৫ নেতাকে বাড়তি দায়িত্ব , জেলা সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী , বললেন ঘাবড়ানোর কিছু নেই.

Spread the love

নিউজ ডেস্ক: – ‘ঘাবড়ানোর কোনও কারণ নেই।’ শুভেন্দু ‘পরবর্তী পর্বে’ কেন্দ্রের বঞ্চনা ও রাজ্য়ের উন্নয়নকে তুলে ধরতে এবার দলের কর্মীদের রাস্তায় নামার নির্দেশ দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় জেলায় রাজনৈতিক কর্মসূচি রূপরেখা তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। ৭ ডিসেম্বর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া , বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ ও মালদহে যাচ্ছেন দলনেত্রী নিজে। একসময়ে এই পাঁচ জেলায় তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।

আশঙ্কা ছিলই, দলের একেবারে শীর্ষস্তরে ভাঙন ধরল এবার। একের এক সরকারি পদ ছাড়ার পর শেষপর্যন্ত মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তাকে নিয়ে জল্পনা কি ইতি পড়ল? শুক্রবার বিকেলে কালীঘাটে নিজের বাড়িতে জরুরি বৈঠক ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে হাজির ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি, ফিরহাদ হাকিম। সূত্রের খবর, শুভেন্দুর পদত্যাগপত্র মুখ্যমন্ত্রী গ্রহণ করেছেন। তবে সরকারি পদ, এমনকী মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরেও এখনই বহিষ্কার করা হচ্ছে না তাঁকে। যে তিন দফতরের দায়িত্বে ছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক, সেই পরিবহণ, সেচ ও জলসম্পদ উন্নয়ন দফতর আপাতত সামলাবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। রাজ্যপালকে চিঠিও পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। আর সংগঠন? সেদিকেও কড়া নজর রাখছেন তৃণমূলনেত্রী।

মাঠে নেমে প্রচারের কাজটা আগেও যেমন করতেন, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও সেই একইভাবে করে থাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের বিধানসভা লড়াই কিছুটা কঠিন শাসকদলের কাছে, তা বুঝেই এবার রণকৌশল চূড়ান্ত করে নিলেন তিনি। শুক্রবার নিজের বাড়িতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জরুরি বৈঠকে ডেকে একাধারে নিয়ে নিলেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। প্রশাসনের পাশাপাশি দল কীভাবে এগোবে, তাও ঠিক করে দেন মমতা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সির মতো শীর্ষ নেতাদের সংগঠনের কাজে আরও বেশি করে মন দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিও নির্দেশ তাঁর। কোথাও কোনও ঢিলেমি নয়, একুশের লড়াইয়ের দামামা বাজিয়ে একথাই সকলকে বারবার করে বলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বিজেপির সাম্প্রদায়িক মনোভাবকে মূল প্রতিপক্ষ ধরে নিয়েই এগোতে হবে বলে জানান তিনি।
পুজোর আগে সংগঠনে রদবদলের সময়েই শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে খানিকটা দ্বিধায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই তাঁকে সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হলেও, একটা বিকল্প ব্যবস্থা ভাবা ছিল তাঁর। এবার সেই বিকল্পটিকেই সামনে এনে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল। জানা গিয়েছে, দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের সংগঠনের দায়িত্ব আবার তিনি দিয়েছেন সুব্রত বক্সির উপর। জেলায় জেলায় অন্য যাঁদের যা দায়িত্ব ছিল, সেইমতো কাজ চলবে এখন। তাঁর পাশাপাশি নেতাদেরও জেলা সফর করতে হবে, কাছে থেকে বুঝতে হবে পরিস্থিতি। শুক্রবারের বৈঠকে এমনই কয়েকদফা কর্মসূচি ঠিক করে দিয়েছেম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিকে, মালদহে দীর্ঘদিন দলের পর্যবেক্ষক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার তিনি মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরই মালদহে তৃণমূলের কোর কমিটিকে জরুরি তলব করা হয়েছে কলকাতায়। মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল এবং জেলার দুই প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ও কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরিকেও ডেকে পাঠানো হয়েছে। শনিবার কলকাতায় নিজের দপ্তরে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করবেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। হয়ত শুভেন্দুর অনুপস্থিতিতে দলকে কীভাবে চলতে হবে, তার রূপরেখা ঠিক করে দেওয়া হবে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, দফায় দফায় অন্যান্য জেলা নেতৃত্বকেও এই বার্তা দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.