হক সাহেবের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তৈরি হল ভাবতা রেলওয়ে স্টেশন ।
—————————————————————-
আজ প্রথম পর্ব :
১৯০৭ খ্রিস্টাব্দের ১০ ই ডিসেম্বর (বাংলা ১৩১৪ সন) রোজ মঙ্গলবার। ভাবতার ইতিহাসে একটি স্বর্ণোজ্জ্বল দিন। ঐ দিন প্রথম একটি ট্রেন দাঁড়ালো ভাবতা স্টেশনে। আর যাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমে এই স্টেশনটি নির্মিত হলো তিনি হলেন ভাবতার জমিদার শেখ মহরম আলী সাহেবের জৈষ্ঠ পুত্র ও শেখ আব্দুল আজিজ সাহেবের দাদা শেখ আব্দুল হক সাহেব। অথচ বেলডাঙা ও সারগাছি মধ্যে এই অল্প দূরত্বের ব্যবধানে রেল স্টেশন নির্মাণের কাজ অত সহজ ছিল না। অত্র এলাকার মানুষের সুবিধার্থে অক্লান্ত পরিশ্রম করে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছ থেকে স্টেশনটি ছিনিয়ে আনতে সমর্থ হন হক সাহেব। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে রানাঘাট – লালগোলা লাইনের কনস্ট্রাকশনের কাজ শুরু হয় এবং বছর দুয়েকের মধ্যে তা মধ্যে সম্পন্ন হয়। সে সময় বেলডাঙ্গার হাজী মোহাম্মদ ইউসুফ সাহেব ও হক সাহেব রেললাইনের একজন বড় কন্ট্রাক্টর ছিলেন। সেই সুবাদে রেলের ঊর্ধ্বতন অফিসার ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যথেষ্ট আলাপ-পরিচয় ছিল। উনাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ভাবতায় একটি ফ্ল্যাগ স্টেশনের ব্যবস্থা হয়। বর্তমানে যেখানে স্টেশনটি রয়েছে সেটি প্রথমে খড়ের ছাউনি দিয়ে তৈরি হয়। তবে অচিরেই একটি সমস্যা দেখা দেয়। ভাবতাকে একটি চিরস্থায়ী স্টেশন রূপে প্রতিষ্ঠা করতে গেলে ও স্টেশনটিকে টিকিয়ে রাখতে গেলে যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি ও আয় বৃদ্ধি করতে হবে। অথচ যাত্রীসংখ্যা ও আয় নিতান্তই সামান্য। ফলে ভাবতে স্টেশনকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে হক সাহেব নিজের পকেট থেকে রেলভাড়া অর্ধেকাংশ বহন করতেন। শোনা যায় ট্রেন ভাবতা স্টেশনে দাঁড়ালে চালক হক সাহেব কলিকাতা যাবেন কিনা তা খোঁজ নিতেন। হক সাহেবের আগমনের সংবাদ পেলে তিনি না আসা পর্যন্ত ট্রেন স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতো।