২০১৯ লোকসভা নির্বাচনেই কংগ্রেস-তৃণমূল-বামেদের ভোট ভাগাভাগিতে ১০ আসনে বিজেপি জয়লাভ করে

Spread the love

২০১৯ লোকসভা নির্বাচনেই কংগ্রেস-তৃণমূল-বামেদের ভোট ভাগাভাগিতে ১০ আসনে বিজেপি জয়লাভ করে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজ্যে সাম্প্রদায়িক বিজেপিকে জায়গা করে দিতে বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতি যতটা সুফল দিচ্ছে পরিসংখ্যান বলছে রাজ্যের প্রধান তিন ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল তৃণমূল, কংগ্রেস, বামেদের ভোট ভাগাভাগি তার দ্বিগুণ পরিমাণে দায়ী। এই দলগুলির নেতা কর্মীরা, ভোট ভাগাভাগিতে বিজেপির সুবিধা হচ্ছে বলে তুলনামূলক ছোট দলগুলিকে দোষারোপ করে আসছে। সম্প্রতি বিহার ভোট নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী তা নিয়ে বারে বারে সরব হয়েছেন। অথচ ফলাফলের তথ্যে অধীর চৌধুরীর মন্তব্যের সত্যতা দেখা যায় নি। শুধুমাত্র নিজেদের দূর্বলতা ঢাকার জন্য তুলনামূলক ছোট দলগুলির উপর দোষারোপ।

পরিসংখ্যান বলছে ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস ও বামেদের ভোট কাটাকাটিতে বিজেপি ১০ টি আসনে জয়লাভ করেছে। বিজেপি ১৮ টি আসনে জয়লাভ করেছে। তারমধ্যে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর ভোট কাটাকাটিতেই বিজেপি ১০ আসনে জয়লাভ করেছে। অধীর চৌধুরীরাই প্রত্যক্ষভাবে বিজেপিকে রাজ্যে সুযোগ করে দিচ্ছেন। আর দোষ দেওয়ার আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছেন তুলনামূলক ছোট দলগুলিকে।

কেন্দ্র: বর্ধমান-দূর্গাপুর/ ২৪৩৯ ভোটে জয়ী বিজেপি
এস এস আলুওলিয়া- বিজেপি- ৫৯৮৩৭৬
মমতাজ সংঘমিত্রা- তৃণমূল- ৫৯৫৯৩৭
আভাস রায়চৌধুরী- সিপিআইএম- ১৬১৩২৯
রণজিৎ মুখার্জি- কংগ্রেস- ৩৮৫১৬

কেন্দ্র: ব্যারাকপুর/১৪৮৫৭ ভোটে জয়ী বিজেপি
অর্জুন সিং- বিজেপি -৪৭২৯৯৪
দ্বিণেশ ত্রিবেদী- তৃণমূল – ৪৫৮১৩৭
গার্গী চ্যাটার্জী- সিপিআইএম- ১১৭৪৫৬
মুহাম্মদ আলম- কংগ্রেস- ১৫৭৪৬

কেন্দ্র: ঝাড়গ্রাম/ ১১৭৬৭ ভোটে জয়ী বিজেপি
কুনার হেমব্রম- বিজেপি- ৬২৬৫৮৩
বীরবাহা সোরেন – তৃণমূল- ৬১৪৮১৬
দেবলীনা হেমব্রম- সিপিআইএম- ৭৫৬৮০
যোগেশ্বর হেমব্রম- কংগ্রেস- ২০৭৪৫

কেন্দ্র: বালুরঘাট/ ৩৩২৯৩ ভোটে জয়ী বিজেপি
সুকান্ত মজুমদার- বিজেপি- ৫৩৯৩১৭
অর্পিতা ঘোষ- তৃণমূল- ৫০৬০২৪
রণেন বর্মন- আরএসপি- ৭২৯৯০
সাদেক সরকার- কংগ্রেস- ৩৬৭৭৩

