এবার বহরমপুরে মুসলিমদের ফ্ল্যাট ও ঘরভাড়া দেওয়া নিষেধ ,স্থানীয়দের চাপ প্রােমােটারকে

Spread the love

বহরমপুরে মুসলিমদের ফ্ল্যাট ও ঘরভাড়া দেওয়ায় নিষেধ স্থানীয়দের চাপ প্রােমােটারকে

রাবিয়া বেগম, বহরমপুর :-  পশ্চিমবঙ্গ গুজরাত বা মুম্বই নয়। ঘটনাটি রাজধানী কলকাতারও নয়। বাংলার সংখ্যালঘু প্রধান মুর্শিদাবাদের সদর শহর বহরমপুরের। এখান থেকেই অভিযােগ উঠেছে, বহরমপুর শহরে মুসলিমদের ঘর-ভাড়া কিংবা ফ্ল্যাট কেনার সুযােগ নেই। মুর্শিদাবাদে গত ৭-৮ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, তার ফলে গ্রামাঞ্চল ও মফসসল থেকে প্রচুর মুসলিম সদর শহর বহরমপুরে আসছেন। শিক্ষা, ব্যবসা ও চাকরির টানেই বহরমপুরে আসা। আগে অবশ্য জেলার জনসংখ্যার অনুপাতে বেমানানভাবে বহরমপুরে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা কম ছিল। এখন এই সংখ্যা খানিকটা বৃদ্ধি পেলেও বহরমপুর শহরে জমি, ঘরভাড়া বা বেসরকারি আবাসনে তাদেরকে অপাঙক্তেয় করে রাখা হয়েছে সম্প্রীতির বাংলায় এমনই এক ঘটনাা কথা উঠে এসেছে এই রিপাের্টে।

মুসলিমদের অনেকেই মেডিক্যাল অফিসার, কলেজ শিক্ষক, পুলিশ অফিসার, সাধারণ প্রশাসনে উঁচু পদে চাকরি করছেন। ফলে বহরমপুর শহরে নিজস্ব বাসস্থানের প্রয়ােজনে এইসব সরকারি আধিকারিকরা ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছেন। ব্যাঙের ছাতার মতাে বহরমপুর শহরে ফ্ল্যাট তৈরি হলেও প্রায় সব প্রােমােটারের অলিখিত সিদ্ধান্ত, নিয়েছে  মুসলিমকে ফ্ল্যাট বিক্রি নয়।

সম্প্রতি বহরমপুর জজকোর্টের নিকট কিষাণ ঘােষ লেনে ফ্ল্যাট তৈরি করছেন প্রােমােটার ইজারুল সেখ। এই ফ্ল্যাটে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত দু’জন চিকিৎসক, বহরমপুর গার্লস  ও জিয়াগঞ্জ শ্ৰীপত সিং কলেজের দুই শিক্ষক, পুলিশের এক সা ইন্সপেক্টর সহ ৬ জন প্রতিষ্ঠিত মুসলিমের নিকট ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য  চুড়ান্ত করে দশ শতাংশ টাকা বায়না বাবদ অগ্রিম নেওয়া হয়। এই ফ্ল্যাট যেখানে গড়ে উঠছে তার কাছেই রয়েছে সুহৃদ সংঘ নামে একটি ক্লাব। অভিগে, কিষাণ ঘােষ লেনের বাসিন্দারা প্রােমােটারকে স্থানীয় ওই ক্লাবে ডেকে পরিষ্কার জানিয়েছেন, কোনও মুসলিমকে ফ্ল্যাট বিক্রি করা চলবে না। যাদের বায়না নিয়েছেন তা ফেরত দিতে হবে। না হলে এখানে ফ্ল্যাট তৈরি করতে বাধা দেব। এমনকি নির্মীয়মাণ ফ্লাট ভেঙে দেওয়ার হূমকী দেওয়া হয় ।

তবে স্থানীয় ক্লাব সুহ্রিদ সংঘের সেক্রেটারি হৃদয় ঘোষ গোটা ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন।

প্রোমোটার  জানিয়েছেন, ব্যবসা করতে এসে অনেক কিছু আপস করতে হয়। বাধ্য হয়ে যেসব মুসলিমদের অগ্রিম নিয়েছিলাম তা ফেরত দিয়েছি। এখন অমুসলিমদের এই ফ্লাট বিক্রি করতে হবে। তাতে সব মিলে ৫০ লক্ষ টাকা কম  বিক্রি করতে হবে। লোকসান হলে উপায় নেই। আসলে বহরমপুর শহরে জমি, বাড়ি ফ্লাট , সব কিছুতেই হিন্দু ক্রেতার থেকে মুসলিম ক্রেতারা অনেক বেশি দাম দেয়। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের সামনে থেকে স্বণ ময়ী ,  মোড়ে  ফ্ল্যাট তৈরি হলো এবং হচ্ছে। মুসলিমকে ফ্লাট  বিক্রি করছে না। এমনকি মােড়ে সকলের সামনে পুকুর ভরাট করে  মাঝে ফ্ল্যাট তৈরী হচ্ছে। সেখানে মুসলিমরা অচ্ছুত। পুকুৱে  বুজিয়ে ফ্লাট তৈরি হলেও পরিবেশবিদ থেকে প্রশাসন সকলেই চুপ করে আছে।

 

সৌজন্য :-   পূবের কলম

ছবি :- প্রতীকি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.