পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারের পরই দুর্নীতিগ্রস্থ নেতাদের গ্রেফতারের দাবিতে সিপিএমের বিশাল মিছিল বেহালায়
চন্দন সেনগুপ্ত (বেহালা) : মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তার ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ায় পরই শনিবার (২৩ জুলাই) বেহালায় এক বিশাল মিছিল পথ পরিক্রমা করে। মিছিলে স্লোগান ওঠে “চোর ধরো, জেল ভরো…” পাশাপাশি তৃনমূলের দুর্নীতিগ্রস্থ নেতাদের গ্রেফতারের দাবিতেও সোচ্চার হন বাম নেতা-কর্মীরা।
প্রসঙ্গত: চাকরি বিক্রির অভিযোগে শুক্রবার (২২ জুলাই) একইসঙ্গে ১৩টি জায়গায় হানা দেয় এনফোর্সমেন্ট দপ্তর। তারমধ্যে হরিদেবপুর থানা এলাকায় ডায়মন্ড সিটি কমপ্লেক্সে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় নগদ ২১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ও প্রায় ৯০ লক্ষ টাকার সোনার গহনা। ইডি সূত্রে জানানো হয়েছে, এই টাকা চাকরি বিক্রির টাকা বলেই নিশ্চিত তারা। তবে বিশদে তদন্তের জন্য পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এইসঙ্গেই বহু জায়গায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আয় বহির্ভূত সম্পত্তিরও হদিশ মিলেছে বলে দাবি ইডি সূত্রের। এমনকি বোলপুরে মোনালিসা দাস নামের এক মহিলার সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা নিয়ে জড়িয়ে গিয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। সেখানেও হদিশ মিলেছে ১০টি ফ্ল্যাট ও ৩টি জমির। অভিযোগ, এগুলির মালিক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, তার জামাইয়ের ৪৫ কোটি টাকায় কেনা স্কুলের টাকাও জুগিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় — এমনই খবর সংবাদ সূত্রের।
আরও খবর, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন অর্পিতা। সেই সূত্রেই তাকে পার্থর পাড়ার ক্লাব “নাকতলা উদয়নে”র ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, তার ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের পরই আরও জোরালো ভাবে জড়িয়ে যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারের পরই শনিবার সন্ধ্যায় সিপিএমের এক বিশাল মিছিল পথে নামে। বেহালায় ১৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ড থেকে ডায়মন্ড হারবার রোড ধরে বেহালা চৌরাস্তা পর্যন্ত মিছিলটি পরিক্রমা করে। মিছিলে দাবি ওঠে তৃনমূলের সমস্ত দূর্নীতিগ্রস্থ নেতাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। স্লোগান ছিল “চোর ধরো, জেল ভরো…।”
সিপিএম নেতা কৌস্তুভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, চাকরি বিক্রি সহ সমস্ত দুর্নীতির টাকা কালীঘাটে জমা পড়েছে। তৃণমূল দলটা পাহাড় প্রমাণ দূর্নীতিতে ডুবে রয়েছে। কালীঘাটে ব্যানার্জী পরিবারের ৩৫ টা প্লট কোথা থেকে এলো, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। তিনি বলেন, কান টানলে মাথা আসবে। এই কারনেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেন।
সিপিএমের এই মিছিলে পদযাত্রায় অংশ নেন — কৌস্তুভ চট্টোপাধ্যায়, রত্না রায় মজুমদার, সমিতা হর চৌধুরী, রাজেশ চক্রবর্ত্তী, আশীষ বোস প্রমূখ নেতা-নেত্রী ও কর্মীরা।