হিন্দু যুবকের সৎকার করতে চাঁদা তুলে শ্মশান ঘাটে মুসলিমরা। সম্প্রীতির নজীর জিয়াদারায়

Spread the love

হিন্দু যুবকের সৎকার করতে চাঁদা তুলে শ্মশান ঘাটে মুসলিমরা। সম্প্রীতির নজীর জিয়াদারায়

হিন্দু ভাইয়ের সৎকারে মুসলিম যুবকরা এগিয়ে এসে সম্প্রীতির নজীর গড়ল কান্দির জিয়াদারা গ্রাম

জৈদুল সেখ, কান্দি

কান্দি থানার অন্তর্গত জীবন্তির জিয়াদারা গ্রামে দেখাগেল সম্প্রীতির অন্যান্য নজীর। বিদুৎ পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হিন্দু প্রতিবেশীর সৎকারে এগিয়ে এলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। বাড়ি থেকে শ্মশান পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে সৎকারের যাবতীয় কাজকর্মে হাত লাগালেন তারা। অন্তোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সবকিছুই দাঁড়িয়ে থেকে দেখভাল করলেন প্রতিবেশী মুসলিমরা।
উল্লেখ্য গতকাল জীবন্তি জিয়াদারা গ্রামের বাসিন্দা আজামিল প্রামাণিক নামে একজন বিদ্যুৎ পিষ্ট হয়ে মারা যায় বয়স হয়েছিল ৫২ বছর। দারিদ্র্য পরিবার কোনো রকমে সংসার চালাতেন আজামিল প্রামাণিক। তার স্ত্রী বলেন গতকাল বিকেলে বাড়ির সামনে মাঠে ঘাস কাটতে গিয়েছিল ঘাস কেটে মাথায় করে ঘাস আনার সময় ইলেকট্রিক তারে বিদুৎ পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়। কান্দি থানার পুলিশ এসে মৃত্যু দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কান্দি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। এই ঘটনার এলাকা জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
এই শোকের মধ্যে অসহায় দারিদ্র্য পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন প্রতিবেশী জহিরউদ্দিন, হাসিরুল, ফাইজুল, সফিকুলরা। মৃত্যু আজামিল প্রামানিকের সৎকার করার জন্য রমজান মাসে রোজা মুখে গ্রামে গ্রামে চাঁদা তুলে শ্মশানে নিয়ে গিয়ে সম্প্রীতির অন্যান্য নজীর গড়লেন জিয়াদারা মুসলিম পাড়া।
এ বিষয়ে জহিরুদ্দিন সেখ বলেন ” দীর্ঘদিন ধরেই জিয়াদারা গ্রামের হিন্দু -মুসলিম মিলেমিশে বসবাস করি। হিন্দু ভাইদের পুজো থেকে যে কোনো অনুষ্ঠানে আমরা তাদের সহযোগিতা করে তেমনি আমাদের জলসা কিংবা ঈদে হিন্দু ভাইয়েরা আমাদের সহযোগিতা করেন। আজকে সৎকারে এগিয়ে আসা ভারতবর্ষের দিকে তাকিয়ে দেখলে অনেকেই অবাক হতেই পারেন কিন্তু আমরা ছোট্ট থেকেই হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই, এক সঙ্গে বড়ো হয়েছি। ”
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ” ধানের ক্ষেতে জল দেওয়ার জন্য ডীপ মটর চালাতে ইলেকট্রনিক পোল থেকে ১০০ মিটার দূরে ডীপের কাছে যে ইলেকট্রনিক তার নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেই তার টি ছিল মাত্র সাত পাঁচ ফুট উচুঁতে! এই অল্প উচুঁতে থাকায় ইলেকট্রন তারে শক্ লেগে মৃত্যু হয়।
তার স্ত্রী নিতা প্রামাণিক বলেন “আমি ভাবতেও পারছি না, স্বামী মারা গেছে! সংসারে এক‌টি মেয়ে আছে কীভাবে চলবে ….”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.