রবিবার বহরমপুরে ভাঙছে অধীরগড়, তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন কংগ্রেসের টাউন সভাপতি ও ব্লক সভাপতি (পূর্ব)
রাজেন্দ্র নাথ দত্ত :মুর্শিদাবাদ:
মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস বড়সড় ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে । আর এই ভাঙনটা আবার যেখানে সেখানে নয়। একেবারেই ‘অধীর গড়’ বহরমপুর শহরে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে রবিবার ১৮ জুলাই কংগ্রেস ছেড়ে সদলবলে তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন বহরমপুর টাউন কংগ্রেস সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সাহা এবং সদ্য প্রাক্তন বহরমপুর ব্লক (পূর্ব) কংগ্রেস সভাপতি আশীষ দে। তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বহরমপুর গ্র্যান্ট হলে একটি অনুষ্ঠানে এক হাজারের কাছাকাছি কংগ্রেস কর্মীদের নিয়ে দলত্যাগ করতে চলেছেন এই দুই হেভিওয়েট নেতা।
সম্প্রতি অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে তাঁর অধীনে কাজ করবেন না বলে জানিয়েছেন প্রয়াত প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র-র পুত্র রোহন মিত্র। এর পাশাপাশি অধীরের নেতৃত্বে কাজ করতে অনিচ্ছুক জানিয়ে জেলার অনেক নেতাই কংগ্রেস হাই কমান্ডকে ইতিমধ্যে চিঠিও দিয়েছেন বলে জানা যায়।
বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখার্জি বলেন, ‘বিধানসভা নির্বাচনের পর মুর্শিদাবাদ জেলার আর কোনও কংগ্রেস কর্মী অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে কংগ্রেস দল করতে চাইছেন না। তাই দলে দলে কংগ্রেস কর্মীরা তৃণমূলে যোগদান করছেন।প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের ২২টি বিধানসভা আসনে কংগ্রেস একটি আসনও পায়নি। উল্টোদিকে তৃণমূল এযাবৎকালের সবচেয়ে ভাল ফলাফল করে মুর্শিদাবাদে ১৮টি আসনে জয়লাভ করেছে। দুটি আসনে নির্বাচন এখনও বাকি আছে। নাড়ুগোপাল বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জির উন্নয়ন এবং অভিষেক ব্যানার্জির সংগঠন চালানোর দক্ষতার জন্য কংগ্রেস এবং অন্য রাজনৈতিক দলের কর্মীরা তৃণমূলে যোগদান করছেন। আগামী দিনে মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস সংগঠন ধুলিসাৎ হয়ে যাবে। কংগ্রেসের দুর্দিনে যাঁরা দলের পাশে ছিলেন তাঁদের প্রতি অধীর চৌধুরী কোনও দিনই সুবিচার করেননি।তাঁর কথায়, বহরমপুর (পূর্ব) ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আশীষ দে এবং বহরমপুর টাউন কংগ্রেস সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সাহা তৃণমূলে যোগদান করতে চেয়ে তাঁর কাছে আবেদন করেছেন। দল সেই আবেদন মেনে নেওয়ায় রবিবার দুই শীর্ষ নেতাকে তৃণমূলে যোগদান করানো হবে। জেলার একটি সূত্র জানিয়েছে, আশীষ দে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করতে পারেন বুঝতে পেরেই জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব দু’দিন আগেই তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে বহরমপুর (পূর্ব) কংগ্রেস ব্লকটি তিনটি সাংগঠনিক ভাগে ভাগ করে তিনজনকে সভাপতি মনোনীত করেন।
প্রাক্তন বহরমপুর (পূর্ব) ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আশীষ দে দলত্যাগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘মুর্শিদাবাদ জেলায় সাধারণ মানুষ আর কংগ্রেস দল করতে চাইছেন না। আগামীদিনে এই জেলায় কংগ্রেসের পতাকা ধরার লোক থাকবে না।’ তাঁর কথায়, সমাজের সর্বস্তরের মানুষ মমতা ব্যানার্জির বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। কংগ্রেস কর্মীদের প্রবল চাপ থাকায় আমি তৃণমূলে যোগদান করছি।’
দলত্যাগের সত্যতা স্বীকার করেছেন বহরমপুর টাউন কংগ্রেস সভাপতি কার্তিক সাহাও। তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের হয়ে কাজ করতে আমি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু দলের ভেতর থেকেই আমায় কাজ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছিল। সেজন্যই আমি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রবিবার প্রায় একহাজার কর্মী ও সমর্থক নিয়ে আমি তৃণমূলে যোগদান করছি ।