দিল বিজেপি সরকার। ৩৭০ ধারা আইন বাতিল করে সংবিধানকে অমান্য করেছে বিজেপি। কাশ্মীরের বিধানসভার সঙ্গে আলোচনা না করেই ভেঙে দিল সরকার। জেলে ঢুকিয়ে দিল সেখানকার জনপ্রতিনিধিদের। আরএসএস পরিচালিত বিজেপি সরকার গোটা দেশকে হিন্দুরাষ্ট্র করতে চাইছে। সংবিধানে নাগরিকের অধিকারের কথা উল্লেখ করা আছে। বিজেপি সরকার হিন্দুত্বের ভাবনা তৈরি করেছে। নতুন নাগরিক আইনে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হল।দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তাদের অবদানকে অস্বীকার করা হচ্ছে। সুপ্রিমকোর্ট বাবরি মসজিদ মামলায় সঠিক রায় দেয় নি বলে মানিক সরকার মন্তব্য করেন। সুপ্রিম কোর্ট নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে নি। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এখন রাজ্য সভার সাংসদ। সর্বোচ্চ বিচারালয় এখন মাথা বিকিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে।
পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকেও এদিন একহাত নেন মানিকবাবু। তিনি বলেন কমিশন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে না। মানুষ ভোট দিতে পারছে না। ঘরছাড়া হতে হয়েছে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন কেউই সঠিক ভূমিকা পালন করছে না।
৩৪ মাস আগে ২৫ বছরের এক টানা সরকার ছিল ত্রিপুরায়। সেখানে এখন আরএসএস পরিচালিত বিজেপি সরকার। ত্রিপুরায় গরিব মানুষের ট্যাক্স আদায় করতে দিচ্ছে না সিপিএম সরকার। তাই তাকে সরাতে হবে। সেই জন্য ভোটের আগে থেকে ভিন রাজ্যের নেতা মন্ত্রীরা প্লেনে করে ত্রিপুরায় গেছে। সবাইকে চাকরী দেওয়া হবে। ঘরে ঘরে চাকরী দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করলো বিজেপি। চলো পাল্টাই। আরো ভালো ত্রিপুরা তৈরি করবো।কিন্তু এখন কি হলো ? অনেক মিটিং হল কাজের কাজ কিছুই হয় নি। এখন প্রতিশ্রুতি ভুলে গেছে। একশো দিনের কাজ নেই। গরিব মানুষ কাজ পাচ্ছে না। এখন ত্রিপুরায় একশো দিনের জায়গায় মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ দিন কাজ হচ্ছে। বিজেপি মণ্ডলের লোকেরা একশো দিনের কাজের টাকা লুট করছে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকারের মতো।ত্রিপুরার মানুষ এখন বলছে সর্বনাশ করেছি।সোনার ডিমের জন্য হাঁসটা মেরে ফেলেছি বলছেন ত্রিপুরার বাসিন্দারা। তাঁরা এখন আগামী ভোটের জন্য অপেক্ষায় আছেন।
এই রকম বিজেপি সরকার পশ্চিমবঙ্গে তৈরি করতে দেবেন না। তাহলে সর্বনাশ হয়ে যাবে বলে তিনি হুঁশিয়ারী দেন। ত্রিপুরায় কাটনানি কালচার চালু করেছে বিজেপি। সেখানে কারখানায় নোটিশ দিয়ে কাটমানি তুলছে বিজেপি এবং আরএসএস।
‘ফেরাতে হাল ধরো লাল’, এই স্লোগানকে সামনে রেখে মঙ্গলবার টাউনহলের প্রকাশ্য জনসভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক, সহ অমল হালদার, আভাষ রায়চৌধুরী প্রমুখ।
সৌজন্য :- সংবাদ প্রভাতী