নিউজ ডেস্ক:- একে করোনা মহামারি ,,এর বাংলা ওড়িষ্যাই আমফানের তান্ডব লীলা এবার আক্রমণ পঙ্গপালের সত্যিই দেশ আজ চরম সংকটে। ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসছে পঙ্গপাল! সেই ঝাঁক প্রায় আড়াই থেকে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ। একে লকডাউনের জের তার উপর পঙ্গপালের হামলায় মাথায় হাত উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের কৃষকদের। ফসল বাঁচাতে সতর্কতা অবলম্বন করল দুই রাজ্যের সরকার। কোথাও রাসায়নিক স্প্রে কোথাও বা ধাতব শব্দ করে পঙ্গপালের হাত থেকে রেহাই পেতে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন চাষিরা।
সম্প্রতি পঞ্জাবের পাকিস্তান সীমান্ত দিয়ে পঙ্গপাল দেশে ঢুকে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। আর সেই আশঙ্কা সত্যি করে দেশে ঢুকে পড়ল পঙ্গপালের দল। একেবারে মারাত্মক সংখ্যায় পঙ্গপালের আবির্ভাব ঘটেছে।
উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি জেলা প্রশাসন দমকল বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে রাসায়নিক নিয়ে প্রস্তুত থাকার জন্য। সেখানকার ক্ষেতে পঙ্গপাল ধেয়ে আসার কথা রয়েছে। এই পোকা শস্য ও সবজি ধ্বংস করে দিতে পারে দ্রুত। তাই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রাসায়নিক স্প্রে করে পঙ্গপাল নিধনের জন্য প্রস্তুত থাকতে।
জেলাশাসক সম্প্রতি এই বিষয়ে একটি বৈঠকও করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘গ্রামের সাধারণ মানুষকে বলা হয়েছে পঙ্গপালের গতিবিধি সম্পর্কে কন্ট্রোল রুমে খবর দিতে। যেখানে সবুজ ঘাস ও সবুজ ফসলের আধিক্য, পঙ্গপাল সেখানেই যায়। তাদের গতিবিধি সম্পর্কে বিস্তারিত জানলেই তা জানিয়ে দেওয়া হবে।”
সমস্যার হাত থেকে নিস্তার নেই ভারতের কৃষকদের। একের পর এক দুশ্চিন্তা ভাবাচ্ছে তাঁদের। করোনা আবহের মধ্যেই দেখা দিল পঙ্গপালের আক্রমণ। উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসিতে (Jhansi) জেলা প্রশাসন দমকল বাহিনীকে রাসায়নিক নিয়ে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। না তবে কোনও পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য নয়। এই প্রস্তুতি পঙ্গপালের জন্য। আড়াই থেকে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ পঙ্গপালের দলকে ধেয়ে আসতে দেখলেই রাসায়নিক স্প্রে করতে হবে। ক্ষেতের রবিশষ্য ও যে কোনও সবজিকে ধ্বংস করতে এই পোকা সিদ্ধহস্ত। তাই জেলাশাসকের তরফ থেকে দমকল বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পঙ্গপাল নিধনের জন্য রাসায়নিক স্প্রে নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে। ঝাঁসির জেলাশাসক অন্দ্র ভামসি সম্প্রতি এই বিষয়ে বৈঠক করেন। তিনি জানান, “গ্রামের মানুষদের এই পঙ্গপালের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। দেখতে পেলেই দ্রুত কন্ট্রোল রুমে খবর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সবুজ ঘাস ও সবুজ রঙের ফসল দেখলেই পঙ্গপাল আক্রমণ করছে। তাদের গতিবিধি লক্ষ্য করে কন্ট্রোল রুমে খবর দিতে বলা হয়।” রাজ্য কৃষি বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর কমল কাটিয়ার জানিয়েছেন যে, ক্রমেই এগিয়ে আসছে পঙ্গপালের ঝাঁক। তবে এগুলি আকারে যথেষ্ট ছোট। তিনি আরও বলেন, “আমরা খবর পেয়েছি, দেশে ২.৫ থেকে ৩ কিমি দীর্ঘ পঙ্গপালের ঝাঁক ঢুকে পড়েছে। রাজস্থানের কোটা থেকে একটি দল রাজ্যে আসছে পঙ্গপাল মোকাবিলায় সহায়তা করতে।” বর্তমানে ঝাঁসির বাঙ্গরা মগরপুরে রয়েছে এই ঝাঁক।
এর আগে পঙ্গপালের হামলার খবর এসেছে যোধপুর থেকে। যোধপুরের শিরমান্ডি গ্রামে শনিবার পঙ্গপালের দল হামলা চালায়। এই আতঙ্কের পূর্বাভাস আগেই ছিল। পেঁয়াজ, জোয়ার, বাজরা ও অন্যান্য শষ্যের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে বলে খবর। পঙ্গপালের দল হামলা চালাতে পারে, এই আতঙ্কের কথা প্রশাসনকে আগেই জানিয়েছিলেন চাষীরা। তবে সুরাহা হয়নি। শষ্যের ক্ষতি হওয়ার খবর এসেছে হিন্দুমালকোট এলাকার শ্রী গঙ্গানগর থেকেও।
পঙ্গপালের আক্রমণ থেকে নিস্তার পায়নি মধ্যপ্রদেশও (Madhya Pradesh)। বিগত ২৭ বছরের মধ্যে এই বছরেই রাজ্যে পঙ্গপালের আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বর্ষা পর্যন্ত এই পোকার বাড়বাড়ন্ত আরও বেশি হবে বলে জানা যায়। রাজ্য কৃষি বিভাগের তরফ থেকে জানানো হয়, “নিমাচ জেলা থেকে পঙ্গপালের ঝাঁক ঢুকে তা ক্রমেই এগিয়ে আসছে রাজধানী ভোপালের দিকে।”
রাজ্যের প্রতিটি কৃষকদের অ্যাডভাইসরি জারি করে সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকি পঙ্গপালের ঝাঁক দেখলেই শব্দ করে তা তাড়িয়ে দেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়। তাই ধ্বংসকারী এই পোকাকে তাড়াতে প্রতিটি ফসলের ক্ষেতে ড্রাম ও ধাতব বাসন মজুত রাখা হয়েছে। সন্ধে ৭ থেকে রাত ৯টার মধ্যে পঙ্গপালের দল ক্ষেতে হামলা চালাবে বলে সতর্কতা জারি করে রাজ্য কৃষি বিভাগের প্রধান। সেই হিসেবে প্রতিটি ক্ষেতে সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত পাহাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কৃষকরা। ক্ষেতের ফসল রক্ষা করতে রাতেও তারা জেগে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।