“কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালায়
(২৪২ বছরের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস)
মিরাজুল ইসলাম ,গবেষক আলিয়া বিশ্ববিদ্যালায়,
প্রতিবেদন :- আজ থেকে প্রায় ২৪২ বছর আগে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয় (১৭৮০)। ভারত তথা এশিয়া মহাদেশের প্রথম সরকারি সহায়তা ও অর্থানুকূল্যে গঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০ বছর পরে ফোর্টউইলিয়াম এবং ৩৭ বছর পরে বেসরকারি হিন্দু কলেজ বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ফোর্ট উইলিয়ামে সিভিলিয়ান ছাত্র, হিন্দু কলেজে ভদ্র হিন্দু সন্তান এবং অন্য দিকে অভিজাত মুসলিম পরিবারের সন্তানদের বিদ্যাচর্চার জন্য কলকাতা মাদ্রাসা গঠিত হয়।
উদ্দেশ্য –
১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধে বাংলার স্বাধীনতার শেষ সূর্য অস্ত যায়। শাসন ইংরেজ কোম্পানির হাতে। কিন্তু এতদিন ধরে চলে আসা শিক্ষা, আইন কানুন, বিচার আদালত, রাজস্ব ব্যবস্থা সবটা চাইলে রাতারাতি পরিবর্তন করা সম্ভব ছিলোনা ইংরেজ সরকারের। অতীতকে সামনে রেখেই বর্তমান পরিচালনা করতে হবে। মুসলিম পরিবারের ছেলে মেয়েদের আরবি, ফারসি ও মুসলিম আইন সম্পর্কে শিক্ষিত করে সরকারি, ফৌজদারি ও দেওয়ানি আদালতের বিচার বিভাগ রাজস্ব বিভাগ সহ বিবিধ দপ্তরে কর্মচারী তৈরি করা ছিলো কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার উদ্দেশ্য।
শিক্ষক সমাজ –
কলকাতা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করার জন্য একদল বিদ্বৎ সমাজ হেস্টিং সাহেবের কাছে দরবার করেন। তাঁদের মতে কলকাতায় আগন্তুক মজউদ্দিন ইসলামি আইন ও বিজ্ঞানে অসাধারণ পান্ডিত্যের অধিকারি তাকে দিয়ে মুসলিম পরিবারের সন্তানদের বিদ্যাদানের ব্যবস্থা করা হক। সেই হিসাবে হেস্টিং সাহেবের অনুমতি ও সহযোগিতায় মজিউদ্দিন সাহেবের হাত ধরে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার পথ চলা শুরু হয়। তাঁর বেতন ছিলো 400 টাকা। পরবর্তীতে আরও যারা হেড মৌলবী হিসাবে যোগদান করেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন -মৌলবি মোহাম্মদ ইসরাইল, মৌলবি গিয়াসুদ্দিন, মৌলবি মোহাম্মদ ওয়াজিহ, মৌলানা আব্দুল হক খয়রাবাদী প্রমুখ। প্রথম দিকে শুধু আরবি ফারসি পড়ানো হলেও পরবর্তীতে বাংলা ও ইংরেজি ভাষা মাদ্রসার পাঠ্য সূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ইংরেজি শিক্ষার জন্য প্রথমে জে হোকিন্স (১৮২৯) পরে মি ওয়েবকে নিযুক্ত করা হয়। ১৮৫০ এর পূর্বে মাদ্রাসার প্রধান দায়িত্বশীল থাকতেন সেক্রেটারি। ১৮৫০ সালে ওই সেক্রেটারির পদ তুলে দিয়ে প্রিন্সিপালকে মাদ্রাসার প্রধান করা হয়। ড. অ্যালায়ন স্পেঙ্গার হলেন মাদ্রাসার প্রথম প্রিন্সিপাল। ১৮৩৫ ও ১৮৪৭ সালে অ্যাংলো ফারসি বিভাগ অ্যাংলো আরবি বিভাগ নামকরণ করে মাদ্রাসার আরও দুটি বিভাগ খোলা হয়। এই সব বিভাগকে কেন্দ্র করে প্রচুর অমুসলিম শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। বাবু নন্দলাল দাস, বাবু নবীন চন্দ্র ঘোষ,বাবু ক্ষিতিশ চন্দ্র ঘোষ, জয়গোপাল শর্মা, রাম প্রসন্ন শর্মা, কেদারনাথ মুখোপাধ্যায়, কান্তি চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। এই চিত্র দেখে আমাদের কাছে পরিষ্কার যে মাদ্রাসায় অসাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তি নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ করা হত। সেখানকার পঠন পাঠনও সাম্প্রদায়িক ছিলো তাতে সন্দেহ নেই।
