এ কেমন আধুনিক সভ্যতা প্রতিবন্ধী মহিলাকে বলি দেওয়ায় চেষ্টা বিজেপি নেত্রীর

Spread the love

নিউজ ডেস্ক, অয়ন বাংলা:- এই অত্যাধুনিক যুগেও নরবলি দেওয়ার চেষ্টা ,এ যে মধ্যযুগীয় বর্বরতা ।তিন দিন আগে নরবলি দেওয়ার জন্য প্রতিবন্ধী এক মহিলাকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল আলিপুরদুয়ারের ভাটিবাড়ির দক্ষিণ পারোকাটাতে। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এ বার বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা মহিলা মোর্চার অন্যতম সহ সভাপতি মঞ্জু দাসকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঞ্জুর দাবি, ‘‘আমাকে ফাঁসিয়েছে তৃণমূল।’’ তৃণমূল ওই নেত্রীর কড়া শাস্তির দাবি তুলেছে। পাশাপাশি তারা নালিশ করছে, ওই প্রতিবন্ধী মহিলার উপরে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। যদিও বিজেপির সেই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তবে বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা সাফ বলেন, ‘‘ধৃত মঞ্জু যদি দোষ করে থাকেন, তবে দল তাঁর পাশে দাঁড়াবে না।’’
ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, এক পুরোহিতের কথায় ওই মহিলাকে তাঁরা কোচবিহারের একটি মন্দিরে নিয়ে যেতে চাইছিল। তাদের কথাবার্তা শুনে সন্দেহ হয়, ওই মহিলাকে বলি দেওয়াই উদ্দেশ্য থাকতে পারে ধৃতদের। প্রথম থেকে যে সন্দেহ প্রকাশ করে আসছেন মহিলার আত্মীয়রা। কিন্তু যে পুরোহিতের কথা মতো ওই মহিলাকে ধৃতরা অপহরণের চেষ্টা করেছিল, তার সন্ধান অবশ্য এখনও পায়নি পুলিশ। কিন্তু তার মধ্যেই মঙ্গলবার ওই এলাকা থেকে মঞ্জুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিজেপির জেলা সহ সভাপতির পদে থাকা মঞ্জুর বিরুদ্ধে মানব পাচারের চেষ্টা সহ একাধিক অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, গত শনিবার একটি ছোট গাড়িতে করে চার-পাঁচ জন ভাটিবাড়ির দক্ষিণ পারোকাটা গ্রামে যান। ওই গ্রামেই বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন মাঝ বয়সী ওই প্রতিবন্ধী মহিলা। অভিযোগ, গাড়িতে আসা চার-পাঁচ জন মিলে মহিলাকে মন্দিরে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা তাঁদের ঘিরে ধরে। বাকিরা পালিয়ে গেলেও এলাকার লোকজনের হাতে হাতে ধরা পড়ে যান তিন জন। যাঁদের ভাটাবাড়ি ফাঁড়ির পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, গাড়িতে করে ধৃতরা প্রথমে মঞ্জুর বাড়িতেই গিয়েছিল। সেখান থেকে মঞ্জুই তাদের ওই প্রতিবন্ধী মহিলার বাড়িতে নিয়ে যায়। তবে মঞ্জু জানান, ওই তিন যুবক প্রথমে তাঁকে জানিয়েছিলেন, প্রতিবন্ধী মহিলাকে চাকরি দেবে। কিন্তু মঙ্গলবার যখন প্রতিবন্ধী মহিলার বাড়িতে তাঁরা যান, তখন তাঁকে তাঁরা পুজো পাঠের কথা বলেন। মঞ্জুর দাবি, ‘‘এরপর আমিই ওই তিন জনকে সেখানে আটকে রেখে পুলিশের হাতে তুলে দেই। কিন্তু এলাকায় একমাত্র আমিই বিজেপির সঙ্গে যুক্ত থাকায় তৃণমূলের লোকেরা আমায় ফাঁসিয়ে দিল।’’
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্তে যে পুরোহিতের কথা উঠছে তাঁকেও ধরার চেষ্টা চলছে।’’ বিজেপির আলিপুরদুয়ার ২ ব্লক সভাপতি দেবজিৎ সরকারের অভিযোগ, ‘‘নির্বাচনে জেতার আগে এরা শিশু পাচার করত। আর একটা নির্বাচনে কয়েকটা আসন জিততেই এ বার মহিলাদের ধরে নরবলি দিতে চাইছে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘এ দিন এলাকার বিজেপির নেতা-কর্মীরা ওই প্রতিবন্ধী মহিলার বাড়িতে গিয়ে তাঁকে অভিযোগ তুলতে চাপ দেন।’’
ছবি :- প্রতিকী
সৌজন্য :-আনন্দবাজারপত্রিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.