ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক প্রথমসারির একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ওয়াশিংটন এবং দিল্লি-ভিত্তিক সেন্টার ফর ডিজিজ, ডিনামিক্স, ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিসির ডিরেক্টর রামানন লক্ষ্মীনারায়ণন বিবিসিকে জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মহামারীর পরবর্তী ‘হট-স্পট’ হতে চলেছে ভারত। তাঁর কথায়, ‘অতি জরুরি ভিত্তিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সুনামির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে ভারতকে।
সংবাদ সংস্থা বিবিসির এক প্রশ্নের উত্তরে রামানন জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্রেট ব্রিটেনে আক্রান্তের সংখ্যা অনুমান করতে যে গাণিতিক সূত্র অনুসরণ করা হয়েছে, ভারতের ক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করা হলে, কমপক্ষে ৩০ কোটি জনগণের প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।
তাঁর ধারণা, আক্রান্ত ৩০ কোটির মধ্যে ৪০ থেকে ৮০ লক্ষ মানুষের শারীরিক অবস্থা জটিল আকার নিতে পারে। যাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
নারায়ণন মনে করেন, ভারতে এখনও পর্যন্ত যত জন করোনায় আক্রান্ত বলে দাবি করা হচ্ছে, প্রকৃত সংখ্যাটা তার তুলনায় অনেকই বেশি। তাঁর ধারণা, লোকজনের পরীক্ষা কম হচ্ছে বলেই করোনা আক্রান্তদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না।
এই বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘এখন করোনা যে দেশগুলিতে মহামারীর আকার নিয়েছে, ভারত তার থেকে দু-সপ্তাহ পিছিয়ে রয়েছে। ফলে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইতালি, স্পেন বা চিনের মতো পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি ভারতেও হতে চলেছে।’ জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণেই ভারত করোনা সংক্রমণের ভয় বেশি।
করোনা মহামারী সামলাতে ভারতে কতটা প্রস্তুত তা নিয়ে সন্দেহও ব্যক্ত করেছেন নারায়ণন। তাঁর মতে, ইউরোপের আক্রান্ত দেশগুলোর তুলনায় ভারতের চিকিৎসা পরিকাঠানো অনেক দুর্বল। ভারতে বর্তমানে ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষের মতো আইসিইউ বেড রয়েছে। ফলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ থেকে ৮০ লক্ষে পৌঁছলে হিমশিম খাবে হাসপাতালগুলো।
এই গবেষকের কথায়, ‘সুনামি ধেয়ে আসছে ভারতের দিকে। বসে থাকলে, ধ্বংস হয়ে যেতে হবে। বাঁচার জন্য জানপ্রাণ দিয়ে লড়াই ছাড়া বিকল্প পথ নেই।’