ছাত্র-
মাদ্রাসা যেহেতু অভিজাত পরিবারের সুপারিশে প্রতিষ্ঠিত হয়, তাই সেখানে প্রথমে অভিজাত পরিবারের সন্তানরাই পড়াশোনার সুযোগ পেতেন। প্রথম বছর ৪০ জন ছাত্র নিয়ে মাদ্রাসার যাত্রা শুরু হয়। ছাত্ররা অধিকাংশ বঙ্গদেশের ছিলেন, তবে লাহোর, রেঙ্গুন, কাশ্মীর, গুজরাট, কর্ণাটক, সহ গোটা মধ্যে এশিয়া থেকে ছাত্ররা পড়তে আসতেন। প্রতিবছর গড়ে ৩০০ ছাত্র মাদ্রাসা থেকে শিক্ষালাভ করে, উনিশ শতকের শেষপর্যন্ত ছাত্র সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৩৬০০০ জন।
কিছু কৃত্তি ছাত্র-
১৮৪২ সালে কলকাতা মাদ্রাসায় জুনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষা চালু হয়,১৮৪৬ সালে আব্দুল লতিফ ও ওয়াহিদুন্নবি ওই পরীক্ষায় পাশ করেন। তাঁরা উভয়ে ডেপুটি মেজিস্ট্রেট হয়েছিলেন। আব্দুল লতিফ ১৮৭৭ সালে কলকাতার চিফ প্রেসিডেন্সি মেজিস্ট্রেটের পদে উন্নীত হন। এছাড়াও এই প্রতিষ্ঠানের দুই কৃতি ছাত্র দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদ সামলেছেন। হোসেন শহীদ সোহরা ওয়ার্দি বাংলা ও পাকিস্তানের প্রিমিয়ার, ও মুহাম্মদ আলি চৌধুরী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন, বিজ্ঞানী কুদরত ই খুদা প্রমুখ। পাশাপাশি মাদ্রাসা থেকে বেশকিছু আইনজীবী, শিক্ষক, পন্ডিত তৈরি হয়।
শিক্ষাসূচি ও পাঠ্যপুস্তক –
যেসব মুসলিম অভিবাবক মাদ্রাসা স্থাপনের আবেদন জানায় তাঁদের উদ্দেশ্য ছিলো মুসলিম আইন ও বিজ্ঞান সমূহ পাঠ দান করা। অন্যদিকে সরকারের উদ্দেশ্য ছিলো বিচার বিভাগ, প্রশাসন বিভাগ, ও রাজস্ব বিভাগের সুদক্ষ কর্মচারী গড়ে তোলা। ইংরেজ সরকার প্রথম দিকে মুসলিম আইন ও হিন্দু আইন অনুসারে রাজস্ব ও বিচার বিভাগের কাজ পরিচালনা করেন। তাই রাষ্ট্রীয় কাজে আরবি ফারসি শিক্ষার প্রয়োজনীতা ছিল। সেই প্রয়োজনীতাকে সামনে রেখে কলকাতা মাদ্রাসার পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হয়। পাঠ্যসূচিতে ছিলো দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, আইনশাস্ত্র, জ্যোতিষশাস্ত্র, জ্যামিতি, গণিত, তর্কবিদ্যা, অলংকার শাস্ত্র, ব্যাকরণ। তালিকায় ধর্মতত্ত্ব ছাড়া বাকি প্রতিটি বিষয় ব্যবহারিক জ্ঞান বিজ্ঞান বিষয়ে। ধর্ম শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ছিলো ছাত্রদের নৈতিক মূল্যবোধের উন্নতি সাধন, মোল্লা তৈরি নয়। পরবর্তীতে বাংলা ও ইংরেজি পাঠ্যসূচীর অন্তরভুক্ত হয়। এশিয়ার মধ্যে প্রথম এই মাদ্রাসা তে ১৮২৬ সালে পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয়। ১৮২৬ সালে শুরু হয় চিকিৎসা বিদ্যা অ্যানটোমি বিভাগ,এই বিভাগটিও ভারতের প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠানে খোলা হয়। হিন্দু ধর্মমতে মৃতদেহ অশৌচ, তাই অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান লাশ কাঁটা ছেঁড়া ও পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য রাজি হয়নি। কলকাতা মাদ্রাসা এগিয়ে আসে এই বিভাগ প্রতিষ্ঠায়। ১৮৩৫ সালের পূর্বে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের প্রস্তুতি কিন্তু এই ১৮২৬ সালের কলকাতা মাদ্রাসার অ্যানটোমি বিভাগ। মেডিক্যাল কলেজ হলে এই বিভাগটি ট্রান্সফার হয়ে চলে যায়। সেই সময় মাদ্রাসার বহু ছাত্র মেডিক্যাল পড়ার সুযোগ পায়। সময়ের সাপেক্ষে বিভিন্ন সুপারিশে মাদ্রাসা শিক্ষা ও পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন আসে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ যোগ্য সিলেবাস, পঠন পাঠন সহ সার্বিক উন্নতিকল্পে কমিটি ও কমিশন তৈরি হয়েছে যেমন ১৯৩৫,১৯২৩,১৯৩১,১৯৩৮,১৯৪৬ প্রভৃতি।