কেন্দ্র: হুগলি/৭৩৩৬২ ভোটে জয়ী বিজেপি
লকেট চ্যাটার্জী- বিজেপি- ৬৭১৪৪৮
রত্না দে নাগ- তৃণমূল- ৫৯৮০৮৬
প্রদীপ সাহা- সিপিআইএম- ১২১৫৮৮
প্রতুলচন্দ্র সাহা- কংগ্রেস- ২৫৩৭৪

কেন্দ্র: বিষ্ণুপুর/ ৭৮০৪৭ ভোটে জয়ী বিজেপি
সৌমিত্র খাঁ- বিজেপি- ৬৫৭০১৯
শ্যামল সাঁতরা- তৃণমূল- ৫৭৮৯৭২
সুনীল খাঁ- সিপিআইএম- ১০২৬১৫
নারায়ণ চন্দ্র খাঁ- কংগ্রেস- ১৭৯৩২

কেন্দ্র: রায়গঞ্জ/ ৬০৫৭৪ ভোটে জয়ী বিজেপি
দেবশ্রী চৌধুরী- বিজেপি- ৫১১৬৫২
কানাইলাল অগ্রবাল- তৃণমূল- ৪৫১০৭৮
মহম্মদ সেলিম- সিপিআইএম- ১৮৩০৩৯
দীপা দাসমুন্সী- কংগ্রেস- ৮৩৮৬২

কেন্দ্র: মালদা উত্তর/ ৮৪২৮৮ ভোটে জয়ী বিজেপি
খগেন মুর্মু- বিজেপি- ৫০৯০২৪
মৌসম নূর- তৃণমূল- ৪২৫২৩৬
ইশা খান চৌধুরী- কংগ্রেস- ৩০৫২৭০
বিশ্বনাথ ঘোষ- সিপিআইএম- ৫০৪০১

কেন্দ্র: বনগাঁ/ ১১১৫৯৪ ভোটে জয়ী বিজেপি
শান্তনু ঠাকুর- বিজেপি- ৬৮৭৬২২
মমতা ঠাকুর- তৃণমূল- ৫৭৬০২৮
অলোকেশ দাস- সিপিআইএম- ৯০১২২
সৌরভ প্রসাদ- কংগ্রেস- ২২৬১৮

কেন্দ্র: কোচবিহার/৫৪২৩১ ভোটে জয়ী বিজেপি
নিশীথ প্রামাণিক- বিজেপি- ৭৩১৫৯৪
পরেশচন্দ্র অধিকারী- তৃণমূল- ৬৭৭৩৬৩
গোবিন্দ চন্দ্র রায়- ফরওয়ার্ড ব্লক- ৪৬৬৪৮
পিয়া রায় চৌধুরী- কংগ্রেস- ২৮২১৫

 

লোকসভা নির্বাচনের তথ্য বিশ্লেষণ করে রাজনৈতিক মহলের স্পষ্ট বক্তব্য আগামী ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপিকে পরাস্ত করতে হলে রাজ্যের বিজেপি বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ ছোট বড়ো সব রাজনৈতিক দল একজোট হতে হবে। এই উদ্যোগে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসকে কিছুটা ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। যদি রাজ্যে বিজেপি বিরোধী ঐক্য তৈরি না হয় এবং বিরোধীরা সব কেন্দ্রে আলাদা আলাদা প্রার্থী দেয় তাহলে মুসলিম অধ্যুষিত বিধানসভা এলাকা বাদ দিয়ে অন্য কেন্দগুলিতে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের জয়লাভ করা একেবারেই অসম্ভব। কারণ কম শক্তিশালী বিরোধী দলগুলি সংখ্যাগুরু অধ্যুষিত এলাকায় বিরাট সংখ্যক ভোট না পেলেও প্রধান বিরোধী দলকে হারিয়ে দেওয়ার জন্য যে ভোটের প্রয়োজন তা ঠিক অর্জন করে নেবে। এখন দেখার রাজ্যে বিজেপিকে আটকানোর জন্য বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কতটা সদিচ্ছা আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.