সরস্বতী পূজায় বাজলো না মাইক, হলনা খিচুড়ি
———————————————-
সরস্বতী পূজার বাজেট ছেঁটে আগুনে ভস্মীভূত গৃহহীন পরিবারের হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দিল হিমাদ্রি মিশন
———————————-
নিজস্ব সংবাদদাতা, সন্দেশখালি : এবার সরস্বতী পূজায় বাজলো না কোনও মাইক, হলনা খিচুড়ি। সম্পূর্ণ অনাড়ম্বর ভাবে হল বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা সরস্বতীর পূজা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিমাদ্রি মিশনের খুদে পড়ুয়ারা তাদের টিফিন ও সরস্বতী পূজার সংগৃহীত টাকা বাঁচিয়ে সম্প্রতি আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত ঈশ্বর হরেন সর্দারের মাটির বাড়ি পুড়ে গৃহহীন ও সর্বস্বান্ত হওয়া পরিবারের হাতে সেই টাকা তুলে দিল। হিমাদ্রি মিশনের সদস্য/সদস্যারাও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। সরস্বতী পূজার পূর্ণ তিথিতে মোট নগদ ১০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয় আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গৃহহীন হয়ে যাওয়া দ্রৌপদী সরদারের হাতে। এই মহতি ঘটনাটি ঘটেছে প্রত্যন্ত সুন্দরবনের সন্দেশখালি থানার দুর্গামণ্ডপে।
৩০ জানুয়ারি রাতে সন্দেশখালি থানার দুর্গামণ্ডপে ঈশ্বর হরেন সরদার মাটির বাড়িটি আগুনে পুড়ে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়। সরকারি সাহায্য পৌঁছানোর আগেই ৩১ জানুয়ারি ঈশ্বর হরেন সরদারের বিধবা পত্নী দ্রৌপদী সরদার ও জমজ শিশুর পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিমাদ্রি মিশন।
এ প্রসঙ্গে দ্রৌপদী সরদার বলেন, ‘আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে আমার মাটির তৈরি ও খড়ের ছাউনি বাসগৃহটি। আমি এখন সম্পূর্ণ নিঃস্ব। হিমাদ্রি মিশন সঙ্গে সঙ্গে আমাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। পরের দিনই কম্বল, শাড়ি, জামা, প্যান্ট, চাল,ডাল, আলু তেল, সবজি প্রভৃতি দিয়েছিল। আজ হিমাদ্রি মিশন ১০ হাজার টাকা দিল ঘর তৈরির জন্য। মিশন পাশে না দাঁড়ালে ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে আমায় পথে দাঁড়াতে হত। ওরা এবার বড় করে সরস্বতী পূজা না করে সেই টাকা আমাকে দিয়েছে। আমার বিপদের দিনে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ওদের কথা আমার চিরদিন মনে থাকবে।”
এ প্রসঙ্গে হিমাদ্রি মিশনের সভাপতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সঞ্জিত জোতদার বলেন, “হিমাদ্রি মিশনের খুদে পড়ুয়ারা এ বছর সরস্বতী পূজা বড় করে না করে, শুধু ‘সরস্বতী প্রণাম’ সেরে পূজার টাকা ওই গৃহহীন ও সর্বশান্ত পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় । আমরা মিশনের সদস্য/সদস্যারাও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোই তো প্রকৃত ধর্ম। মানুষের মধ্যেই ভগবান বাস করেন। তাই আমরা নিয়ম রক্ষার মতো পূজা করে হিমাদ্রি মিশন-এর পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা ঐ গৃহহীন অসহায় মানুষের হাতে তুলে দিয়েছি ঘর তৈরির জন্য।”