আলিয়া মাদ্রাসার সংকট-
১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহ হয়, তাতে মুসলমানরা যথেষ্ট অংশ নেয়। ইংরেজ সরকার মনে করেন সিপাহি বিদ্রোহে কলকাতা মাদ্রাসার বিশেষ ভূমিকা আছে এবং সারা বাংলাদেশের মুসলমান অধিবাসির অন্তরে ইংরেজ বিদ্বেষ তৈরি করছে এই মাদ্রাসা। রাজনৈতিক বিপদ ও রাজদ্রোহীতার আখড়া এই মাদ্রাসা, এই আশঙ্খ্যা থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৮৬০ সালে ১৮০০ ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবেদন লিপি জমা দেওয়া হয় সরকারকে মাদ্রাসা খোলার আর্জি জানিয়ে। ১৮৬০ সালে আবার মাদ্রাসা চালু হয়।
১৯৪৭ সালের দেশভাগ মাদ্রাসাকে আরও একবার সংকটের মুখে ফেলে দেয়। সেপারেশন কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী আলিয়া মাদ্রাসার যাবতীয় বইপত্র, নথিপত্র, পাণ্ডুলিপি, সম্পত্তি ঢাকা মাদ্রাসায় স্থানান্তরিত হয়। শুধুমাত্র ইট কাঠ পাথরের স্তুপ রেখে যায়। স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী মৌলানা আবুল কালাম আজাদের উদ্যোগে আবার আলিয়া মাদ্রাসার পরিকাঠামো পুনরায় গঠিত হয় এবং পঠন পাঠন শুরু হয়।
ছাত্রবাস-
১৭৮০ থেকে ১৮৯৬ পর্যন্ত কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার কোনো নির্দিষ্ট ছাত্রবাস ছিলোনা। যারা বাইরে থেকে পড়তে আসতো তাঁদের বেশিরভাগ অন্যের গৃহে জাইগির থেকে পড়াশোনা করতো। জাইগির দিতেন সমাজের নিন্মশ্রেণীর মানুষজন। যেমন দোকানদার, খানসাম, বাবুর্চি, কসাই প্রভৃতি। এদের হাতে টাকা ছিলো কিন্তু শিক্ষার লোক ঐতিহ্য ছিলোনা। অনেক ছাত্র আবার ইংরেজ ভদ্রলোক অধীনস্ত খানসামাদের ঘরে আশ্রয় নিয়ে লেখাপড়া করতো। দীর্ঘপ্রতীক্ষার পরে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার নিজস্ব সরকারি ছাত্র আবাসন গড়ে উঠে ১৮৯৬ সালে। নাম দেওয়া হয় ‘এলিয়ট’ হোস্টেল। এই হোস্টেল আজও বর্তমান এবং সেখানে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা থাকেন।
কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়-
২০০১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তৎকালীন রাজ্যপাল বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. এ আর কিদোয়াই এর নেতৃত্বে মাদ্রাসা শিক্ষা কমিটি গঠিত হয়। ২০০২ সালে এই কমিটি আলিয়া মাদ্রাসার উন্নতিকল্পে অনেক গুলি সুপারিশ পেশ করেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমদের শিক্ষাক্ষেত্রে সেই সুপারিশ খুব একটা প্রভাব ফেলেনি। ২০০৬ সালের সাচার কমিটির রিপোর্টে তার নগ্ন চিত্র ধরা পড়ে। এবার তৎকালীন সরকার নড়ে চড়ে বসে। ২০০৭ সালে পার্লামেন্টে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইন (Act XXVII2007)পাশ হয়। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ৫ ই এপ্রিল কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসাকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে ঘোষণা করেন। মাত্র কয়েকটা বিভাগ ও ভাড়া বাড়িতে যাত্রা শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের। বর্তমানে মোট ২৩ টি বিভাগ,২৯৭ টি শিক্ষক পদ তৈরি হলেও এই পর্যন্ত ১৮০ জন অধ্যাপক রয়েছেন। বর্তমানে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় পশ্চিমবঙ্গের ৪২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৫ তম স্থান অধিকার করে নিতে পেরেছে। বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার মোট ১৪ বছরের যাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয় নিজেকে গবেষণায়, সামাজিক দায়বদ্ধতায়, কর্মসংস্থানে ছড়িয়ে দিতে পেরেছে। বহু ছাত্র কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সহ স্কুলে শিক্ষকতা করছেন, গবেষণার জন্য উড়ান দিচ্ছে বিদেশে, ভারতের বড়ো বড়ো IIT কলেজ গুলিতে রিসার্চ করার সুযোগ পাচ্ছে এখানকার ছাত্ররা, প্রতি বছর অজস্র ছাত্র নেট, সেট, গেট, পাস করছেন, ক্যাম্পাসিং এর মাধ্যমে দেশ বিদেশের বহু নামি দামি কোম্পানিতে চাকরি পাচ্ছেন এখানকার পড়ুয়ারা। গবেষক ও অধ্যাপকদের রিসার্চ পেপার প্রকাশিত হচ্ছে বহু উচ্চমানের জার্নালে। পূর্বে যেমন কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা চড়াই উৎরাই এর মধ্যে দিয়ে গেছে, কখন আবার বন্ধ হয়ে গেছে আজও তার উত্তরাধিকার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংকট মুক্ত নয়। আলিয়ার আকাশ কালো মেঘে ঢাকা। আলিয়া যেন কালো মেঘে ঢাকা তাঁরা। অর্থনৈতিক সংকট, প্রশাসনিক দুর্বলতা, গোষ্ঠীকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক লালসা, নানা কবলের শিকার এই আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। নেই পর্যাপ্ত হোস্টেল, ফেলোশিপ, ল্যাব লাইব্রেরি, ক্লাস রুম, জার্নাল, পানীয় জল, লিফ্ট, শিক্ষক সহ বহু সমস্যায় জর্জরিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হাত ধরেই পশ্চিমবঙ্গের গরিব সংখ্যালঘু পরিবারের ছেলে মেয়েরা উচ্চশিক্ষা সহ গবেষণাতে সুযোগ পাচ্ছে। এগিয়ে যাচ্ছে মুসলিম সমাজ, ভূমিকা নিতে চলেছে দেশ ও দশের সংগঠক হিসাবে। এই উদিয়মানতাই কি আলিয়ার আকাশে শনি হয়ে দেখা দিচ্ছে? তার সাফল্যই কি তার অশনি সংকেত? কারো কাছে কি শিরোপীড়ার কারণ হয়ে উঠছে? তাই কি আলিয়া কে পরিকল্পিত ভাবে বন্ধ কিংবা ধ্বংস করে দেওয়ার ফাঁদ পাতা হচ্ছে? চক্রান্তের এই চক্রবুহ্য থেকে আমাদের সুকৌশলে বেরিয়ে আসতে হবে। সংকট মুক্ত করতে হবে প্রাণ প্ৰিয় এই প্রতিষ্ঠানকে। এর জন্য এগিয়ে আসতে হবে আপামর সুধীসমাজকে। কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার ৩৭ বছর পরে গড়ে উঠা হিন্দু কলেজ আজকের প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় আজকে গোটা বিশ্বের দরবারে পৌঁছে গেছে। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কোথায়? আলিয়া কি পারবেনা বিশ্বের দরবারে নিজেকে পৌঁছে দিতে? এশিয়া মহাদেশের প্রথম প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান কি পারবেনা এশিয়া মহাদেশের প্রথম স্থান অধিকারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে নিজেকে প্রকাশ করতে? এর জন্য এগিয়ে আসতে হবে সরকার কে। শুধুই প্রতিশ্রুতি নয়, কাজে পরিণত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিকাঠামোর শ্রীবৃদ্ধিতে জোর দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। আমরা বিশ্বাস রাখি আলিয়া একদিন পারবে তার সমস্ত সংকট ঘুচিয়ে দেশ ও দশের বুঁকে গৌরবের ভূমিকা নিতে।